অন্যান্য

প্রশ্ন: ইসলামে মানুষের মুখের উপর তার প্রশংসা করতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন মাহফিলে প্রধান বক্তা বা অতিথির আগমনে তার সম্মানার্থে উচ্চ প্রশংসা করা হয় বা শ্লোগান দেয়া হয়। এগুলো কি জায়েয?

উত্তর : ইসলামী মাহফিলগুলোতে প্রধান বক্তা বা অতিথির আগমনে তাদের সম্মানার্থে দাঁড়ানো বা উচ্চ প্রশংসা করা জায়েয নয়। এটা ইহুদী-খ্রিষ্টানদের স্বভাব (সূরা আন-নিসা : ৪৯; তাফসীরে ইবনু কাছীর, ২য় খণ্ড, পৃ. ৩৩২)। এভাবে আত্মপ্রশংসা করা বা অন্য কর্তৃক আত্ম প্রশংসিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা মৌলিক কারণ অহমিকা ও আত্মগর্ভ। অথচ রাসূসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, إِيَّاكُمْ وَالتَّمَادُحَ فَإِنَّهُ الذَّبْحُ ‘তোমরা পরস্পর প্রশংসা করা থেকে বেঁচে থাক। কেননা তা হচ্ছে যব্হ করা’ (ইবনু মাজাহ, হা/৩৭৪৩; সনদ হাসান, সিলসিলা ছহীহাহ, হা/১২৮৪)। অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, إِذَا رَأَيْتُمُ الْمَدَّاحِيْنَ فَاحْثُوْا فِيْ وُجُوْهِهِمُ التُّرَابَ ‘যখন তোমরা সামনে প্রশংসাকারীদেরকে দেখতে পাও, তখন তাদের চেহারায় মাটি নিক্ষেপ কর’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৩০০২; মিশকাত, হা/৪৮২৬)। রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেই নিজের পবিত্রতা বর্ণনা করতে নিষেধ করেছেন (ছহীহ মুসলিম, হা/২১৪২; আবূ দাঊদ, হা/৪৯৫৩; মিশকাত, হা/৪৭৫৬)। এজন্য এটা তাক্বওয়ারও পরিপন্থী বিষয় (সূরা আন-নাজম : ৩২)।

তবে কাউকে নিম্নোক্ত উপায়ে প্রশংসা করা যায়। আবূ বাকরাহ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির প্রশংসা করলে তিনি তাকে বলেন, তোমার জন্য আফসোস! তুমি তো তোমার সাথীর গর্দান কেটে ফেললে। তিনি একথা কয়েকবার বললেন। এরপর তিনি বললেন, তোমাদের কেউ যদি তার (মুসলিম) ভাইয়ের প্রশংসা করতেই চায়, তাহলে তার বলা উচিত, অমুককে আমি এরূপ মনে করি, তবে আল্লাহই তার সম্পর্কে অধিক জানেন। আর আল্লাহর প্রতি সোপর্দ না করে আমি কারো সাফাই পেশ করি না। তার সম্পর্কে ভাল কিছু জানা থাকলে বলবে, আমি তাকে এরূপ এরূপ মনে করি’ (ছহীহ বুখারী, হা/২৬৬২; ছহীহ মুসলিম, হা/৩০০০)।

 

সূত্র: মাসিক আল-ইখলাছ।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button