অন্যান্য

প্রশ্নঃ গর্বের শিশু রক্তপিন্ড (৪০ দিন)থাকা অবস্থায় যদি তাকে নষ্ট করে ফেলা হয় তাহলে কি প্রান হত্যার সমান গুনাহ হবে?

উত্তরঃ ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আপনি প্রশ্ন করেছেন যে, গর্ভে শিশু রক্তপিন্ড থাকা অবস্থায়, ৪০ দিন, যদি তাকে নষ্ট করে ফেলা হয়। তাহলে কি প্রাণ হত্যার সমান গুণাহ হবে?

 

৪০ দিন পরে রক্তপিন্ড হয়, ৪০ দিন পর্যন্ত সেটা শুক্র অবস্থায় থাকে, ৪০ পার হলে পরে সেটা রক্তপিণ্ড পরিণত হয়। এখন ৪০ দিনের মধ্যে বা ৪০ দিনের পরে ভ্রুণ নষ্ট করা যায়েজ কি না, এব্যাপারে ওলামায়ে কেরামদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলেছেন যে, সম্পূর্ণ রূপে হারাম, কেউ বলেছেন যে, যেহেতু প্রাণ আসে নাই অতএব এটা যায়েজ। কেউ এটা ব্যাখ্যা করেছেন যে,যদি না ফেললে সমস্যা হয়, তাহলে ফেলতে পারবে, আর যদি সমস্যা না থাকে তাহলে ফেলা তার জন্য হারাম।

 

তো তৃতীয় এইমতটি উপযুক্ত, অর্থাৎ এ-ই ভ্রুণটাকে রাখলে যে, গর্ভবতী মা রয়েছে তার সমস্যা হবে, শারীরিক সমস্যা,বাচ্চা মরার মত সমস্যা /মায়ের জীবনঝুঁকি, এইধরনের কোন সমস্যা থাকে। তাহলে ডাক্তারের পরামর্শক্রমে সে ওটা ফেলে দিতে পারে। ইংশা আল্লাহ তাতে গুণাহ হবে না। আর যদি কোন সমস্যা না থাকে, তাহলে শুধু ফেলে দেয়া হচ্ছে কি কারণে? এইধরনের শারীরিক কোন সমস্যা নাই।

 

ডাক্তারের পক্ষ থেকে, প্রসূতি মায়ের কোন্ সমস্যা দেখা যাচ্ছে না। অন্য কোন সমস্যা, যেমন উদাহরণ কিভাবে তরবিয়ত দিবে, কিভাবে লেখাপড়া করাবে, কি খাওয়াবে, কোথায় থাকতে দিবে, বা এখন লেখাপড়া শেষ হয় নি। এখন বাচ্চা নিলে লেখাপড়া করতে পারবে না। বা এখন চাকরি ঠিকমতো হয় নি। সুতরাং বাচ্চা নিলে কি খাওয়াবে, ইত্যাদি কারণে যদি, সেটাকে ফেলে দেওয়া হয় এবং এটা নিয়তের উপরে নির্ভর করছে /পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে। তাহলে কখনই সেটা যায়েজ হবে না। এবং সেটা ইসলাম যে উদ্দেশ্যে বা আল্লাহ তায়ালা যে উদ্দেশ্যে

 

 

পৃথিবীতে মানুষ পাঠান সেটা আল্লাহর বিপরীত হবে। আল্লাহর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে, তার উম্মতকে বৃদ্ধি করার জন্য যে তাগিদ করেছেন, এ-ই উদ্দেশ্যেরব বিপরীত হবে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমে বলছে যে,।

 

“তোমরা তোমাদের সন্তানদের কে হত্যা কর না। কেননা আমি তোমাদেরকে রিযিক দিই, তাদেরকেও রিযিক দেব”।

 

আল্লাহর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো বলেছেন যে, কোন সন্তান যখন গর্ভে আসে ১২০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরে তার হায়াত, তার রিযিক, তার কর্ম এবং তার পরিণাম লিখে দেওয়া হয়। সুতরাং সে যখন দুনিয়াতে আসবে। তখন তার রিযিক নিয়েই আসবে। অতএব তার জন্য অতিরিক্ত টেনশন করে তাকে হত্যা করা কোনক্রমে কোন মুমিনের জন্য যায়েজ হবে না।

 

তবে এখন একজন জীবিত প্রাণ হত্যার সমান গুণাহ হবে কি না, সেব্যাপার আল্লাহু আলাম। এখতেলাফ আছে। তবে নিসন্দেহে হারাম কাজ। বাচ্চা নষ্ট করা নিসন্দেহে হারাম কাজ। এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যের বিপরীত রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিপরীত। এতে কোন সন্দেহ নাই। ওলামাগণ বলেছেন যে, ৪০ দিনের পূর্বে অর্থাৎ রুহ গর্গর্ভে আসার পুর্বে যদি ফেলে দেওয়া হয়, তাহলে গুণাহগার হবে, হারাম কাজ করেছে তওবা ইস্তেগফার তার জন্য যথেষ্ট।

 

কিন্তু যদি ১২০ দিনের বা ৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরে ভ্রুণ ফেলে দেয়, তাহলে তাকে কাফফারা দিতে হবে। একটি গোলাম আযাদ, অথবা একটানা ৬০দিন সিয়াম পালন করা।

 

 

” সৌদি আরবের স্থায়ী ফতোয়া বোর্ড থেকে এ-ই ফতোয়া দেওয়া হয়েছে”।

উত্তর প্রদানে শায়েখ আব্দুল্লাহ আল কাফী

 

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button