অন্যান্য

উসমানী আযানকে বিদআত বলা বিদআত:

উসমান রাযি. তার শাসনামলে জুমআর দিন যে আযান চালু করেন, মূলত তা তার ইজতিহাদ ছিল। আর ইজতিহাদী মাসআলাকে সরাসরি বিদআত বলা যায় না। আর যদি তা হয় কোনো সাহাবীর ইজতিহাদ, সেক্ষেত্রে বিদআত বলার কোনো প্রশ্নই আসে না। তবে ইজতিহাদের জন্য শর্ত হলো, সেই মাসআলার পক্ষে মূল-দলীল থাকা লাগবে। যদি কোনো মূল-দলীল না থাকে; বরং নিজের খেয়াল-খুশি অনুযায়ী ইজতিহাদ করা হয়, তবে তাকে বিদআত বলা যায়।

উসমান রাযি. খেয়াল-খুশির অনুসরণ করে আযান চালু করেননি; বরং তা মূল-দলীলের ওপর ভিত্তি করে চালু করেন। ইমাম ইবন হাজার আসকালানী রাহি. বলেন,
وتبين بما مضى أن عثمان أحدثه لإعلام الناس بدخول وقت الصلاة قياسا على بقية الصلوات فألحق الجمعة بها …وفيه استنباط معنى من الأصل لا يبطله
পূর্বের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, মানুষকে সালাতের সময় জানানোর জন্য উসমান রাযি. যে-আযান চালু করেন, তা অন্যান্য সালাতের ওপর কিয়াস করে চালু করেন। জুমআকে অন্যান্য সালাতের সাথে সামঞ্জস্য করেন।… তিনি মূল-দলীল থেকে এই মাসআলাটি উদ্ভাবন করেন। মূল-দলীল এই মাসআলাকে নাকচ করে না।১

ইমাম আসকালানী রাহি. পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের আযানকে এখানে মূল হিসেবে ধরলেও উসমান রাযি. আরেকটি শক্তিশালী দলীলের আলোকে জুমআর আযান চালু করেন। সে-শক্তিশালী দলীলটি হলো, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের যুগে ফজরের আযানের পূর্বে আরেকটি আযান দেওয়া হতো। ফজরের পূর্বের আযান দেওয়ার মূল কারণ ছিল, যাতে সবাই ফজরের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে, যারা সাহরী খাওয়ার তারা সুবহে সাদিকের আগেই সাহরী শেষ করতে পারে অথবা যারা তাহাজ্জুদ পড়ার তারাও সুবহে সাদিকের পূর্বে তাহাজ্জুদ আদায় করে নিতে পারে। এ আযানের ওপর কিয়াস করে উসমান রাযি. জুমআর দিনে প্রথম আযান চালু করেন, যেন সবাই কাজকর্ম শেষ করে জুমআর জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে এবং মূল আযানের পূর্বে মসজিদে উপস্থিত হয়ে জুমআর সওয়াব অর্জন করতে সক্ষম হয়।

উসমান রাযি. এর সেই ইজতিহাদ এতটাই নিখুঁত ছিল যে, সবাই তা বিনাবাক্যে মেনে নেন। কেউ কোনো রকমের আপত্তি তোলেননি। সাহাবী সায়িব ইবন ইয়াযিদ রাযি. বলেন,
فلم يعب الناس ذلك عليه وقد عابوا عليه حين أتم الصلاة بمنى
কেউ উসমান রাযি. এর আযানের ব্যাপারে কোনো রকমের আপত্তি তোলেননি। অথচ তিনি মিনাতে কসর না করে পূর্ণ সালাত আদায় করলে সবাই আপত্তি তোলেন।২

সাহাবী সায়িব ইবন ইয়াযিদের ভাষ্যানুযায়ী উসমান রাযি. নিজ ইজতিহাদের আলোকে মিনাতে সালাত কসর না করার কারণে সাহাবী ও অন্যান্যগণ আপত্তি তোলেন। সেই উসমান রাযি. জুমআর আযান চালু করলে কেউ কোনো আপত্তি তোলেননি; সবাই মেনে নেন। অথচ সে-সময় পাঁচ আশরায়ে মুবাশ্শারা-সহ হাজার হাজার সাহাবী জীবিত ছিলেন। জীবিত ছিলেন ফকীহ সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাযি.; যিনি বিদআত ও বিদআতীদের বিরুদ্ধে ছিলেন খড়কহস্ত। এখান থেকে প্রমাণ হয়, এ আযানের বৈধতার ব্যাপারে সাহাবী ও তাবিয়ীগণের ইজমা সংঘঠিত হয়েছে। ইমাম কাসতাল্লানী ও ইমাম আইনীও তদীয় সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যায় এ ব্যাপারে ইজমার দাবী করেছেন। আর সাহাবীদের ইজমা হুজ্জাত বা অকাট্য শরয়ী দলীল। অতএব, কেউ এ আযানকে বিদআত বললে তার মন্তব্য বিদআত বলে গণ্য হবে।

উসমান রাযি. এর আযানের ব্যাপারে আপত্তি সমূহ এবং তার জবাব :

প্রথম আপত্তি : উসমান রাযি. এর আযানের ব্যাপারে সাহাবীদের ইজমা হয়নি। কারণ, ইবন উমার রাযি. একে বিদআত বলেছেন।

জবাব : ক. সাহাবী সায়িব ইবন ইয়াযিদ রাযি. এর দাবী অনুযায়ী কোনো সাহাবী বিদআত বলা তো দূরের কথা কোনো রকমের আপত্তি তোলেননি। সাহাবী ইবন উমার রাযি. বিদআত বললে অবশ্যই তিনি জানতেন এবং বলতেন ইবন উমার ছাড়া কেউ কোনো আপত্তি তোলেননি। তার মানে ইবন উমার রাযি. ‘বিদআত’ বলতে ‘শরীআত বহির্ভূত ও নিন্দনীয় বিদআত’ উদ্দেশ্য নেননি। বিদআত বলতে ‘শরীআত সম্মত নতুন নিয়ম’ উদ্দেশ্য নিয়েছেন। এর বড় প্রমাণ হচ্ছে, স্বয়ং ইবন উমার রাযি. ‘বিদআত’ শব্দটিকে ‘শরীআত সম্মত নতুন নিয়ম’ বোঝাতে ব্যবহার করতেন। ইমাম আইনী রাহি. বলেন,
رواه ابن أبي شيبة بإسناد صحيح عن الحكم بن الأعرج قال سألت ابن عمر عن صلاة الضحى فقال بدعة نعمت البدعة قلت أجاب القاضي عنه أنها بدعة أي ملازمتها وإظهارها في المساجد مما لم يكن يعهد لا سيما وقد قال ونعمت البدعة قال وروي عنه ما ابتدع المسلمون بدعة أفضل من صلاة الضحى
ইবন আবী শাইবাহ সহীহ সনদে হাকাম ইবন আরাজ থেকে বর্ণনা করেছেন। হাকাম বলেন, আমি ইবন উমারকে সলাতুয যুহা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। তিনি বলেন, ‘এটি বিদআত। অতি চমৎকার বিদআত।’ কাযী ইবন উমারের এ উক্তি সম্পর্কে বলেন, ‘মসজিদে নিয়মতান্ত্রিকভাবে এ সালাত আদায় করা চমৎকার বিদআত। কেননা রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াস সালামের যুগে এভাবে সালাত আদায় করা হতো না। ইবন উমার থেকে আরও বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন, মুসলিমরা যেসব বিদআত চালু করেছে, তন্মধ্যে সর্বোত্তম বিদআত হলো সলাতুয যুহা।’৩

অতএব, বোঝা যায়, তিনি উসমান রাযি. এর আযানকে নিন্দনীয় অর্থে বিদআত বলেননি; বরং প্রশংসার্থে বিদআত বলেছেন।

খ. যদি আমরা তা নিন্দার্থে বিদআতও ধরি, তারপরও মাত্র একজন সাহাবীর বিরোধিতার কারণে ইজমা নষ্ট হবে না। একজন সাহাবীর বিরোধিতার কারণে যদি ইজমা নষ্ট হয়, তবে অনেক ইজমাকে বাতিল ঘোষণা করতে হবে। যেমন, কুরআনের ১১৪ টি সূরার ব্যাপারে ইজমা দাবী করা যাবে না। কারণ, ইবন মাসউদ সূরা ফালাক ও সূরা নাসকে কুরআনের অংশ মনে করতেন না। সাহাবী আবূ বাকরের খিলাফতের ব্যাপারে ইজমা দাবী করা যাবে না। কারণ, খাযরাজ গোত্রনেতা সাদ ইবন উবাদাহ তার হাতে বায়আত করেননি।
অতএব, ইবন উমার রাযি. একে বিদআত বললেও ইজমা বাতিল হবে না।

দ্বিতীয় আপত্তি : আলী রাযি. কূফাতে এ আযান চালু করেননি।

জবাব : ক. তাফসীরে কুরতুবীতে আলী রাযি. এর ব্যাপারে এ দাবী করা হলেও ইমাম কুরতুবী কোনো সনদ উল্লেখ করেননি। আর আলী রাযি. এর বক্তব্য তাফসীরে কুরতুবী ছাড়া অন্য কোথাও সনদসহ বর্ণিত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। অতএব, আলী রাযি. থেকে তা প্রমাণিত নয়।

খ. যদি মেনেও নিই যে, আলী রাযি. থেকে তা প্রমাণিত, তারপরও প্রমাণ হয় না যে, তিনি একে বিদআত মনে করতেন বা শরীআত সম্মত মনে করতেন না। কেননা কোনো কিছু চালু না করা মানে এই নয় যে, তাকে বিদআত বলা বা শরীআত সম্মত মনে না করা। তাই, এর মাধ্যমেও সাহাবীদের ইজমা বাতিল হয় না।

তৃতীয় আপত্তি : এটা শুধু মদীনায় চালু ছিল; অন্য কোথাও চালু ছিল না। সালাফগণ এ আযানের পক্ষে থাকলে সর্বত্র তা চালু থাকত।

জবাব : এ দাবী ভুল। বরং সঠিক কথা হলো, এ আযান মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র চালু ছিল। সহীহুল বুখারীতে এসেছে,
فَثَبَتَ الْأَمْرُ عَلَى ذَلِكَ
এ নিয়ম চালু হয়ে যায়।৪

সহীহ ইবন খুযাইমাতে রয়েছে,
فثبت حتى الساعة
আজ পর্যন্ত তা চালু রয়েছে।৫

ইমাম ইবন হাজার আসকালানী বলেন,
والذي ير أن الناس أخذوا بفعل عثمان في جميع البلاد إذ ذاك لكونه خليفة مطاع الأمر.
প্রতীয়মান হয় যে, সমস্ত শহরের লোকেরা এ আযান চালু করেন। কেননা, তিনি একজন মান্যবর খলীফা ছিলেন।৬

চতুর্থ আপত্তি : হাসান বাসরী উসমান রাযি. এর আযানকে বিদআত বলেছেন।৭

জবাব : হাসান বাসরীর এ বক্তব্য প্রমাণিত নয়। কেননা সনদে হুসাইম ইবন বাশীর নামক একজন বর্ণনাকারী আছেন। তিনি তৃতীয় স্তরের মুদাল্লিস রাবী। তিনি এ বক্তব্য ‘আন’ সহকারে বর্ণনা করেছেন। আর মুদাল্লিস রাবী ‘আন’ সহকারে বর্ণনা করলে তার হাদীস যঈফ হয়।

পঞ্চম আপত্তি : উসমান রাযি. ‘যাওরা’ নামক বাজারে চালু করেছিলেন। তাই তার আযান দিতে হলে বাজারে দিতে হবে; মসজিদে দেওয়া যাবে না।

জবাব : ক. এটা মূলত যাহিরী মাযহাবের বৈশিষ্ট্য। আহলে হাদীস মানহাজের বৈশিষ্ট্য নয়। যাহিরী মাযহাব বাহ্যিক শব্দ থেকে ফয়সালা দেয়, রহস্য ও কারণ দেখে না। আর আহলে হাদীস বাহ্যিক অর্থ দেখার সাথে সাথে তার রহস্য ও কারণও উদঘাটন করে থাকে। আমরা যদি লক্ষ করি তবে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, উসমান রাযি. মানুষদের জুমআর সময় জানানোর জন্য এ আযান চালু করেন। বাজারে লোক সংখ্যা বেশি থাকে এবং সেখানে ব্যস্ততার কারণে সময়ের প্রতি বেখবর থাকে। তাই উসমান রাযি. বাজারে আযানের ব্যবস্থা করেন। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল, সময়ের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা। আর মসজিদে আযান দেওয়ার মাধ্যমে এ উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে গেলে, তা অবশ্যই বৈধ বলে বিবেচিত হবে। এ কারণে ফকীহগণ বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের আযান প্রবর্তন করা হয়েছে মানুষকে সালাতের সময় জানানোর জন্য। তাই কেউ যদি শুয়ে শুয়ে আযান দেয়, আযান হয়ে যাবে।

খ. রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের আযান বাড়ির ছাদের ওপর দেওয়া হতো। তাহলে একই যুক্তিতে বলতে হয়, বর্তমানেও পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের আযান দিতে হলে ছাদের ওপরই দিতে হবে। ছাদের ওপর ছাড়া আযান দেওয়া যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের আযানের ব্যাপারে এ আপত্তি তোলা হলে, তারা জবাব দেবেন, আযান দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো, মানুষকে সালাতের সময় জানানোর জন্য। আর ছাদের ওপরে আযান দিলে আযানের আওয়াজ দূরে পৌঁছে যেত। তাই ছাদের ওপর আযান দেওয়া হতো। আর বর্তমানে মাইকের কারণে ভেতর থেকে দিলেও সে উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যায়। তাই ছাদের ওপর আযান দেওয়া আবশ্যক নয়।

পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের আযানের ক্ষেত্রে তারা যে জবাব দেবেন, একই জবাব উসমান রাযি. এর আযানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

পঞ্চম আপত্তি : উসমান রাযি. এর যুগে আজকের মতো মানুষের হাতে হাতে ঘড়ি ছিল না। ফলে কখন জুমআর সময় হয়ে যেত, মানুষ তা টের পেতো না। এ কারণে আযান চালু করা হয়। বর্তমানে সবার হাতে হাতে ঘড়ি থাকায় সেই কারণ বর্তমানে প্রযোজ্য নয়। অতএব, উসমান রাযি. এর আযান অধুনাকালে চলবে না।

জবাব : ক. আমরা যেমন বর্তমানে ঘড়ির সাহায্যে সময় নির্ধারণ করছি, সাহাবীদের যুগে সূর্য ও তারকা দেখে সময় নির্ধারণ করা হতো। বর্তমানে ঘড়ির সাহায্যে সময় নির্ধারণ করার চেয়ে তাদের সূর্য ও তারকা দেখে সময় নির্ধারণ ক্ষমতা কোনো অংশই কম ছিল না। তাই ঘড়ির যুক্তি একেবারেই নস্যি।

খ. জুমআর আযান হয়ে গেলে যেকোনো প্রকারের লেনদেন ও ব্যবসা-বানিজ্য হারাম। আযানের পরের লেনদেন ও বেচাকেনা-সহ তার লভ্যাংশ হারাম। অনুরূপভাবে ক্রেতার সব ক্রয়কৃত পণ্য হারাম। উসমান রাযি. এর বাজারে আযান চালু করার এটাও একটা কারণ হতে পারে যে, মানুষের বেখেয়ালে হঠাৎ জুমআর আযান হয়ে গেলে অনেকেই হয়তো হারামে জড়িয়ে যাবে। যাতে কেউ হারামে না জড়ায় সেজন্য তিনি মূল আযানের পূর্বে সতর্ক করার লক্ষ্যে উক্ত আযান চালু করেন। এ দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমানে উসমান রাযি. এর আযান আরও বেশি জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ।

তাছাড়া জুমআর মূল আযানের পূর্বে মসজিদে পৌঁছার সাথে প্রভূত নেকি রয়েছে। আযানের পর কেউ মসজিদে পৌঁছলে, সেসব নেকি থেকে বঞ্চিত হবে। সেসব নেকি থেকে যেন কেউ বঞ্চিত না হয়, সে-উদ্দেশ্যে উসমান রাযি. আযান চালু করেন। এ দৃষ্টিকোণ থেকেও বর্তমানে উসমান রাযি. এর আযান আরও বেশি জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ।

ষষ্ঠ আপত্তি : শাইখ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ হাফি. উসমানী আযান সংক্রান্ত বিষয়ে আরোপিত অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, তিনি না-কি উসমান রাযি. এর আযানকে বিদআত বলেননি। তিনি না-কি হাজ্জাজী ও হিশামী আযানকে বিদআত বলেছেন।

জবাব : শাইখ আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ হাফি. যদি উসমান রাযি. এর আযানকে বিদআত না বলেন, তবে স্বাগত ও অভিনন্দন। কিন্তু তিনি যে প্রশ্নোত্তরে আযানকে বিদআত বলেছেন, তাতে স্পষ্টভাবে উসমান রাযি. এর আযানকে বিদআত বলেছেন। পাঠকদের সমীপে সে-প্রশ্নোত্তর হুবহু তুলে ধরা হলো,

প্রশ্নকারী : আব্দুল্লাহ বলেছেন, ইবাদতের জগতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা করেননি তা সব বিদআত। তাহলে হযরত উসমান রাযি. এর জুমার দিনে জুমার আযান চালু করে কি বিদআত করেছেন?

শাইখের জবাব : জি। এটাও বিদআত। তিনি যে করেছেন এটা তার ইজতিহাদ। ঐ পর্যন্ত তার নেকী। যখন বুঝেছেন বা আর সাহাবীরা ফতোয়া দিয়েছেন তখন তিনি ফিরে গেছেন হতে পারে, যার কারণে সারা পৃথিবীতে সব জায়গায় চালু ছিল না। একাধিক/চার/পাঁচটা সহীহ হাদীস দেওয়া আছে প্রকাশিতব্য বইয়ে।….

শাইখ যে উসমান রাযি. এর আযানকে বিদআত মনে করেন তার আরও বলিষ্ঠ প্রমাণ হচ্ছে, বংশাল সুরিটোলা মসজিদে উসমান রাযি. এর আযান চালু ছিলো। সুরিটোলা মসজিদে হাজ্জাজী বা হিশামী আযান চালু ছিল না। কিন্তু মালিটোলা মসজিদ থেকে শাইখ ও মরহুর আব্দুর রহীম বাগেরহাটী উসমানী আযান তুলে দেন।

আল্লাহ আমাদের সঠিক জিনিস জানা, বোঝা ও মানার তাওফীক দিন!

তথ্যসূত্র :
১. ফাতহুল বারী, ২/৩৯৪
২. ইমাম আলবানী, আল-আজবিবাতুন নাফিআহ, পৃ. ১৮
৩. উমদাতুল কারী, ১১/৪১৬; আরও দেখুন, ফাতহুল বারী, ২/৩৯৪
৪. সহীহুল বুখারী, ৯১৬
৫. সহীহ ইবন খুযাইমাহ, ১৭৭৩; আজ পর্যন্ত দ্বারা সাহাবী সায়িব ইবন ইয়াযিদ অথবা তাবিয়ী ইবন শিহাব যুহরীর সময়কাল পর্যন্ত উদ্দেশ্য।
৬. ফাতহুল বারী, ২/৩৯৪
৭. মুসান্নাফ ইবন আবী শাইবাহ, ৫৪৭৭

লেখক: শাইখ Abdullah Mahmud

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button