অন্যান্য

প্রশ্ন: জিনা থেকে বাঁচার পাশাপাশি আমাদের সম্পর্ককে পবিত্র করার জন্য পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করতে চাই

প্রশ্ন: আমার এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে। আমরা উভয় উভয়কে খুব ভালোবাসি।
আমার দুজনেই ইসলামের সব বিধিনিষেধ মেনে চলি বা চলার চেষ্টা করি। আলহামদুলিল্লাহ।
কিন্তু ভুলবশত আমরা এই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছি। আর এখান থেকে বেরিয়ে আসা একেবারেই অসম্ভব।
এটা আমাদের দুজনের পক্ষে কখনোই সম্ভব না। আমার এর থেকে বের হতে চেষ্টা করেছি কিন্তু পারি নাই।
এখন আমার বিয়ে করতে চাই। কারণ আমার দুজনই প্রাপ্তবয়স্ক। কিন্তু পরিবার ক্যারিয়ার গড়ার আগে এখনই আমাদের বিয়ে দিবে না।
এখন আমারা জিনা থেকে বাঁচার জন্য এবং আমাদের সম্পর্ককে পবিত্র করার জন্য পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করতে চাই।
প্রশ্ন হল, আমাদের এই বিয়ে ইসলামি শরিয়া মতে সম্পন্ন হবে কি না?
আমাদের বিয়ে পরবর্তী সম্পর্ক হালাল হবে কি? বিয়ে সঠিক হবে কি?
বৈধতা পাবে কি? দয়া করে প্রশ্নটা এড়িয়ে যাবেন না। উত্তর পেলে চির কৃতজ্ঞ থাকব।

 

উত্তর: বিয়ের পূর্বে ছেলে-মেয়েদের মাঝে তথাকথিত প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং গুনাহ।
কেউ শয়তানের প্ররোচনা বা প্রবৃত্তির তাড়নায় এমন অবৈধ ও হারাম সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে অনতিবিলম্বে
আল্লাহর নিকট তওবা করে সেখান থেকে ফিরে আসা ফরজ।

মনে রাখা কতর্ব্য, কেউ যদি সত্যিকারভাবে আল্লাহকে ভয় করে গুনাহরের কাজ পরিত্যাগ করে তাহলে আল্লাহ তাকে কল্পনাতীতভাবে সাহায্য করেন। যেমন
আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَمَن يَتَّقِ اللَّـهَ يَجْعَل لَّهُ مَخْرَجًا
“যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে (উত্তরণের) রাস্তা করে দেন।” (সূরা তালাক: ২)

◉ গুনাহর কাজ পরিত্যাগ করার জন্য করণীয় হল:

ক. তওবার শর্তবালী হৃদয়পটে জাগ্রত রেখে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর নিকট তওবা করা।
খ. মনে আল্লাহর ভয়, কবরের ভয়াবহতা ও জাহান্নামের মর্মন্তুদ শাস্তির কথা জাগ্রত করা।
গ. পাপাচার থেকে বাঁচার জন্য মহান আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা এবং শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট
আশ্রয় প্রার্থনা করা তথা আউযুবুবিল্লাহি মিনাশ শয়তানির রাজীম (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি) পাঠ করা।
ঘ. গুনাহের কাজে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাময় স্থান থেকে দূরে থাকা।
ঙ. পাপ কাজ করার সুযোগ থাকার পরও জাহান্নামের শাস্তির কথা স্বরণ করে তা থেকে দূরে থাকা।

যাহোক, এখন আপনাদের উভয়ের জন্য অপরিহার্য হচ্ছে, অনতিবিলম্বে তওবা করা এবং সব ধরণের সম্পর্কচ্ছেদ ঘটানো।
তা না করে এ রিলেশন অব্যহত থাকলে আল্লাহর নাফরমানী ও তাঁর অসন্তোষ বৃদ্ধি পেতেই থাকবে।
যার পরিণতি দুনিয়া ও আখিরাতে ভয়াবহ হতে পারে।

আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا ۖ إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا
“আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।” (সূরা আহকাফ: ৩২)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম সমাজকে হেফাজত করুন। আমীন।

◉ আপনি যদি উক্ত মেয়েকে বিয়ে করতে চান তাহলে তার অভিভাবকের সম্মতি নেওয়া অপরিহার্য। অন্যথায় বিয়ে সহিহ হবে না।
কেননা অধিক বিশুদ্ধ অভিমত অনুযায়ী, তথাকথিত কোর্ট ম্যারেজ বা পালিয়ে বিয়ে বাতিল-অশুদ্ধ।
আর বিয়ে শুদ্ধ না হলে দাম্পত্য জীবনটা হবে জিনা ও পাপের অন্ধকারে পরিপূর্ণ। নাউযুবিল্লাহ।

বিয়েতে মেয়ের জন্য অভিভাবকের সম্মতি থাকা অপরিহার্য হওয়ার বিষয়টি দলিল সহ বিস্তারিত জানতে এ লিংকে প্রদত্ত লেখাগুলো পড়ুন:
https://www.facebook.com/Guidance2TheRightPath/posts/622653764820839/

উল্লেখ্য যে, ইসলামে ছেলের বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য অভিভাবকের সম্মতির শর্তারোপ করা হয় নি।
কেবল মেয়ের অভিভাবকের সম্মতি থাকা অপরিহার্য শর্ত করা হয়েছে (অধিক বিশ্বযুদ্ধ অভিমত অনুযায়ী)।

সুতরাং যদি উক্ত মেয়ের বাবা/অভিভাবক এই বিয়েতে সম্মত থাকে তাহলে তা শুদ্ধ হবে
যদিও তাতে ছেলের বাবা/অভিভাবকের পক্ষ থেকে সম্মতি না থাকে।
তবে আমাদের সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে ছেলের জন্যও তার বাবা-মাকে না জানিয়ে বিয়ে করা উচিৎ নয়।
কেননা, এতে তারা মনে অনেক কষ্ট পায়।
আল্লাহু আলম।

▬▬▬●◈●▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুুল জলীল
fb id: AbdullaahilHadi
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব

 

 

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button