অন্যান্য

প্রশ্ন : ফরজ ও ওয়াজিব এবং সুন্নত ও মুস্তাহাব — এসবের মধ্যে পার্থক্য কি?

আপনার জিজ্ঞাসা  ইসলামিক জিজ্ঞাসা ও জবাব ইসলামিক প্রশ্নোত্তর

উত্তর : ফরজ ও ওয়াজিব এবং সুন্নত ও মুস্তাহাব এর মধ্যে পার্থক্যের ব্যাপারে সংক্ষেপে কথা হল,

 

💠 ফরজ ও ওয়াজিব : ফরজ ও ওয়াজিব একই অর্থবোধক। এ শব্দ দুটির অর্থ: আবশ্যক, অপরিহার্য, জরুরি। কেউ যদি ফরজ বা ওয়াজিব পরিত্যাগ করে তাহলে গুনাহগার হবে আর অস্বীকার করলে কাফের হয়ে যাবে।

তবে একদল ফকীহ এ দুটি শব্দের মধ্যে পার্থক্য করেছেন। তাদের মতে, ফরজ থেকে ওয়াজিব তুলনামূলকভাবে কম মর্যাদার। কেউ ফরজ অস্বীকার করলে কাফির হয়ে যাবে কিন্তু ওয়াজিব অস্বীকার করলে কাফির হবে না বরং ফাসিক হবে।
কিন্তু অনেক হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়, এ দুটি শব্দের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। কেননা, কখনো কখনো রাসূল সা. ফরজ বুঝাতে ওয়াজিব শব্দ ব্যবহার করেছেন। এ মর্মে বহু হাদীস রয়েছে। তাই ১ম মতটিই সর্বাধিক সঠিক।

 

💠 সুন্নত: ফিকহের দৃষ্টিকোন থেকে সুন্নত হল, এমন আমল যা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমল করেছেন এবং তার প্রতি উৎসাহিত করেছেন কিন্তু তা ফরজ বা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে কোন দলীল পাওয়া যায় না।

সুন্নতের দুটি স্তর রয়েছে। যথা:

১) সুন্নতে মুআক্কাদা বা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এটি ইচ্ছাকৃতভাবে ছাড়া ঠিক নয়। কিন্তু কেউ তা ছাড়লেও তাকে গুনাহগার বলা যাবে না। যেমন, যোহরের পূর্বে চার আর পরে দুই, মাগরিবের পরে দুই, ইশার পরে দুই, ফজরের পূর্বে দুই রাকাআত নামায, বিতর নামায, দুই ঈদের নামায, তারাবীহর এর নামায, চন্দ্র গ্রহন ও সূর্য গ্রহণের নামায, আকীকা, কুরবানী, রামাযানে ইতিকাফ করা ইত্যাদি।

২) সুন্নতে গায়রে মুআক্কাদাহ বা কমগুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। যাকে সুন্নতে যায়েদাহ (অতিরিক্ত সুন্নত)ও বলা হয়। যেমন, আসরের আগে চার রাকআত নামায, সালাতু যোহা বা চাশতের নামায ইত্যাদি।
উল্লেখ্য যে, হাদীসের পরিভাষায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কথা, কাজ ও সমর্থনকেও হাদীস বা সুন্নত বলা হয।
আর আকীদার পরিভাষায় বিদআতের বিপরীতে সুন্নত শব্দটি ব্যবহৃত হয়। যেমন, এ দৃষ্টিকোন থেকে আরাফার দিন, আশুরার রোযা রাখা সুন্নত আর রজব মাসে বিশেষ রোযা, বা শাবান মাসে কথিত শবে বরাতের রোযা রাখা বিদআত।

 

💠 মুস্তাহাব– অর্থ উত্তম, পছন্দনীয়। ফিকহের পরিভাষায় মুস্তাহাব বলা হয় যা আমল করলে সওয়াব রয়েছে কিন্তু ছেড়ে দিলে কোন গুনাহ নেই। যেমন, জুমার দিন সূরা কাহাফ পড়া, জুমার দিন বেশি বেশি দুরুদ পড়া, প্রতিমাসে তিনটি করে রোযা থাকা ইত্যাদি।
অনেক আলেমের মতে, মুস্তাহাব, নফল, সুন্নত, মানদুব সব একই অর্থ বোধক। তাদের মতে, ফরজ বা ওয়াজিব ছাড়া যা আছে সবই নফলের অন্তর্ভূক্ত। নফলের মধ্যে কোনটা সুন্নত, কোনটা মুস্তাহাব, কোনটা মানদূব…।
আল্লাহু আলাম।

 

——————-
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব

 

ফরজ কাকে বলে?

ফরজ ও ওয়াজিব একই অর্থবোধক। এ শব্দ দুটির অর্থ: আবশ্যক, অপরিহার্য, জরুরি। কেউ যদি ফরজ বা ওয়াজিব পরিত্যাগ করে তাহলে গুনাহগার হবে আর অস্বীকার করলে কাফের হয়ে যাবে।

সুন্নত কাকে বলে?

ফিকহের দৃষ্টিকোন থেকে সুন্নত হল, এমন আমল যা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমল করেছেন এবং তার প্রতি উৎসাহিত করেছেন কিন্তু তা ফরজ বা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে কোন দলীল পাওয়া যায় না।

মুস্তাহাব কাকে বলে?

মুস্তাহাব অর্থ উত্তম, পছন্দনীয়। ফিকহের পরিভাষায় মুস্তাহাব বলা হয় যা আমল করলে সওয়াব রয়েছে কিন্তু ছেড়ে দিলে কোন গুনাহ নেই।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button