অন্যান্য

প্রশ্ন: কিবলার দিকে পা দিয়ে বসা বা ঘুমানো যাবে না- এটা কি ঠিক?

আপনার জিজ্ঞাসা  ইসলামিক জিজ্ঞাসা ও জবাব ইসলামিক প্রশ্নোত্তর

উত্তর: পশ্চিম দিকে পা দিয়ে বসা বা ঘুমানো যাবে না-এ মর্মে কোন হাদীস আছে বলে আমার জানা নাই।

ইসলামে দলীল ছাড়া কোন কিছুকে উত্তম, হারাম বা মাকরূহ বলার সুযোগ নেই।

বরং ইসলামের দৃষ্টিতে একজন মানুষ যে দিকে ইচ্ছা মাথা বা পা রেখে ঘুমাতে পারে। এতে কোন বাধ্য-বাধ্যকতা নেই।

তাই একজন মানুষ স্বাধীনভাবে যে দিকে ঘুমালে তার সুবিধা হয় সে দিকে মাথা বা পা রেখে ঘুমাতে পারে। এমনকি কিবলার দিকে পা করে ঘুমাতেও কোন দোষ নেই-যদি কিবলাকে অপমান করা উদ্দেশ্য না থাকে।
বরং শুয়ে নামায পড়ার সময় কিবলার দিকে পা বিছিয়ে নামায পড়াই মুস্তাহাব অনেক ইমামের মতে।

রাসূল সা. খোলা স্থানে পেশাব-পায়খানা করার সময় কিবলাকে সামনে বা পেছনে রাখতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু ঘুমের ব্যাপারে কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন নি। তাই এতেও কোন অসুবিধা নেই।

👉 এ বিষয়ে আরেকটি প্রশ্ন ও উত্তর:

প্রশ্ন: আমরা শুনি, “কিবলার দিকে পা করে ঘুমালে গুনাহ হবে। কেউ বলে, এটা মাকরূহ।” আসলে, কেবলার দিকে পা করে ঘুমানো বা পা ছড়িয়ে বসার ব্যাপারে ইসলামে কী বলা হয়েছে?

উত্তর: আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে যে, “কিবলার দিকে পা করে ঘুমালে গুনাহ হবে অথবা এটা মাকরূহ।” কিন্তু বাস্তবতা হল, কিবলার দিকে পা করে ঘুমানোর ব্যাপারে ইসলামে কোন ধরণের নিষেধাজ্ঞা বর্ণিত হয় নি।
সুতরাং উপরোক্ত ধারণা সঠিক নয়। বরং ইমাম মালেক ও ইমাম আবু হানিফা রাহ. অসুস্থ ব্যক্তি কিবলার দিকে পা ছড়িয়ে শুয়ে শুয়ে ইশারায় সালাত আদায় করবে-বলে মত ব্যক্ত করেছেন।

হাদীসে কেবল খোলা স্থানে কিবলা সামনে রেখে বা পেছনে রেখে পেশাব-পায়খানা করতে নিষেধ করা হয়েছে। রাসূল সা. বলেন: لا تستقبلوا القبلة بغائط أو بول ولا تستدبروها (বুখারী ও মুসলিম)
অনুরূপভাবে কিবলার দিকে থুথু ফেলার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা বর্ণিত হয়েছে।

কিন্তু কিবলার দিকে পা ছড়িয়ে বসা বা শুয়া যাবে না-এ কথার কোন দলীল নাই। সুতরাং বিনা দলীলে কোন কিছুকে হালাল, হারাম, নেকি, গুনাহ এমনকি মাকরূহ বলাও গ্রহনযোগ্য নয়।
তবে কেউ যদি কিবলাকে অবজ্ঞা করার উদ্দেশ্য বা কাবা শরীফের মানহানীর নিয়তে এমনটি করে তবে তা মারাত্মক গুনাহের কাজ তাতে কোন সন্দেহ নাই।

উল্লেখ্য যে, হানাফী মাযহাবের কোন কোন আলেম কিবলার দিকে ঘুমের সময় বা অন্যান্য সময় কিবলার দিকে পা দেয়াকে মাকরূহ বলেছেন।
কিন্তু মূলত: দলীল বহির্ভূত কথা। কোন কিছুকে মাকরূহ বলতে হলেও তার পক্ষে দলীল লাগবে। কেবল যুক্তি দিয়ে হুকুম সাব্যস্ত করা যায় না।
সুতরাং বিনা দলীলে মাকরূহ বলা গ্রহণযোগ্য নয়। এ কারণে হানাফী মাযহাব ছাড়া বাকি তিন মাযহাবের কোন ইমামগণই এটিকে মাকরূহ বলেন নি।
আল্লাহু আলাম।

উত্তর প্রদানে:
Sheikh Abdullahil Hadi Al Madani
(মদিনা ইসলামিক ইউনিভার্সিটি সৌদি আরব)
দাঈ, জুবাইল, সউদী আরব।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button