অন্যান্য

প্রশ্নঃ ঘুমানোর আগে গুরুত্বপূর্ণ সুন্নতী আমল গুলি কি কি?

উত্তরঃ ১. আয়াতুল কুরসী পাঠ করা – ১ বার।
ঘুমানোর পূর্বে আয়াতুল কুরসী পাঠ করার ফযীলতঃ
“যখন বিছানায় ঘুমুতে যাবে আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে, তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার উপর সব সময় একজন হেফাযতকারী নিযুক্ত থাকবে
এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান তোমার ধারে কাছেও আসতে পারবে না।”
সহীহ বুখারী, খন্ড ৬/ ৬১, হাদিস নং- ৫৩০।

২. সুরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পড়া – ১ বার।
ঘুমানোর আগে সুরা বাক্বারার শেষ ২ আয়াত (২৮৫+২৮৬) পড়ার ফযীলতঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
“যে ব্যক্তি রাতের বেলা সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়বে সেটা তার জন্য যথেষ্ঠ হবে”।
সহীহ বুখারিঃ ৫০১০, সহীহ মুসলিমঃ ৮০৭।

৩. ঘুমানোর আগে সুরা কাফিরুন পড়া – ১ বার
উপকারীতাঃ শিরক থেকে বাচতে সাহায্য করবে
ফরওয়া ইবন নাওফাল (র) থেকে বর্ণিত তিনি নবী (স) এর কাছে এসে বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ (সঃ)!
আমাকে এমন কিছু শিখিয়ে দিন যা আমি আমার শয্যাগ্রহণের সময় বলতে পারি।
তিনি বললেনঃ ক্কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরুন সূরাটি পাঠ করবে। কেননা এটি হল শিরকের সাথে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষনা।
সুনানে আত-তিরমিজি, অধ্যায় ৪৮, হাদীস নং- ৩৪০৩। হাদীসটি হাসান সহীহ

৪. সুরা ইখলাস পাঠ করা – ১ বার, ৩ বার অথবা ১০ বার
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীগণকে বললেন, “তোমরা কি এক রাতে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়তে পারনা”?
প্রস্তাবটি সাহাবাদের জন্য কঠিন মনে হল। তাই তাঁরা বলে উঠলেন, “হে আল্লাহর রসুল! এই কাজ আমাদের মধ্যে কে করতে পারবে”?
(অর্থাৎ কেউ পারবে না।). তিনি বললেন, “ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস স্বামাদ” (সুরা ইখলাস) কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান”।
. (অর্থাৎ এই সুরা পড়লে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়ার সমান নেকী পাওয়া যাবে)।-সহীহুল বুখারী ৫০১৫

৫. তাসবীহ’, তাহ’মীদ ও তাকবীর পাঠ করাঃ
আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে খাদেম দেওয়ার কথা বললে তিনি (রাসুল) বললেনঃ
তোমার জন্য কি খাদেমের চাইতে উত্তম কোন কিছু বলব না? (তা হল) তোমরা যখন তোমাদের শয্যাগ্রহণ করবে তখন আলহা’মদু লিল্লাহ ৩৩ বার, সুবহা’নাল্লাহ ৩৩ বার
এবং আল্লাহু আকবার ৩৪ বার পড়বে।
সুনানে আত-তিরমিজি, অধ্যায় ৪৮/ ৩৪০৮। হাদীসটি সহীহ.

খ. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
“যখন শয্যাগ্রহণ করবে তখন সুবহানাল্লাহ, আল্লাহু আকবার এবং আলহামদু লিল্লাহ পাঠ করবে একশত বার।
এটা তোমাদের যবানে তো হল একশ, কিন্তু মীযানের পাল্লায় হবে এক হাজার (নেকী)।
সুনানে আত-তিরমিজি,অধ্যায় ৪৮/৩৪১০। হাদীসটি হাসান সহীহ

৬. ঘুমানোর দুয়া পড়াঃ
ডান কাতে শুয়ে ঘুমানো সুন্নত। ডান কাতে শুয়ে ঘুমানোর আগে এই দুয়া পড়তে হবেঃ
بِاسْمِكَ اللَّهُمَّ أَمُوتُ وَأَحْيَ
উচ্চারণঃ বিস্মিকাল্লা-হুম্মা আমুতু ওয়া আহ্ইয়া।অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনার নাম নিয়েই আমি মৃত্যুবরণ করছি (ঘুমাচ্ছি) এবং আপনার নাম নিয়েই জীবিত (জাগ্রত) হবো।
সহীহ বুখারীঃ ৬৩২৪, সহীহ মুসলিমঃ ২৭১১।

৭. সুরা মুলক পড়া
প্রতিদিন রাতে সুরা মুলক মুলক তেলাওয়াত করা গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নতঃ

“রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আলিফ লাম মীম তানজিলুল কিতাব (সুরা আস-সাজদা) ও তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলকু (সুরা মুলক) তেলাওয়াত না করে কোনদিন ঘুমাতেন না”।

সুনানে আত-তিরমিযী ২৮৯২, মুসনাদে আহমাদ ১৪২৯। শায়খ আলবানীর মতে হাদীসটি সহীহ, সহীহ তিরমিযী ৩/৬।

 

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button