প্রশ্ন: ঘুষ বা অর্থের বিনিময়ে চাকুরী নেয়া এবং সেখান থেকে প্রাপ্ত বেতন কখন হারাম এবং কখন হালাল?
আপনার জিজ্ঞাসা ইসলামিক জিজ্ঞাসা ও জবাব ইসলামিক প্রশ্নোত্তর
উত্তর: চাকুরী বা কাজটা যদি হালাল হয় আর এর জন্য যে ধরণের যোগ্যতা প্রয়োজন তা আপনার মধ্যে যথার্থ থাকে এবং অন্যের হক নষ্ট না করা হয় কিন্তু তারপরও কর্তৃপক্ষ যদি টাকা ছাড়া চাকুরী না দেয় তাহলে সে ক্ষেত্রে টাকা দিয়ে চাকুরী নিলে তা আপনার জন্য ‘ঘুস’ বলে বিবেচিত হবে না। কারণ আপনি এর দ্বারা অন্যের হক নষ্ট করেন নি এবং আপনি নিজে উক্ত কাজের যোগ্য।
এ ক্ষেত্রে অন্যায়ভাবে টাকা দাবি করার কারণে কর্তৃপক্ষ গুনাহগার হবে কিন্তু টাকা দেয়ার কারণে আপনি গুনাহগার হবে না।
অনুরূপভাবে নিজের পাওনা আদায় অথবা অর্থ-সম্পদ উদ্ধার করার জন্য অথবা নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সহ যাবতীয় শর্তাবলী যথার্থভাবে পূরণ করার পরও যদি অর্থ প্রদান ছাড়া চাকুরী পাওয়া যায় বা নিজের হক উদ্ধার করা সম্ভব না হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকে টাকা-পয়সা দিলে তা ‘হারাম সুদ’ হিসেবে গণ্য হবে না।
এবং এ ক্ষেত্রে দাতা জুলুমের শিকার হল এবং আখিরাতে এর বিনিময় পাবে। পক্ষান্তরে গ্রহণকারীকে এই অন্যায়ের জন্য আল্লাহর নিকট জবাবদাহী করতে হবে ইনশাআল্লাহ।
ইবনে মাসঊদ রা. হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি হাবশা (ইথিওপিয়া) এর ছিলেন। কিন্তু তাকে সেখানে আটকে দেয়া হয়। পরে তিনি দু দিনার প্রদান করলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
তিনি বলেন,
«إِنَّمَا الإِثْمُ عَلَى القَابِضِ دُونَ الدَّافِعِ»
“গ্রহণকারীর উপর গুনাহ বর্তাবে; প্রদানকারীর উপর নয়।” (সুনান কুবরা-বায়হাকী, ২০৪৮২, শরহুস সুন্নাহ-ইমাম বাগাভী ১০/৮৮, তাফসীর কুরতুবী ৬/১৮৪)
যাহোক উপরোক্ত ব্যাখ্যা অনুযায়ী অর্থের বিনিময়ে উক্ত চাকুরী গ্রহণ করা যেমন আপনার জন্য হালাল তেমনি এর বিনিময়ে প্রাপ্ত বেতনও আপনার জন্য হালাল।
যেহেতু আপনি হালাল কাজের বিনিময়ে উক্ত বেতন গ্রহণ করেছেন এবং কারো হক নষ্ট করেন নি।
পক্ষান্তরে আপনি যদি উক্ত কাজের যোগ্য না হন এবং সঠিকভাবে কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম না হওয়ার পরও ঘুসের বিনিময়ে চাকুরী বা কাজটা নিয়ে থাকেন তাহলে এ ক্ষেত্রে আপনি যেমন অন্যায়ভাবে ঘুস প্রদানের কারণে গুনাহগার হবেন তেমনি সঠিকভাবে কাজ সম্পাদন না করার কারণে প্রাপ্ত বেতনও আপনার জন্য হারাম হবে।
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব