অন্যান্য

পাঠকক্ষে অনুপস্থিত ছাত্রের পক্ষ থেকে হাযিরা দিয়ে দেয়া

প্রশ্ন: কোনো কোনো সময় পাঠকক্ষে আমার বন্ধু আমার নিকট আবদার করে সে অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও আমি যেন তার হাযিরা দিয়ে দেই, যাতে হাযিরা খাতাটি নিয়মিত হয়ে যায়, অতঃপর আমি তার নাম লিখে দেই; সুতরাং এটা কি মানবতার সেবা হিসেবে গণ্য হবে, নাকি তা ধোঁকা ও প্রতারণার অন্তর্ভুক্ত হবে?

উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ্‌।

এটা খেদমত, কিন্তু তা হল শয়তানী খেদমত (সেবা), যে খেদমতে শয়তান তাকে আকৃষ্ট করে, ফলে সে এই ধরনের কাজ করে এবং যে ব্যক্তি উপস্থিত হয় নি, তার হাযিরা দিয়ে দেয়; আর এই কাজের মধ্যে তিনটি সতর্কবাণী বা দৃষ্টি আকর্ষণী রয়েছে:

প্রথম সতর্ক সংকেত: এটা এক ধরনের মিথ্যা;

দ্বিতীয় সতর্ক সংকেত: এটা এই বিভাগের কর্তৃপক্ষের সাথে এক ধরনের খিয়ানত বা বিশ্বাসঘাতকতা;

তৃতীয় সতর্ক সংকেত: এই ধরনের কাজ অনুপস্থিত ছাত্রকে বৃত্তি বা ভাতা পাওয়ার উপযুক্ত করে, যা তার উপস্থিতির উপর নির্ভরশীল, ফলে সে অন্যায়ভাবে তা গ্রহণ ও ভোগ করে। আর এসব সতর্কতামূলক দৃষ্টি আকর্ষণী থেকে যে কোনো একটি কথাই এই ধরনের তৎপরতা নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট, যা প্রশ্নকর্তার প্রশ্ন থেকে স্পষ্ট তা হল যে এটি মানবিক বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত; বস্তুত সকল মানবিক বিষয়ই প্রশংসনীয় নয়, বরং তার মধ্য থেকে যা শরী‘য়ত সমর্থিত, তা প্রশংসনীয়; আর যা শরী‘য়ত সম্মত নয়, তা নিন্দনীয়। আর বাস্তব কথা হল, তার পক্ষ থেকে মানবিক কাজ বলে যা বলা হয়, তা যদি শরী‘য়ত বিরোধী হয়, তবে তা মানবিক কাজ বলে বিবেচিত হবে না; কারণ, যে কাজটি শরী‘য়ত বিরোধী, তা পশুসুলভ কাজ বলে বিবেচিত;

আর এ জন্যই আল্লাহ তা‘আলা কাফির ও মুশরিকদেরকে পশুর মত বলে বর্ণনা করেছেন; তিনি বলেন:

﴿ وَٱلَّذِينَ كَفَرُواْ يَتَمَتَّعُونَ وَيَأۡكُلُونَ كَمَا تَأۡكُلُ ٱلۡأَنۡعَٰمُ وَٱلنَّارُ مَثۡوٗى لَّهُمۡ ١٢ ﴾ [محمد: ١٢]

“আর যারা কুফরী করেছে, তারা ভোগ বিলাস করে এবং খায় যেমন চতুষ্পদ জন্তুরা খায়; আর জাহান্নামই তাদের নিবাস।” – (সূরা মুহাম্মদ: ১২); আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ إِنۡ هُمۡ إِلَّا كَٱلۡأَنۡعَٰمِ بَلۡ هُمۡ أَضَلُّ سَبِيلًا ٤٤ ﴾ [الفرقان: ٤4]

“তারা তো পশুর মতই; বরং তারা আরও অধিক পথভ্রষ্ট।” – (সূরা আল-ফুরকান: ৪৪); সুতরাং এমন প্রত্যেক কাজ, যা শরী‘য়ত বিরোধী, তা হচ্ছে পশুসুলভ কর্মকাণ্ড, মানবিক কাজ নয়।

সুত্রঃ শাইখ ইবনু ‘উসাইমীনফতোয়া ইসলামীয়া (فتاوى إسلامية): ৪ / ৩২৯

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

মোঃ মামুনূর রশিদ (বকুল)

❝ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই,এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।❞ যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল।
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button