তাওহীদ

প্রশ্ন: ‘আররাফ (عراف), রম্মাল (رمال), কাহেন (كاهن), মুনাজ্জেম (منجم), এ শব্দসমূহের মধ্যে অর্থগত পার্থক্য কী?

উত্তর: যারা গায়েব জানার দাবী করে এগুলো তাদেরই নাম কিন্তু তাদের পদ্ধতি ভিন্ন:
আররাফ = যে ওৎপেতে তথ্য সংগ্রহ করে এবং সামষ্টিক বিষয়ে ভবিষ্যৎ বাণী শুনায়। অথবা কারো মনের কথা বলে দেয়, কিংবা সে দাবী করে যে; বিভিন্ন বিষয়ের সুচনাতেই সব কিছু বলে দিতে পারে যেমন; চোরের সন্ধান এবং জিনিস-পত্র কোথায় আছে ইত্যাদি।
রম্মাল = যে ব্যক্তি ঢিল ছুড়ে কিংবা মাটিতে রেখা চিত্র এঁকে গায়েব বা অনুপস্থিত বিষয়ে জ্ঞান লাভ করার দাবী করে।
কাহেন = জাদুকর; যে গায়েবের খবর জানার দাবী করে।
মুনাজ্জেম = জ্যোতিষ (হস্তরেখাবিদ); যে ব্যক্তি গ্রহ নক্ষত্রের সাহায্যে দূনিয়ার বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আগাম কথা বলে।
জ্যোতিষী তিন প্রকার:
(এক) কুফরী; এমন বিশ্বাস করা যে, গ্রহ-নক্ষত্রের আপন প্রভাবেই পৃথিবীর বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহ সংঘটিত হয়।
(দুই) হারাম এবং এক প্রকার শির্ক; যখন গ্রহ নক্ষত্র একটা অপরটার কাছাকাছি আসা কিংবা নির্দিষ্ট কক্ষপথ পরিবর্তন করাকে বিভিন্ন ঘটনা দুর্ঘটনার প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করে। পত্র-পত্রিকায় তথাকথিত মহাজাতকের নক্ষত্র বিশ্লেষণ পূর্বক সাপ্তাহিক রাশিফল প্রকাশ করাও ঐসবের অন্তর্ভুক্ত। অথচ সব কিছুই সংঘটিত হয় আল্লাহর ইচ্ছায়।
(তিন) আকাশপানে চেয়ে নক্ষত্র দেখে সময় ও ক্বিবলা নির্বাচন করা; আর এটা জায়েয আছে। মহামহিয়ান আল্লাহর বাণী:
﴿ وَعَلَٰمَٰتٖۚ وَبِٱلنَّجۡمِ هُمۡ يَهۡتَدُونَ ١٦ ﴾ [النحل: ١٦]
‘‘আর তাহারা নক্ষত্র এবং চিহ্নসমূহ দ্বারা পথনির্দেশ লাভ করে’’। (সূরা আন নাহল-১৬)
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন: আর-রাফ (তথ্য চোর) হচ্ছে কাহেন বা জাদু-মন্ত্রনাকারী ঠাকুর, জ্যোতিষ, গণক, রেখাবিদ ইত্যাদি। এরা সকলেই প্রায় একই পদ্ধতিতে বিভিন্ন বিষয়ে তাত্বিক ও বিশ্লেষণমূলক কথা বলে থাকে।

[আল-জামে আল ফরিদ ১১৪-১১৬।]

সূত্রঃ প্রশ্নোত্তরে তাওহীদ
লেখকঃ ড. ইবরাহীম ইবন সালেহ আল-খুদ্বায়রী

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button