অন্যান্য

প্রশ্ন : শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) সূরা ক্বাছাছ ৮৮ আয়াতের তা’বীলের কারণে ইমাম বুখারীকে কাফের আখ্যায়িত করেছেন কি?

উত্তর : নাঊযুবিল্লাহ!

ইমাম বুখারী (রহঃ)-কে কাফের আখ্যায়িত করার প্রশ্নই আসে না। আলবানীসহ সকল যুগের বিদ্বানগণের নিকট ইমাম বুখারী (রহঃ) পরম শ্রদ্ধার পাত্র। মূলতঃ
বিষয়টি যে প্রসঙ্গে উত্থাপিত হয়েছে তা হ’ল, আল্লাহর বাণী ‘সব কিছুই ধ্বংস হবে তাঁর চেহারা ব্যতীত’ (ক্বাছাছ ৮৮) আয়াতের ব্যাখ্যায় ‘ইল্লা ওয়াজহাহু’ (তাঁর চেহারা ব্যতীত)-এর অর্থ ইমাম বুখারী (রহঃ) ‘তাঁর রাজত্ব’ করেছেন (বুখারী ৬/১১২, সূরা ক্বাছাছের আলোচনা)

যা বাহ্যদৃষ্টিতে তা’বীল মনে হয়। এর উত্তর হ’ল, প্রথমতঃ ছহীহ বুখারীর নাসাফী বর্ণিত নুসখা মোতাবেক তাফসীরটি ইমাম বুখারীর নয়, বরং মা‘মারের (ফাৎহুল বারী ৮/৫০৫)

দ্বিতীয়তঃ এটি যদি তাঁর নিজের বক্তব্যও হয়ে থাকে, তবে তাঁর উদ্দেশ্য আল্লাহর ছিফাতের তা’বীল করা নয়, বরং লাযেম দ্বারা মালযূম উদ্দেশ্য। অর্থাৎ
আল্লাহর চেহারা বাকী থাকার অর্থ আল্লাহর সত্তা এবং তাঁর রাজত্ব বাকী থাকা।

সালাফে ছালেহীন কখনও কখনও এমন সম্পূরক তাফসীর করতেন, যা মূলতঃ তা’বীল নয় এবং পরস্পর বিরোধীও নয় (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমু‘ ফাতাওয়া ৬/৩৯০)

আর ইমাম বুখারী (রহঃ) যে সালাফে ছালেহীনের মতই আল্লাহর বিভিন্ন ছিফাতে বিশ্বাস করতেন, তার প্রমাণ ছহীহ বুখারীর বিভিন্ন অধ্যায়েই রয়েছে। যেমন, باب
(قُلْ أَىُّ شَىْءٍ أَكْبَرُ شَهَادَةً قُلِ اللهُ). وَسَمَّى اللهُ
تَعَالَى نَفْسَهُ شَيْئًا. وَسَمَّى النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم
الْقُرْآنَ شَيْئًا وَهْوَ صِفَةٌ مِنْ صِفَاتِ اللهِ. وَقَالَ (كُلُّ
شَىْءٍ هَالِكٌ إِلاَّ وَجْهَهُ) (বুখারী ৯/১২৪)। সুতরাং এ
ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই। শায়খ আলবানীকে ইমাম বুখারীর উক্ত তাফসীর সম্পর্কে প্রশ্ন করা হ’লে, তিনি বিদ্বানসূলভ জাযবায় বলেছিলেন যে, ‘এরূপ কথা কোন মুমিন মুসলমান বলতে পারে না’। কিন্তু পরক্ষণেই তিনি এমন তাফসীর ইমাম
বুখারীর নিজস্ব কি-না তাতে সংশয় প্রকাশ করে বলেন,المهم أن ننزه الإمام
البخاري أن يؤول هذه الآية وهو إمام في الحديث وفي الصفات وهو سلفي العقيدة
والحمد لله ‘মূলকথা হ’ল, আমরা ইমাম বুখারী এই আয়াতের তা’বীল করেছেন- এমন
ধারণা থেকে তাঁকে মুক্ত করতে চাই। কেননা তিনি হাদীছের ইমাম এবং আল্লাহর ছিফাতের ক্ষেত্রে তিনি সালাফে ছালেহীনের আক্বীদা পোষণকারী আলহামদুলিল্লাহ (মওসূ‘আতুল আলবানী ফিল আক্বীদাহ ৬/৩২৬, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, ক্যাসেট নং ৭৩৮)

সুতরাং শায়খ আলবানী ইমাম বুখারীকে কাফের বলেছেন, একথা নিতান্তই ভিত্তিহীন এবং অপবাদ মাত্র।

সূত্র: মাসিক আত-তাহরীক।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Mahmud Ibn Shahid Ullah

"যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ❛❛যখন দেখবেন বাত্বিল আপনার উপর সন্তুষ্ট, তখন বুঝে নিবেন আপনি ক্রমের হক্ব থেকে বক্রপথে ধবিত হচ্ছেন।❞
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button