অন্যান্য

বহির্বিশ্বে পারিবারিক পরিবেশে প্রবাসী ছাত্রদের বসবাস

প্রশ্ন: যে ব্যক্তি শিক্ষার জন্য বহির্বিশ্বে গমন করবে, সেই ব্যক্তির জন্য অধিকতর ভাষাগত সুবিধা হাসিলের উদ্দেশ্যে ঐ দেশের জনগণের সাথে পারিবারিক পরিবেশে বসবাস করার বিধান কী?

উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ্‌।

পারিবারিক পরিবেশে বসবাস করা বৈধ নয়, যখন এর মধ্যে ছাত্রের জন্য কাফির সম্প্রদায় ও তাদের নারীদের চরিত্রের দ্বারা ফিতনা বা বিপর্যয়ের মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা থাকে; বরং ফিতনার উপায়-উপকরণ থেকে দূরবর্তী স্থানেই ছাত্রের বসবাসের ব্যবস্থা হওয়া আবশ্যক; আর এই বিধানটি সামগ্রিকভাবে প্রযোজ্য হবে শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্যে কাফিরদের দেশে ছাত্রদের সফর বৈধতার পক্ষে মতামতের উপর ভিত্তি করে। আর সঠিক কথা হল, শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্যে কাফিরদের দেশে সফর করা বৈধ নয়;

তবে চূড়ান্ত প্রয়োজনের মুহূর্তে শর্তসাপেক্ষে ঐসব দেশে সফর করা বৈধ হবে, এই ক্ষেত্রে ছাত্রকে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান হতে হবে এবং ফিতনার উপায়-উপকরণ থেকে দূরে অবস্থান করতে হবে;

কেননা নবী (ﷺ) বলেছেন:

« لا يقبل الله عز و جل من مشرك بعد ما أسلم عملا أو يفارق المشركين إلى المسلمين ». (أخرجه النسائي) .

“আল্লাহ তা‘আলা ইসলাম গ্রহণ করার পরেও কোন মুশরিকের আ‘মাল কবুল করবেন না, যতক্ষণ না সে মুশরিকদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মুসলিমদের সাথে অবস্থান করবে।” – (ইমাম নাসায়ী তাঁর ‘আস-সুনান’ গ্রন্থে হাদিসখানা বিশুদ্ধ সনদে সংকলন করেছেন এবং নাসীর উদ্দিন আলবানীও হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন);

আবার ইমাম আবূ দাউদ, তিরমিযী ও নাসায়ী র. বিশুদ্ধ সনদে জারীর ইবন আবদিল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন, নবী (ﷺ) বলেছেন:

« أَنَا بَرِىءٌ مِنْ كُلِّ مُسْلِمٍ يُقِيمُ بَيْنَ أَظْهُرِ الْمُشْرِكِينَ ». (أخرجه أبو داود والترمذي و النسائي) .

“আমি এমন প্রত্যেক মুসলিমের দায়দায়িত্ব থেকে মুক্ত, যে মুশরিকদের মাঝে বসবাস করে।” আর এই অর্থে বহু সংখ্যক আল-কুরআনের আয়াত ও হাদিস রয়েছে। সুতরাং মুসলিমগণের উপর আবশ্যকীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য হল জরুরি মুহূর্ত ছাড়া মুশরিকদের দেশে গমন করার ব্যাপারে সাবধান ও সতর্ক করা।

তবে যখন কোন মুসাফির (পর্যটক) জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান হয় এবং আল্লাহর দিকে জনগণকে দাওয়াত দানের ইচ্ছা পোষণ করে, তাহলে এটা হবে স্বতন্ত্র ব্যাপার; আর এর মধ্যে মহান কল্যাণ নিহিত রয়েছে; কেননা, সে মুশরিকদেরকে আল্লাহর একত্ববাদের দিকে ডাকবে এবং তাদেরকে আল্লাহর শরী‘য়ত শিক্ষা দেবে; সুতরাং সে হচ্ছে সৎকর্মশীল ব্যক্তি এবং তার নিকট যে জ্ঞান ও বুদ্ধি রয়েছে, তা দিয়ে সে বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে দূরে থাকবে; আর সকল সাহায্য ও আশ্রয়ের স্থান হলেন আল্লাহ তা‘আলা।  

আল্লাহ্‌ সবচেয়ে ভালো জানেন।

সুত্রঃ শাইখ ইবনু বাযফতোয়া ইসলামীয়া (فتاوى إسلامية): ১ / ১১৭

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

মোঃ মামুনূর রশিদ (বকুল)

❝ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই,এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।❞ যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল।
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button