শিরক ও বিদ’আত

সুফীদের নিকট আল্লাহর যিকিরের পদ্ধতি

প্রশ্ন: সুফীগণ আল্লাহর গুণাবলীর যিকির বাদ দিয়ে শুধু ‘আল্লাহ’ শব্দের যিকির করে কেন?
সাধারণ মুসলিমগণ কেন শুধু ‘আল্লাহ’ শব্দের যিকির না করে কালেমায়ে তাওহীদ এবং আল্লাহর গুণাবলীর যিকির করে?
সুফীগণ বলে: (আল্লাহ) শব্দের যিকির অধিক মূল্যবান, কিন্তু সাধারণ মুসলিমগণ বলে: (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ) এর যিকির অধিক মূল্যবান।

উত্তর: কুরআনের আয়াত এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ)  থেকে সাব্যস্ত বহু সহীহ হাদীস প্রমাণ করে যে, সর্বো কৃষ্ট বাণী হচ্ছে: কালেমায়ে তাওহীদ তথা (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ) যেমন রাসূলের বাণী:
«الإيمان بضع وسبعون شعبة فأفضلها قول لا إله إلا الله»
“ঈমানের সত্তরেরও অধিক শাখা রয়েছে, তন্মধ্যে সর্বো কৃষ্ট হচ্ছে: লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা।”[20]তিনি আরও বলেন:
«أحب الكلام إلى الله أربع: سبحان الله، والحمد لله، ولاإله إلا الله، والله أكبر»
“আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় কথা হচ্ছে চারটি: সুবহানাল্লাহ, আলহামদু লিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার।”[21]আল্লাহ তা‘আলা তার মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে বহু জায়গায় এ কালেমা উল্লেখ করেছেন।
তন্মধ্যে আল্লাহর বাণী:
﴿ شَهِدَ ٱللَّهُ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ﴾ [ال عمران: ١٨]“আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো যোগ্য উপাসক নেই। [সূরা আল ইমরান/১৮]এবং
﴿ فَٱعۡلَمۡ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّهُ وَٱسۡتَغۡفِرۡ لِذَنۢبِكَ ﴾ [محمد: ١٩]“সুতরাং জেনে রাখুন, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো যোগ্য উপাসক নেই, কাজেই আপনি আপনার পদস্খলনের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন।” [সূরা মুহাম্মদ/১৯]সকল মুসলিমের উচিৎ হলো এ কালেমা (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ) দ্বারা যিকির করা এবং সাথে ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদু লিল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’, ‘লা হাওলা অলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ যোগ করা। এ সবগুলোই বৈধ এবং ভালো বাক্য।
আর সুফীদের যিকির হলো: আল্লাহ আল্লাহ, অথবা হু হু। এটি হলো বিদ‘আত, এগুলো দ্বারা যিকির করা বৈধ নয়, কারণ তা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং তাঁর কোনো সাহাবী থেকে সাব্যস্ত নেই, বিধায় তা বিদ‘আত। কেননা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন:
«من عمل عملا ليس عليه أمرنا فهو رد»
 “যে ব্যক্তি এমন কোনো আ‘মাল করবে যা আমার শরিয়তে নেই তা প্রত্যাখ্যাত।”
 
এবং তাঁর বাণী:
«من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فهو رد» متفق عليه
“যে ব্যক্তি আমার এ দ্বীনের মধ্যে নতুন কোনো জিনিস সৃষ্টি করবে যা এর অন্তর্ভুক্ত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত। [বুখারী ও মুসলিম]সুতরাং ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ এর দ্বারা আ‘মাল করা জায়েয নেই এবং আ‘মাল করলেও গ্রহণযোগ্য হবে না। কাজেই আল্লাহ যা শরিয়ত করেননি তা দ্বারা ইবাদত করা পূর্বোল্লেখিত হাদীসের ভিত্তিতে কোনো মুসলিমের পক্ষে জায়েয নেই। কারণ আল্লাহ তা‘আলা মুশরিকদের নিন্দা করে বলেছেন:
﴿ أَمۡ لَهُمۡ شُرَكَٰٓؤُاْ شَرَعُواْ لَهُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا لَمۡ يَأۡذَنۢ بِهِ ٱللَّهُۚ ﴾ [الشورى: ٢١]“তাদের কি শরীক রয়েছে যারা তাদের জন্য দ্বীনের বিধান গড়বে যার অনুমতি আল্লাহ তাদের দেননি। [সূরা শূরা/২১]আল্লাহ সকলকে তার পছন্দনীয় কাজ করার তাওফীক দান করুন।

বিদ‘আত ও এর মন্দ প্রভাব
সংকলন: শাইখ আবদুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায
সূত্র: ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদিআরব

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button