প্রশ্ন: রোযা অবস্থায় গোসল ফরয হলে কি করবেন?
উত্তর: ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম না জানার কারণে অসংখ্য মুসলিম ভাই- বোনের নামায সহ নানা আমল কবুল হয় না।
যেটা ঈমানের জন্য ধ্বংসাত্মক। নাউযুবিল্লাহ। আপনি যদি নিয়ম না মেনে এক সাগর পানি দিয়ে গোসল করেন তাহলেও আপনার ফরয গোসল আদায় হবেনা।
অবশ্যই সুন্নাহ মেনে নিয়মানুযায়ী ফরয গোসল করতে হবে।
যে সব কারণে গোসল ফরজ হয়ঃ
১. স্বপ্নদোষ বা উত্তেজনাবশত বীর্যপাত হলে।
২. সহবাসে (সহবাসে বীর্যপাত হোক আর নাই হোক)।
৩. মেয়েদের হায়েয-নিফাস শেষ হলে।
৪. ইসলাম গ্রহন করলে (নব-মুসলিম হলে)।
গোসলের ফরজ ৩ টিঃ
১. গড়গড়া সহ কুলি করা, যাতে পানি গলার হাড় পর্যন্ত পৌছে। (রোযা অবস্থায় শুধু কুলি করুন, গড়্গড়া সহ করা যাবেনা।)
২. হাতে পানি নিয়ে নাকের নরম হাড় পর্যন্ত পানি পৌছানো। (রোযা অবস্থায় শুধু নাকে পানি দিন, নরম হাড় পর্যন্ত পানি প্রবাহ করা যাবেনা।)
৩. সমস্ত শরীর উত্তম রুপে ধৌত করা।
ফরজ গোসলের সঠিক নিয়মঃ
গোসলের নিয়ত করা, ‘বিসমিল্লাহ’ বলে গোসল শুরু করা। দুই হাত কবজি পর্যন্ত ধোওয়া (বুখারী ২৪৮)।
পানি ঢেলে বাম হাত দিয়ে লজ্জাস্থান পরিষ্কার করা (বুখারী ২৫৭)। বাম হাতটি ভালভাবে ঘষে ধুয়ে নেওয়া (বুখারী ২৬৬)।
নামাজের ওজুর মতো ভালভাবে পূর্ণরূপে ওজু করা। এক্ষেত্রে শুধু পা দুটো বাকি রাখলেও চলবে,
যা গোসলের শেষে ধুয়ে ফেলতে হবে। (বুখারী ২৫৭, ২৫৯, ২৬৫)।
মাথায় পানি ঢেলে চুলের গোড়া ভালভাবে আঙ্গুল দিয়ে ভিজানো। (বুখারী ২৫৮)।
পুরো শরীরে পানি ঢালা; প্রথমে ডানে ৩বার,
পরে বামে ৩বার, শেষে মাথার উপর ৩ বার। (বুখারী ১৬৮)।
(যেন শরীরের কোন অংশ বা কোন লোমও শুকনো না থাকে।পুরুষের দাড়ি ও মাথার চুল এবং মহিলাদের চুল ভালোভাবে ভিজতে হবে। নাভি, বগল ও অন্যান্য কুঁচকানো জায়গায় অবশ্যই পানি ঢালতে হবে)।
গোসলের জায়গা থেকে একটু সরে গিয়ে দুই পা ধোওয়া।(বুখারী ২৫৭)।
এটাই হচ্ছে গোসলের পরিপূর্ণ পদ্ধতি।
উল্লেখ্য, এইভাবে গোসল করলে এর পরে নামায পড়তে চাইলে আলাদা করে ওযু করতে হবেনা, যদিনা গোসল করার সময় ওযু ভংগের কোনো কারণ ঘটে থাকে।
গোসলের পরে কাপড় চেঞ্জ করলে বা হাঁটুর উপরে কাপড় উঠে গেলে ওযু ভাংবেনা, এটা ওযু ভংগের কারণ না।
আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে ফরয গোসল করার ও এ জ্ঞান সকলের কাছে পৌছে দেয়ার তওফিক দান করুন।