দৈনন্দিন

প্রশ্ন: ইসলামে মধ্যমপন্থা অবলম্বন বলতে কী বুঝায়? অনেক প্র্যাক্টিসিং মুসলিম মনে করেন মধ্যমপন্থা মানে যে সমাজ যে রকম, সেখানে সেভাবে নিজেকে মানিয়ে নেয়া। যেমন- প্রয়োজন অনুযায়ী পারিবারিক সমাবেশে গায়রে মাহরাম কাজিনদের সাথে খোশগল্প করা, মসজিদে গেলে পাঞ্জাবি-পায়জামা (ছেলেদের ক্ষেত্রে) অথবা খিমার, নিকাব (মেয়েদের ক্ষেত্রে) অন্যদিকে অনুষ্ঠানে গেলে যথাক্রমে গেঞ্জি-টাইট প্যান্ট (ছেলে) অথবা শুধু হিজাব (মেয়ে) পরা, ইত্যাদি। অন্যদিকে যারা কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী সঠিকভাবে চোখের হেফাযত করে, ফেৎনা থেকে বাঁচার জন্য পর্দার বিধান মেনে চলে তাদেরকে অনেকে অসামাজিক, বিভ্রান্ত, কট্টরপন্থী ইত্যাদি টাইটেলে আখ্যা দিয়ে থাকে। তাদের উক্ত  দাবী কি সঠিক?

উত্তর : তাদের দাবী ও যুক্তি বিভ্রান্তিকর। কারণ তারা নব্য জাহেলিয়াতকে উপভোগ করার জন্য সমাজে শয়তানের জাল বিস্তার করছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর এভাবেই আমি তোমাদেরকে মধ্যমপন্থা অবলম্বনকারী উম্মত বানিয়েছি’ (সূরা আল-বাক্বারাহ : ১৪৩)। ইসলাম পালনে মধ্যমপন্থার কোন বিকল্প নেই। ইসলামের কোন বিধান পালনে যেমন বাড়াবাড়ি করা যাবে না, তেমনি কোন বিধানকে অবজ্ঞা করাও যাবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর এটি তো আমার সঠিক পথ। সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ কর’ (সূরা আল-আন‘আম : ১৫৩)। তিনি আরো বলেন, ‘সুতরাং যেভাবে তুমি নির্দেশিত হয়েছ সেভাবে তুমি ও তোমার সাথী যারা তওবা করেছে, সকলে অবিচল থাক। আর সীমালঙ্ঘন কর না’ (সূরা হূদ : ১১২)। অতএব ইসলামের বিধান আল্লাহর নির্দেশিত পদ্ধতিতে পালন করতে হবে।

যে সমাজ যে রকম, সেখানে সেভাবে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার নাম মধ্যমপন্থা নয়; বরং মধ্যমপন্থার নামে ইসলামের বিধান লঙ্ঘন করা। এ নীতির ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদের সতর্ক করে বলেন, ‘আর যারা যুলুম করেছে তোমরা তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো না; অন্যথা তোমাদেরকে আগুন স্পর্শ করবে এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক থাকবে না। অতঃপর তোমরা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না’ (সূরা হূদ : ১১৩)। এমনকি রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সতর্ক করে আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি যদি আপনাকে অবিচল না রাখতাম, তবে অবশ্যই আপনি তাদের দিকে কিছুটা ঝুঁকে পড়তেন। তখন আমি অবশ্যই আপনাকে জীবনের দ্বিগুণ ও মরণের দ্বিগুণ আযাব আস্বাদন করাতাম। তারপর আপনি আপনার জন্য আমার বিরুদ্ধে কোন সাহায্যকারী পাবেন না’ (সূরা বানী ইসরাঈল : ৭৪-৭৫)। অতএব নিজের ঈমান, আমল ও চরিত্র রক্ষার্থে সর্বোচ্চ সতর্ক ও হুঁশিয়ার থাকতে হবে। নিন্দুকের নিন্দা কিংবা সমালোচকের সমালোচনার ভয় করা যাবে না।

 

সূত্র: মাসিক আল-ইখলাছ।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
Back to top button