প্রশ্ন: কাফের অপেক্ষা মুনাফিক কি বেশি ভয়ঙ্কর হবে?
উত্তর: জাহান্নামের উদ্বোধন হবে মুনাফিক দিয়ে। কাফের, মুশরিক দিয়ে নয়। [সূরা নিসা-৪/১৪৫, বুখারী-৩৩]
রাসুল সাঃ বলেন:- প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য ক্বিয়ামাতের দিন একটা পতাকা থাকবে, যার দ্বারা তাকে চেনা যাবে।(বুখারী ৬৯৬৬)
কাফের ও মুনাফিক জাহান্নামে যাবে; কিন্তু মুনাফিক জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে। মহান আল্লাহ বলেন, “মুনাফিক (কপট) ব্যক্তিরা অবশ্যই জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে অবস্থান করবে এবং তাদের জন্য তুমি কখনও কোন সাহায্যকারী পাবে না”। (সূরা নিসাঃ ১৪৫)
নিশ্চয় পুকুর বা নদীর কুমির থেকে সাবধান থাকা যায়, বাঁচাও সহজ। কিন্তু ঘরের ঢেঁকিই যদি কুমির হয়, তাহলে তো বাঁচা দায়। পর চোরকে পার আছে, ঘর চোরকে পার নেই। ঘরের লোক যদি মীরজাফরী করে, তাহলে নিশ্চয় তা অধিক সাংঘাতিক, অধিক ভয়ানক।
মুনাফিকদের অবস্থা এত ভয়ানক ও এত বিপজ্জনক যে, তাদের ব্যাপারে সতর্কতা জরুরী ছিল। তাই মহান আল্লাহ কুরআন মাজীদ তাদের সকল রহস্য খুলে দিয়েছেন। ভূমিকা পর যে আলোচনা দিয়ে তিনি গ্রন্থ শুরু করেছেন, তাতে তিন শ্রেণীর মানুষের কথা উল্লেখ করেছেন; মু’মিন, কাফের ও মুনাফিক। মু’মিনদের জন্য চারটি এবং কাফেরদের জন্য দু’টি আয়াত উল্লেখ করেছেন। আর মুনাফিকদের জন্য উল্লেখ করেছেন তেরোটি আয়াত। এখানে তাদের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করে মুসলিমদেরকে সতর্ক করা হয়েছে, যাতে অজান্তে তাদের দুরভিসন্ধি দ্বারা মুসলিমরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যাদেরকে বাহ্যতঃ বন্ধু মনে হয়, অথচ আসলে তারা ইসলাম ও মুসলিমদের বড় শত্রু।
উমার (রাঃ) বলেন, ‘আমি তোমাদের জন্য দুই ব্যক্তির ভয় করি না, (প্রথম) যার ঈমান স্পষ্ট এবং (দ্বিতীয়) যার কুফরী স্পষ্ট। কিন্তু আমি তোমাদের জন্য ভয় করি মুনাফিক ব্যক্তির, যে ঈমান দ্বারা নিজেদের বাঁচিয়ে রাখে এবং কাজ করে বেঈমানের’। (স্বিফাতুন নিফাক্ব ফিরয়াবী ১/৩০)
ওহাব বিন মুনাব্বিহ বলেন, ‘মুনাফিকের নিদর্শন হল, তার সালাম হবে অভিশাপ, তার খাদ্য হবে হারাম, তার গনীমত হবে চুরির মাল, তার দিন যাবে হৈচৈ-এ এবং রাত কাটবে কাঠের মত ঘুমিয়ে’। (স্বিফাতুন নিফাক্ব ফিরয়াবী ১/৩০)
বইঃ মুনাফিকী আচরণ
লেখকঃ শাইখ আব্দুল হামীদ ফাইযী আল-মাদানী
আল-মাজমাআহ, সঊদী আরব