অন্যান্য

প্রশ্ন : মুসলিম ২১৪২ নং হাদীছ থেকে বুঝা যায় আত্ম প্রশংসামূলক নাম রাখাকে রাসূল (ছাঃ) অপসন্দ করতেন। এক্ষণে অধিক পরহেযগার, দানশীল ইত্যাদি অর্থবোধক নাম রাখা যাবে কি?

উত্তর : উক্ত হাদীছ অনুযায়ী জনৈকা মহিলার নাম ছিল বাররাহ, যার অর্থ গুনাহমুক্ত। রাসূল (ছাঃ) তা পরিবর্তন করে যয়নব (সুন্দর ও সুগন্ধিযুক্ত বৃক্ষ) রেখে বললেন, তোমরা আত্মপ্রশংসা করো না। তোমাদের মধ্যে কে সর্বাধিক সৎ আমলকারী সে সম্পর্কে আল্লাহই সম্যক অবগত (মুসলিম হা/২১৪২; মিশকাত হা/৪৭৫৬)

অতএব আব্দুল্লাহ (আল্লাহর দাস), আব্দুর রহমান ইত্যাদি নাম রাখাই উত্তম। কেননা ‘এ নামগুলিই আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয়’ (মুসলিম হা/২১৩২; মিশকাত হা/৪৭৫২)

উল্লেখ্য যে, নিজের নাম ঐরূপ রাখাকে আত্মপ্রশংসামূলক বলা হয়, যা নিষিদ্ধ। কিন্তু আক্বীক্বার সময় শিশু সন্তানের নাম ঐরূপ রাখা তার জন্য আত্মপ্রশংসা নয়। বরং পিতা ও অভিভাবকদের পক্ষ হ’তে তার জন্য শুভ কামনা বা দো‘আ স্বরূপ।

যেমন রাসূল (ছাঃ)-এর নাম তার দাদা রেখেছিলেন ‘মুহাম্মাদ’ ও মা রেখেছিলেন ‘আহমাদ’ (প্রশংসিত)। অনুরূপভাবে রাসূল (ছাঃ) মুতার যুদ্ধবিজয়ী সেনাপতি খালেদকে দো‘আ করে অশ্রুসজল নেত্রে বলেছিলেন, এবারে ঝান্ডা হাতে নিয়েছে ‘আল্লাহর তরবারি সমূহের অন্যতম ‘তরবারি’। অতঃপর আল্লাহ তাদের হাতে বিজয় দান করেন’ (বুখারী হা/৪২৬২)

অর্থাৎ খালেদ নিজে ঐ নাম অর্থাৎ ‘সায়ফুল্লাহ’ নাম গ্রহণ করেননি, বরং তাঁর অভিভাবক রাসূল (ছাঃ) তাকে ঐ লকব দিয়েছিলেন। রাসূল (ছাঃ)-এর নিজের ছেলে আব্দুল্লাহর লকব ছিল ত্বাইয়িব ও ত্বাহির (পবিত্র)। অতএব পিতা-মাতা তার সন্তানের জন্য দো‘আ হিসাবে উক্ত গুণবাচক নাম সমূহ রাখতে পারেন। তবে তা যেন অহংকার প্রকাশক না হয়।

জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ইয়া‘লা, বারাকাহ, আফলাহ, ইয়াসার, নাফে‘ প্রভৃতি নাম নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে তিনি চুপ হয়ে যান। অতঃপর তার মৃত্যু হয়, কিন্তু এগুলো থেকে আর নিষেধ করেননি। পরে ওমর (রাঃ) এসব নাম নিষেধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে বাদ দেন’ (মুসলিম হা/২১৩৮; মিশকাত হা/৪৭৫৪)। এতে বুঝা যায় যে, এই নামগুলি হারামের পর্যায়ে ছিল না। তবে অপসন্দনীয় ছিল।

ছাহেবে মিরক্বাত বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পরে চুপ হয়ে যান উম্মতের উপরে রহমত স্বরূপ। যাতে ঝগড়া ও ফিৎনা ব্যাপকতা লাভ না করে। কারণ অধিকাংশ মানুষ ভাল-মন্দ নামের মধ্যে তারতম্য করতে পারে না (মিরক্বাত ৯/১০৭)

বস্ত্ততঃ নাম রাখার উদ্দেশ্য হ’ল তার ধর্মীয় ও জাতিগত পরিচয় তুলে ধরা। অতএব বাংলাদেশ সহ যেকোন অনারব দেশে আরবীতে ইসলামী নাম রাখাই কর্তব্য।

সূত্র: মাসিক আত-তাহরীক।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Mahmud Ibn Shahid Ullah

"যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ❛❛যখন দেখবেন বাত্বিল আপনার উপর সন্তুষ্ট, তখন বুঝে নিবেন আপনি ক্রমের হক্ব থেকে বক্রপথে ধবিত হচ্ছেন।❞
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button