অন্যান্য

শিক্ষার কারণে ইয়াহূদীবাদ ও খৃষ্টবাদের সমালোচনার করা

প্রশ্ন: আমেরিকাতে আমাদের শিক্ষার ফলে আমাদের উপর খৃষ্ট ধর্ম ও ইয়াহূদী ধর্মের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য পেশ করা হয়ে থাকে; আমাদের জন্য এই দু’টি ধর্মের ব্যাপারে কথা বলা জায়েয (বৈধ) হবে কি?

উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ্‌।

হ্যাঁ, তোমাদের জন্য তোমাদের জ্ঞান অনুযায়ী এই ব্যাপারে কথা বলা বৈধ হবে; তবে এই প্রসঙ্গে অথবা অন্য যে কোন প্রসঙ্গে না জেনে কথা বলা বৈধ হবে না; আর জেনে রাখা দরকার যে, তাওরাত ও ইঞ্জিলের শরী‘য়ত ঐসব শরী‘য়তের অন্তর্ভুক্ত, যা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলগণের উপর অবতীর্ণ করেছেন তাঁদের সমকালীন সময়ে স্থান-কাল পাত্র ভেদে তাঁদের উম্মতদের উপযুক্ততা অনুযায়ী; আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা প্রতিটি শরী‘য়ত প্রণয়ন ও নির্ধারণে প্রজ্ঞাময়, মহজ্ঞানী; যেমন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন:

﴿ لِكُلّٖ جَعَلۡنَا مِنكُمۡ شِرۡعَةٗ وَمِنۡهَاجٗاۚ ٨ ﴾ [المائدة: ٤٨]

“তোমাদের প্রত্যেকের জন্যই আমরা একটা করে শরীয়ত ও স্পষ্টপথ নির্ধারণ করে দিয়েছি।”- ( সূরা আল-মায়িদা: ৪৮); অতঃপর ইয়াহূদী ও খৃষ্টানরা তাদের শরী‘য়তকে বিকৃতি ও পরিবর্তন করে ফেলেছে এবং তার মধ্যে তারা শরী‘য়তের অন্তর্ভুক্ত নয় এমন অনেক বিষয়ের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে; অতঃপর আল্লাহ তাঁর নবী মুহাম্মদ (ﷺ) কে রিস্বলাতসহ জিন ও মানুষসহ গোটা বিশ্ববাসীর জন্য প্রেরণ করেছেন এবং তাঁর জন্য সাধারণ শরী‘য়তের ব্যবস্থা করেছেন; আর এর মাধ্যমে তিনি তাওরাত ও ইঞ্জিলের শরী‘য়তকে মানসুখ বা রহিত করেছেন এবং গোটা বিশ্ববাসীর জন্য আবশ্যক করে দিয়েছেন যে, তারা যেন ঐ শরী‘য়াতের আশ্রয়ে বিচার-ফয়সালার কাজ পরিচালনা করে, যেই শরী‘য়াত দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা মুহাম্মদ (ﷺ) কে প্রেরণ করেছেন এবং তারা যেন অন্য সকল শরী‘য়তকে বাদ দিয়ে এটাকেই একমাত্র শরী‘য়ত হিসেবে গ্রহণ করে; যেমনটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাঁর নবী মুহাম্মদ (ﷺ) কে সম্বোধন করে সুরা আল-মায়িদার মধ্যে বলেছেন:

﴿ وَأَنزَلۡنَآ إِلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ بِٱلۡحَقِّ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَمُهَيۡمِنًا عَلَيۡهِۖ فَٱحۡكُم بَيۡنَهُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُۖ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَهُمۡ عَمَّا جَآءَكَ مِنَ ٱلۡحَقِّۚ لِكُلّٖ جَعَلۡنَا مِنكُمۡ شِرۡعَةٗ وَمِنۡهَاجٗاۚ ﴾ الآية [المائدة: ٤٨] 

“আর আমরা আপনার প্রতি সত্যসহ কিতাব নাযিল করেছি ইতোপূর্বেকার কিতাবসমূহের সত্যতা প্রতিপন্নকারী ও সেগুলোর তদারককারীরূপে। সুতরাং আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী আপনি তাদের বিচার নিষ্পত্তি করুন এবং যে সত্য আপনার নিকট এসেছে, তা ছেড়ে তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন না। তোমাদের প্রত্যেকের জন্যই আমরা একটা করে শরীয়ত ও স্পষ্টপথ নির্ধারণ করে দিয়েছি।”- ( সূরা আল-মায়িদা: ৪৮);

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤۡمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيۡنَهُمۡ ثُمَّ لَا يَجِدُواْ فِيٓ أَنفُسِهِمۡ حَرَجٗا مِّمَّا قَضَيۡتَ وَيُسَلِّمُواْ تَسۡلِيمٗا ٦٥ ﴾ [النساء: ٦٥]

“কিন্তু না, আপনার রবের শপথ! তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার ভার আপনার উপর অর্পণ না করে; অতঃপর আপনার মীমাংসা সম্পর্কে তাদের মনে কোন দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্তকরণে তা মেনে নেয়।”- (সূরা আন-নিসা ৬৫);

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ أَفَحُكۡمَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ يَبۡغُونَۚ وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكۡمٗا لِّقَوۡمٖ يُوقِنُونَ ٥٠ ﴾ [المائدة: ٥٠]

“তবে কি তারা জাহেলিয়াতের বিধি-বিধান কামনা করে? আর দৃঢ় বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য বিধান প্রদানে আল্লাহর চেয়ে আর কে শ্রেষ্ঠতর?”- ( সূরা আল-মায়িদা: ৫০)।

আর এই প্রসঙ্গে আরও অনেক আয়াত রয়েছে; সুতরাং যে ব্যক্তি উপকার হাসিল ও আ‘মাল করার উদ্দেশ্যে আল-কুরআনুল কারীমকে নিয়ে চিন্তাগবেষণা করবে এবং তাকে বেশি বেশি তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে সঠিক পথের সন্ধান দেবেন;

যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿ إِنَّ هَٰذَا ٱلۡقُرۡءَانَ يَهۡدِي لِلَّتِي هِيَ أَقۡوَمُ ﴾ الآية [الاسراء: ٩]

“নিশ্চয়ই এই কুরআন হিদায়াত করে সেই পথের দিকে, যা সুদৃঢ়।”- ( সূরা আল-ইসরা: ৯)।

আল্লাহ্‌ সবচেয়ে ভালো জানেন।

সুত্রঃ শাইখ ইবনু বায; ফতোয়ায়ে ইসলামীয়া (فتاوى إسلامية): ৪ / ২৮০

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

মোঃ মামুনূর রশিদ (বকুল)

❝ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই,এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।❞ যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল।
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button