অন্যান্য

প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র চুরি করা

প্রশ্ন: আমি মাধ্যমিক স্তরের একজন ছাত্র, তবে আমি প্রাথমিক স্তরে অধ্যয়নকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানের কিছু বই ও আসবাবপত্র চুরি করেছিলাম, এখন আল্লাহ আমাকে হেদায়াত (সঠিক জ্ঞান) দান করেছেন … সুতরাং এখন আমি কী করব, আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম পুরস্কার দান করুন?

উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ্‌।

আল্লাহ তা‘আলা এমন কোন রোগ নাযিল করেন নি, যার চিকিৎসা বা ঔষধ তিনি নাযিল করেন নি … আর এই রোগটি অধিকাংশ মানুষের ছোট বেলায় হয়ে থাকে এবং যুবক অবস্থায় তার প্রতিকার হয়ে যায় … সুতরাং যখন তুমি কোনো ব্যক্তির নিকট থেকে অথবা কোনোভাবে কিছু চুরি করবে, তখন তোমার উপর আবশ্যক হল, তুমি যার কাছ থেকে চুরি করেছ, তার সাথে যোগাযোগ করবে ও তার কাছে তা পৌঁছিয়ে দেবে এবং বলবে: আমার নিকট আপনার এই এই জিনিস রয়েছে, অতঃপর তোমাদের উভয়ের মাঝে একটি সংশোধনমূলক সমাধানে পৌঁছাবে। কিন্তু কখনও কখনও মানুষ এটাকে তার উপর কষ্টকর কাজ মনে করে; যেমন তার পক্ষে কোন ব্যক্তির নিকট যাওয়া এবং তাকে এই কথা সম্ভব হয়ে উঠে না যে, আমি আপনার নিকট থেকে এই এই জিনিস চুরি করেছি এবং আপনার নিকট থেকে এই এই জিনিস গ্রহণ করেছি; সুতরাং এই অবস্থায় তোমার পক্ষে ভিন্ন পন্থায় পরোক্ষভাবে এসব দিরহাম বা টাকা-পয়সার মত জিনিস তার কাছে পৌঁছানো সম্ভব; যেমন: সে তা ঐ ব্যক্তির কোন এক বন্ধুর নিকট দিয়ে দেবে এবং বলবে, এই জিনিসটি অমুক ব্যক্তির; আর সে তার নিকট তার ঘটনাটি খুলে বর্ণনা করবে এবং বলবে, আমি এখন তাওবা করে আল্লাহ তা‘আলার দিকে ফিরে এসেছি; সুতরাং আমি আশা করি আপনি জিনিসটি তার কাছে পৌঁছিয়ে দেবেন … আর যখন সে এই কাজ করবে, তখন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿… وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مَخۡرَجٗا ٢ …﴾ [الطلاق: ٢]

“… আর যে কেউ আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য (উত্তরণের) পথ বের করে দেবেন …।” – (সূরা আত-তালাক: ২); আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مِنۡ أَمۡرِهِۦ يُسۡرٗا ٤ ﴾ [الطلاق: ٤]

“আর যে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য তার কাজকে সহজ করে দেন।” – (সূরা আত-তালাক: ৪); সুতরাং কাজটি সহজ হয়ে যাবে …

আর যখন বুঝা যাবে যে, তুমি যেই ব্যক্তির নিকট থেকে চুরি করেছে, এখন তুমি তাকে চিনতে পারছ না বা তার ব্যাপারে জান না এবং সে কোথায় আছে তাও জান না, তাহলে এটা প্রথমটির চেয়ে আরও সহজ; কারণ, তুমি যা চুরি করেছ, তার দ্বারা এই নিয়তে সাদকা করে দেয়া সম্ভব যে, এটার সাওয়াব তার মালিকের জন্য; আর তখন তুমি তার থেকে মুক্ত হয়ে যাবে।

নিশ্চয়ই প্রশ্নকর্তা যেই কাহিনী উল্লেখ করেছে, তা মানুষের জন্য আবশ্যক করে যে, সে এই ধরনের কাজ থেকে দূরে থাকবে; কারণ, তা বিবেকশূন্য ও নির্বোধ অবস্থায় কোন কোন সময় হতে পারে; ফলে সে চুরি করে এবং চুরিকে সে তেমন কিছু মনে করে না; অতঃপর যখন আল্লাহ তা‘আলা হেদায়াত তথা সঠিক পথ প্রদর্শনের মাধ্যমে তার উপর অনুগ্রহ করেছেন, তখন এর থেকে মুক্তি পাওয়ার ব্যাপারে সে অনেক কষ্ট-কসরত করে।

সুত্রঃ শাইখ ইবনু ‘উসাইমীন; ফতোয়া ইসলামীয়া (فتاوى إسلامية): ৪ / ১৬২

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

মোঃ মামুনূর রশিদ (বকুল)

❝ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই,এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।❞ যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল।
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button