ছাত্রদের জন্য মাসিক বৃত্তি ভোগ করা অবস্থায় ঈদুল ফিতরের সাদকা
প্রশ্ন: আমরা একদল প্রবাসী ছাত্র, সুতরাং আমাদের উপর কি যাকাত প্রদান করা ওয়াজিব (আবশ্যক), অথচ আমরা অন্যান্য ছাত্রদের মত মাসিক বৃত্তি ভোগ করি, বিষয়টি যখন এই রকম, তখন আমাদের উপর কি পরিমাণ যাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে? আর এর মাধ্যমে আমাদের জন্য এখানকার মিসকীনদেরকে সাদকা করা জায়েয হবে কিনা, অথবা তা মাসজিদ নির্মাণের কাজে দান করা যাবে কিনা এবং কখন আমরা তা ব্যয় করব, আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম পুরস্কার দান করুন?
উত্তর: আলহামদু লিল্লাহ।
যাকাত বলতে যদি সাদকাতুল ফিতর তথা ঈদুল ফিতরের সাদকাকে বুঝায়, তাহলে তা অন্যান্য মুসলিমদের মত তোমাদের উপরও ওয়াজিব (আবশ্যক) হবে; আর তা হল সংশ্লিষ্ট দেশে প্রচলিত খাদ্যশস্য যেমন- গম, ভুট্টা, চাউল ইত্যাদি থেকে এক সা পরিমাণ; আধুনিক মাপে তার পরিমাণ হল প্রায় তিন কিলোগ্রাম, যা ঈদের দিন সকাল বেলায় ঈদুল ফিতরের স্বলাতের পূর্বে, অথবা ঈদের রাত্রির এক দিন বা দুই দিন পূর্বে গরীব-মিসকীনদেরকে প্রদান করবে; যেমনটি নবী (ﷺ)-এর সাহাবীগণ করতেন; আর ঈদের স্বলাতের পর পর্যন্ত বিলম্বিত করা বৈধ হবে না; কারণ, নবী(ﷺ) জনগণ ঈদের স্বলাতের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পূর্বেই তা দিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইমাম বুখারী র. তাঁর সহীহ গ্রন্থে এই বর্ণনাটির উল্লেখ করেছেন।
আর তোমাদের মাসিক বৃত্তির মধ্যে তোমাদের উপর যাকাত আবশ্যক হবে না; তবে যখন তোমরা তার থেকে কিছু সঞ্চয় করবে এবং তার উপর এক বছর অতিবাহিত হবে, তখন তোমাদের উপর তার যাকাত ওয়াজিব হবে, যদি তা নিসাব পরিমাণে উন্নীত হয়। আর নিসাব হল একশত চল্লিশ মিসকাল রৌপ্য, অথবা বিশ মিসকাল স্বর্ণ, অথবা তার সমমূল্য পরিমাণের অপর যে কোনো মুদ্রা।
আর তোমাদের আশপাশে বিদ্যমান নিঃস্ব মুসলিমদেরকে তা দান করাটাই সর্বোত্তম; আর অধিকাংশ আলেমের মতে মাসজিদ নির্মাণের জন্য তা দান করা বৈধ নয়।
আর স্বর্ণ, রৌপ্য এবং ডলার, ইউরো, টাকা ইত্যাদির মত তার স্থলাভিষিক্ত মুদ্রাসমূহ থেকে যাকাতের উপযুক্ত সম্পদের চল্লিশ ভাগের একভাগ তথা শতকরা ২.৫% যাকাত হিসেবে প্রদান করা ওয়াজিব (আবশ্যক)। আর আল্লাহই হলেন তাওফীক দানকারী।
সূত্রঃ শাইখ ইবনু বায; ফতোয়া সংকলন (مجموع فتاوى ): ৩ / ১১১