পরীক্ষার কারণে রমযান মাসে সাওম পালন না করার কাফফারা
প্রশ্ন: আমি একজন তরুণী, পরিস্থিতি আমাকে বাধ্য করেছে ইচ্ছা করে রমযান মাসের ছয়টি সাওম ভঙ্গ করতে; আর তার কারণ ছিল পরীক্ষার তারিখ; কেননা পরীক্ষা শুরু হয়েছে রমযান মাসে … আর পরীক্ষার বিষয়গুলো ছিল খুবই কঠিন … আর আমি যদি এই দিনগুলোতে সাওম ভঙ্গ না করতাম, তবে আমার পক্ষে এই কঠিন বিষয়গুলো অধ্যয়ন করা সম্ভব হয়ে উঠত না; আমি জানতে চাচ্ছি যে, আমি কী করব, যাতে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করে দেন, আল্লাহ আপনাদেরকে উত্তম পুরস্কার দান করুন?
উত্তর: আলহামদু লিল্লাহ।
তোমার কর্তব্য হল এর থেকে তাওবা করা এবং ঐ দিনগুলোর সাওমের কাযা আদায় করা, যেই দিনগুলোর সাওম তুমি ভঙ্গ করেছ; আর যে তাওবা করে, আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং তার তাওবা কবুল করেন; আর প্রকৃত তাওবা পরিচয় হচ্ছে যার দ্বারা আল্লাহ পাপসমূহ মুছে দেন; অপরাধ থেকে বেঁচে থাকা; আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে ও তাঁর শাস্তির ভয়ে তা (অন্যায় ও অপরাধ) ত্যাগ করা; তার পক্ষ থেকে যে অপরাধ সংঘটিত হয়ে গেছে, তার জন্য লজ্জিত হওয়া এবং সেই অপরাধের পুনরাবৃত্তি না করার জন্য সত্যিকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা; আর অপরাধটি যদি আল্লাহর বান্দাদের প্রতি যুলুম-নির্যাতনমূলক হয়ে থাকে, তবে তার পরিপূর্ণ তাওবা হল তাদের হক তথা অধিকারসমূহ তাদেরকে বুঝিয়ে দেয়া …। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ وَتُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ٣١ ﴾ [النور: ٣١]
“হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে ফিরে আস, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।” – (সূরা আন-নূর: ৩১); আল্লাহ সুবহানাহ ওয়া তা‘আলা আরও বলেন:
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ تُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ تَوۡبَةٗ نَّصُوحًا ﴾ [التحريم: ٨]
“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, বিশুদ্ধ তাওবা।” – (সূরা আত-তাহরীম: ৮)।
আর নবী (ﷺ) বলেছেন:
« التوبة تجب ما قبلها».
“তাওবা তার পূর্বের অপরাধকে বাতিল করে দেয়।” নবী (ﷺ) আরও বলেছেন:
« من كانت له مظلمة لأحد من عرضه أو شيء فليتحلله منه اليوم قبل أن لا يكون دينار ولا درهم إن كان له عمل صالح أخذ منه بقدر مظلمته وإن لم تكن له حسنات أخذ من سيئات صاحبه فحمل عليه». ( أخرجه البخاري في صحيحه).
“যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ থেকে মাফ করিয়ে নেয়, সেই দিন আসার পূর্বে, যেই দিন তার কোন দিনার বা দিরহাম থাকবে না। সেই দিন তার কোন সৎকর্ম থাকলে, তার যুলুমের পরিমাণ তার নিকট থেকে নেওয়া হবে; আর যদি তার সৎকর্ম না থাকে, তাহলে তার প্রতিপক্ষের পাপ থেকে নিয়ে তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।” – (ইমাম বুখারী র. তার সহীহ গ্রন্থে হাদিসখানা বর্ণনা করেছেন, হাদিস নং- ২৩১৭)। আর আল্লাহই তাওফীক দানের মালিক।
সূত্রঃ শাইখ ইবনু বায; ফতোয়ায়ে ইসলামীয়া (فتاوى إسلامية): ২ / ১৬০