অন্যান্য

প্রশ্ন: নামাযের নিষিদ্ধ সময় কয়টি ও কী কী? সে সময় কি কোন নামাযই পড়া যাবে না? অনুগ্রহ করে বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তর: নামাযের নিষিদ্ধ সময় তিনটি। এ সময়গুলোতে সাধারণ কোন নফল পড়া ঠিক নয়।


সাহাবি উকবা বিন আমের জুহানী রা. বলেন,


ثَلاثُ سَاعَاتٍ نَهَانَا رَسُولُ الله صَلَّى الله عَلَيهِ وَسَلَّمَ أَنْ نُصَلِّي فِيهِنَّ, وَأَنْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا : حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ, وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ, وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تَغْرُبَ -رواه مسلم


“তিনটি সময়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে নামায পড়তে এবং মৃতদের দাফন করতে নিষেধ করতেন।

সূর্য উদয়ের সময়; যতক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়। সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময় থেকে নিয়ে তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া পর্যন্ত। যখন সূর্য ডুবার আগ মুহূর্তে সূর্য হলুদাভ হওয়া থেকে শুরু করে সূর্য ডুবা পর্যন্ত।” [সহীহ মুসলিম : ১/৫৬৮]

নিষিদ্ধ সময় সমূহ হচ্ছেঃ

✘🔸 ১) ফজর ছালাতের পর থেকে তীর বরাবর সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত। অর্থাৎ সূর্য উদিত হওয়ার পর ১৫/২০ মিনিটি পর্যন্ত।

✘🔸 ২) ঠিক দুপুরের সময়। অর্থাৎ যোহরের সময় হওয়ার ১০ মিঃ আগে থেকে যোহরের সময় হওয়া পর্যন্ত।

✘🔸 ৩) আসর ছালাতের পর থেকে পরিপূর্ণ রূপে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত।

নিষিদ্ধ সময়েও যে সকল সালাত পড়া বৈধ:

আমাদের জানা উচিৎ যে, বিদ্বানদের মতামতের মধ্যে প্রাধান্যযোগ্য মত হচ্ছে, কারণ বিশিষ্ট নফল নামায সমূহ আদায় করার ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ সময় বলতে কোন কিছু নেই। নিষিদ্ধ সময়েও তা আদায় করতে বাধা নেই।

✓ সুতরাং ফজর নামায বাদ বা আছর নামায বাদ বা সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলার সামান্য পূর্বে বা রাতে দিনে যখনই মসজিদে প্রবেশ করবে, বসার আগে দু’রাকাআত নামায আদায় করা জায়েয।

যদিও তা নিষিদ্ধ সময়ে হয়ে থাকে। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে কোন সময় মসজিদে প্রবেশ করলে দু রাকআত নামায পড়া ব্যতিরেকে বসতে নিষেধ করেছেন।

এক ব্যক্তি জুমার খুতবার সময় দু রাকাআত নামায না পড়লে তিনি তাকে খুতবা থামিয়ে দু রাকআত পড়ার পরে বসতে বলেছেন।


✓- ঘুম বা ভুল বশত: ছুটে যাওয়া যে কোন ওয়াক্তের ফরজ নামায। কারণ রাসূল সা. ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া বা স্বরণ হওয়ার সাথে সাথে এই নামাযগুলো আদায় করতে বলেছেন।

আর যেহেতু ফরয সালাত তার স্কন্ধে ন্যস্ত রয়েছে। তাই তা কাল বিলম্ব না করে তা আদায় করা অপরিহার্য। সে কারণে নিষিদ্ধ সময় হলেও তা আদায় করে নিতে হবে।


✓ – ফজরে দু রাকাআত সুন্নাত নামায। কেননা, এ দুরাকআত সালাত ফজরের পরে পড়ার অনুমতি সম্পর্কে আলাদা হাদীস বিদ্যমান রয়েছে।

(সুনান তিরমিযী, সাহাবী কায়েস থেকে বর্ণিত) [তবে সূর্য উঠার পরই তা পড়া অধিক উত্তম]


✓- তাওয়াফ শেষে দু রাকাআত নামায। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিন-রাত যে কোন সময় তওয়াফ ও নামায পড়ায় বারণ করতে নিষেধ করেছেন।

[মুসনাদ আহমদ ও সুনানের কিতাব সমূহ, সহীহ]


✓- সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের নামায। নবী সা. সূর্য বা চন্দ্র গ্রহণ দেখার সাথে সাথে এ সালাত আদায় করতে বলেছেন।


✓- অনুরূপভাবে জানাযার নামায ইত্যাদি এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে।

অর্থাৎ এগুলো নিষিদ্ধ সময়েও পড়া জায়েয আছে। কারণ এগুলো সাধারণ নফল নয় বরং এগুলোর প্রত্যেকটি বিশেষ কারণের সাথে সম্পৃক্ত।


সুতরাং এ সকল সালাত উক্ত নিষিদ্ধ সময়েও পড়া জায়েয আছে ইশাআল্লাহ। এ ব্যাপারে এটাই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য অভিমত।

আল্লাহু আলাম।

উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।

নামাযের নিষিদ্ধ সময় কয়টি?

নামাযের নিষিদ্ধ সময় তিনটি

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

মাহবুব বিন আনোয়ার

❝ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই,এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।❞ আমি যদিও একজন জেনারেল পড়ুয়া ছাত্র তাই আমার পক্ষে ভুল হওয়া অসম্ভব কিছু না, আমি ইসলামী শরীইয়াহ বিষয়ক জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করছি এবং এর সাথে মানুষ কে রাসুল (সা:) এর হাদিস এবং আমাদের সালফে সালেহীনদের আদর্শের দিকে দাওয়াত দেওয়ার চেষ্টা করি। যদি আমার কোন ভুল হয় ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সেটা আমাকে জানাবেন যাতে আমি শুধরে নিতে পারি।
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button