নাসীহাহ

দুঃখিত হবেন না- সব কিছুই ভাগ্যানুসারে ঘটবে 

দুঃখিত হবেন না- সব কিছুই ভাগ্যানুসারে ঘটবে

 তকদীর অনুপাতে ও যা সিদ্ধান্ত করা হয়েছে সে অনুসারেই সব কিছু ঘটে। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মত মুসলিমদের ধর্ম-বিশ্বাস এমনই। আল্লাহর ইলমের বাইরে, তার অনুমতি ছাড়া এবং ঐশী পরিকল্পনা ছাড়া এ বিশ্ব জগতে কোন কিছুই ঘটে না।

مَا أَصَابَ مِن مُّصِيبَةٍ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي أَنفُسِكُمْ إِلَّا فِي كِتَابٍ مِّن قَبْلِ أَن نَّبْرَأَهَا إِنَّ ذَٰلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ

“পৃথিবীতে এবং তোমাদের মাঝে যে বিপর্যয় আসে তা আমি ঘটানোর পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে, নিশ্চয় সে কাজ আল্লাহর পক্ষে সহজ।” (৫৭-সূরা আল হাদীদ: আয়াত-২২)

إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ

“নিশ্চয় আমি প্রতিটি জিনিসকেই তার পূর্বনির্ধারণী অনুসারেই সৃষ্টি করি।” (৫৪-সূরা আল ক্বামারঃ আয়াত-৪৯)

“এবং অবশ্যই আমি তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষতি ইত্যাদি কতিপয় জিনিস দ্বারা পরীক্ষা করব এবং (হে নবী মুহাম্মাদ) আপনি ধৈর্যশীলদেরকে (জান্নাতের) সুসংবাদ দিন।” (২-সূরা বাকারা: আয়াত-১৫৫)

একটি হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

“মুমিনের কাজ বড়ই আশ্চর্যজনক! নিশ্চয় তার সব কাজই তার জন্য কল্যাণকর। যখন তার কোন কল্যাণ হয় তখন শুকরিয়া আদায় করে, ফলে তা তার আরো কল্যাণকর হয়ে যায়। আর যখন তার কোন ক্ষতি হয় তখন সে ধৈর্য ধারণ করে, ফলে সে ক্ষতিও তার জন্য কল্যাণকর হয়ে যায়। আর এমনটি মু’মিন ছাড়া অন্য কারো জন্যই হয় না।”

একটি বিশুদ্ধ হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

“যখন তুমি কোন কিছু চাইবে, তখন তুমি তা আল্লাহর নিকটে চাও, আর যখন তুমি সাহায্য চাইবে তখন তুমি আল্লাহর নিকটই সাহায্য চাও। আর জেনে রাখ যে, সব মানুষও যদি কোন বিষয়ে তোমার উপকার করার জন্য একত্রিত হয় তবুও তারা তা করতে পারবে না। তবে আল্লাহ তোমার ভাগ্যলিপিতে যেটুকু লিখে রেখেছেন ততটুকু উপকার করতে পারবে। আর যদি তারা তোমার ক্ষতি করার জন্যও একত্রিত হয় তবুও তারা তা করতে পারবে না, তবে তোমার ভাগ্যলিপিতে আল্লাহ যেটুকু লিখে রেখেছেন-সেটুকু ক্ষতি তারা করতে পারবে। কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছে এবং (কালিতে লিখিত) পৃষ্ঠাসমূহ শুকিয়ে গেছে।”

নবী করীম (তার উপর করুণা ও শান্তি বর্ষিত হোক) আরো বলেছেন-

“এবং জেনে রাখ যে, যা তোমার নিকট এসেছে তা তোমার নিকট না আসার ছিল না এবং যা তোমার নিকট আসেনি তা তোমার নিকট আসার ছিল না।”

অন্য একটি নির্ভরযোগ্য হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

“যা তোমার উপকার করবে তার জন্য চেষ্টা কর, আল্লাহর নিকট সাহায্য চাও, দুর্বল হয়ো না ও এ কথা বলো না যে, আমি অমুক অমুক কাজ করলে অবস্থা এমন এমন হতো। বরং একথা বল যে, আল্লাহ সিদ্ধান্ত করে ফেলেছেন এবং তিনি যা চান তা তিনি করেন।”

আরো একখানি নির্ভরযোগ্য হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

“বান্দার জন্য আল্লাহ যে ফয়সালা করেন তা তার জন্য কল্যাণকর।”

শাইখুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়াকে পাপ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলো, এটা কি কারো জন্য উপকারী? তিনি বললেন “হ্যাঁ, তবে এ শর্তে যে, পাপের পর লজ্জিত, অনুতপ্ত, ক্ষমা প্রার্থনাকারী ও মানসিকভাবে চরম অনুতপ্ত হতে হবে।”

মহান আল্লাহ বলেন-

“এবং এমনও হতে পারে যে, তোমরা যা অপছন্দ কর তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর আর এমনও হতে পারে যে, তোমরা যা পছন্দ কর তা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর এবং আল্লাহ জানেন আর তোমরা জান না।” (২-সূরা বাকারা: আয়াত-২১৬)

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
Back to top button