হাদিস ও হাদিসের জ্ঞানসমূহ

হাদীস: আল্লাহ তা‘আলা রেহেমের (মাতৃগর্ভের জন্যে একজন মালাইকাহ নির্ধারণ করেছেন। তিনি (পর্যায়ক্রমে) বলতে থাকেন, হে রব! এখন বীর্য-আকৃতিতে আছে। হে রব! এখন জমাট রক্তে পরিণত হয়েছে। হে রব! এখন মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা যখন তার সৃষ্টি পূর্ণ করতে চান, তখন জিজ্ঞেস করেন, পুরুষ, না স্ত্রী? সৌভাগ্যবান, না দুর্ভাগা? রিযিক ও বয়স কত? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তার মাতৃগর্ভে থাকতেই তা লিখে দেওয়া হয়।”

আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফু‘ হিসেবে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ তা‘আলা মাতৃগর্ভের জন্যে একজন মালাইকাহ নির্ধারণ করেছেন। তিনি (পর্যায়ক্রমে) বলতে থাকেন, হে রব! এখন বীর্য-আকৃতিতে আছে। হে রব! এখন জমাট রক্তে পরিণত হয়েছে। হে রব! এখন মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা যখন তার সৃষ্টি পূর্ণ করতে চান, তখন জিজ্ঞেস করেন, পুরুষ, না স্ত্রী? সৌভাগ্যবান, না দুর্ভাগা? রিযিক ও বয়স কত? (আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন), তার মাতৃগর্ভে থাকতেই তা লিখে দেওয়া হয়।”

[সহীহ] – [মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।]

ব্যাখ্যা: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহ তা‘আলা মাতৃগর্ভের জন্যে একজন ফিরিশতা নির্ধারণ করেছেন।” অর্থাৎ ফিরিশতাদের মধ্যে এমন একজন ফিরিশতা নির্ধারণ করেছেন, যিনি মাতৃগর্ভের বিষয়টি দেখা শোনা করেন। মাতৃগর্ভ হলো মায়ের পেটে সন্তান জন্মের স্থান। নির্ধারিত ফিরিশতাটি (পর্যায়ক্রমে) বলতে থাকেন, “হে আমার রব! সন্তানটি এখন বীর্য আকৃতিতে আছে।” অর্থাৎ হে আমার রব! এটি এখন নুতফা, নুতফা হলো পুরুষের বীর্য। এরপর আবারও তিনি একই ধরনের কথা বলেন, “হে আমার রব! এখন জমাট রক্তে পরিণত হয়েছে।” অর্থাৎ হে আমার রব! এটি এখন আলাকায় পরিণত হয়েছে, আর তা হলো জমাট রক্ত। তারপর সে বলেন, “হে আমার রব! এখন মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়েছে।” অর্থাৎ হে আমার রব! এটি এখন মুযগায় পরিণত হয়েছে। আর মুযগা অর্থ, মাংসপিণ্ড। অপর একটি বর্ণনায় বর্ণিত, এ ধরনের প্রতিটি পরিবর্তনের মাঝখানের সময়ের ব্যবধান হলো চল্লিশ দিন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহ তা‘আলা যখন তার সৃষ্টি পূর্ণ করতে চান” অর্থাৎ, মাংসপিণ্ডকে মানুষে পরিণত করতে চান, অর্থাৎ মযগাকে চূড়ান্ত রূপ দিতে চান, যা তার সর্বশেষ রূপান্তর। আর এখানে ক্বাযা দ্বারা উদ্দেশ্য সৃষ্টির কর্ম ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাওয়া, আর তা হলো একশত বিশ দিন পর তার মধ্যে রুহ দেওয়া। যেমনটি অন্য বর্ণনায় স্পষ্ট করেছেন। তখন ফিরিশতা জিজ্ঞেস করে বলেন, হে আমার রব! পুরুষ, না স্ত্রী? অর্থাৎ সে কি পুরুষ, তাহলে তাকে পুরুষ লিখব, অন্যথায় মহিলা। তারপর বলেন, “সৌভাগ্যবান, না দুর্ভাগা?” অর্থাৎ সেকি দূর্ভাগা জাহান্নামী না সৌভাগ্যবান জান্নাতী, যাতে জান্নাতী লিপিবদ্ধ করব। “তার রিযিক কী?” অর্থাৎ তার রিযিক বেশি নাকি কম এবং তার পরিমাণ কত? তার বয়স কত? অর্থাৎ তার বয়স কি বেশি না কম? “তার মাতৃগর্ভে থাকতেই তা লিখে দেওয়া হয়।” অর্থাৎ, উল্লিখিত বিষয়গুলো সন্তান তার মায়ের পেটে থাকতেই আল্লাহর নির্দেশে লিপিবদ্ধ করা করা হয়।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button