হাদিস ও হাদিসের জ্ঞানসমূহ

হাদীস: ‘হে আমীরুল মু’মেনীন! আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীকে বলেন, “তুমি ক্ষমাশীলতার পথ অবলম্বন কর। ভাল কাজের আদেশ প্রদান কর এবং মূর্খদিগকে পরিহার করে চল।” (সূরা আল আ’রাফ, আয়াত: ১৯৮) আর এ একজন মূর্খ।’ আল্লাহর কসম! যখন তিনি এই আয়াত পাঠ করলেন, তখন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একটুকুও আগে বাড়লেন না। আর তিনি আল্লাহর কিতাবের কাছে (অর্থাৎ, তাঁর নির্দেশ শুনে) সাথে সাথে থেমে যেতেন।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন যে, উয়াইনাহ ইবনে হিসন এলেন এবং তাঁর ভাতিজা হুর ইবনে কাইসের কাছে অবস্থান করলেন। এই (হুর) উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর খেলাফত কালে ঐ লোকগুলির মধ্যে একজন ছিলেন যাদেরকে তিনি তাঁর নিকটে রাখতেন। আর কুরআন বিশারদগণ বয়স্ক হন অথবা যুবক দল তাঁরা উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর সভাষদ ও পরামর্শদাতা ছিলেন। উয়াইনাহ তাঁর ভাতিজাকে বললেন, ‘হে আমার ভ্রাতুষ্পুত্র! এই খলীফার কাছে তোমার বিশেষ সম্মান রয়েছে। তাই তুমি আমার জন্যে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার অনুমতি চাও।’ ফলে তিনি অনুমতি চাইলেন। সুতরাং উমার তাকে অনুমতি দিলেন। অতঃপর যখন উয়াইনাহ ভিতরে প্রবেশ করলেন, তখন উমার (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু)কে বললেন, ‘হে ইবনে খাত্তাব! আল্লাহর কসম! আপনি আমাদেরকে পর্যাপ্ত দান দেন না এবং আমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করেন না!’ (এ কথা শুনে) উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাগান্বিত হলেন। এমনকি তাকে মারতে উদ্যত হলেন। তখন হুর্র তাঁকে বললেন, ‘হে আমীরুল মু’মেনীন! আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীকে বলেন, “তুমি ক্ষমাশীলতার পথ অবলম্বন কর। ভাল কাজের আদেশ প্রদান কর এবং মূর্খদিগকে পরিহার করে চল।” (সূরা আল আ’রাফ, আয়াত: ১৯৮) আর এ একজন মূর্খ।’ আল্লাহর কসম! যখন তিনি (হুর্র) এই আয়াত পাঠ করলেন, তখন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একটুকুও আগে বাড়লেন না। আর তিনি আল্লাহর কিতাবের কাছে (অর্থাৎ, তাঁর নির্দেশ শুনে) তৎক্ষণাত থেমে যেতেন।

[সহীহ] – [এটি বুখারী বর্ণনা করেছেন।]

ব্যাখ্যা: বিশিষ্ট সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা আমীরুল মু‘মিনীন উমার উবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনুহর ঘটনা আমাদের বর্ণনা করেন। উয়াইনাহ ইবন হিসন যিনি তার সম্প্রদায়ের বয়স্কদের একজন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট আসেন। তিনি প্রথমেই কটু বাক্য,গাল মন্দ ও অশালীন কথা বলেন। তারপর এ বলে তাকে ভৎসণা করেন যে, তুমি আমাদের বেশি বেশি দান করো না এবং আমাদের মাঝে ইনসাফ করো না। তার কথায় তিনি এতো বেশি ক্ষুব্ধ হলেন যেন তিনি তাকে মারার উপক্রম। কিন্তু কতক ক্বারী যাদের মধ্যে রয়েছেন উয়াইনাহর ভাই হুর ইবন কায়েস তারা খলীফাকে সম্বোধন করে বললেন, হে আমীরুল মু‘মীনিন, আল্লাহ তা‘আলা তার নবীকে বলেছেন, “তুমি ক্ষমাশীলতার পথ অবলম্বন কর। ভাল কাজের আদেশ প্রদান কর এবং মূর্খদিগকে পরিহার করে চল।” (সূরা আল আ’রাফ, আয়াত: ১৯৮) আর এতো মূর্খদের একজন।’ তখন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একটুকুও আগে বাড়লেন না। কারণ, তিনি আল্লাহর কিতাবের কাছে (অর্থাৎ, তাঁর নির্দেশ শুনে) সঙ্গে-সঙ্গে থেমে যেতেন। তার কানের সামনে আয়াতটির তিলাওয়াত শোনে তিনি সাথে সাথে থেমে গেলেন তাকে কোন প্রকার মারধর করলেন না। আল্লাহর কিতাবের সামনে এটিই ছিল সাহাবীগনের শিষ্টাচার। তারা তার আগে কখনো বাড়তেন না। যদি তাদের বলা হতো এটি আল্লাহর বাণী তাহলো তারা যে অবস্থায় থাকতেন সে অবস্থায় থেমে যেতেন।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button