প্রশ্ন : জনৈক ইসলামবিদ্বেষী লেখক লিখেছেন, রাসূল (ছাঃ) মানুষের কথায় সন্দেহ করে তার সবচেয়ে প্রিয়তমা স্ত্রী ও খলীফা আবুবকরের মত মানুষের সন্তান আয়েশার প্রতি যে আচরণ করেছেন তা কি নবীসুলভ বা অনুকরণীয়? অহী যদি না আসতো তবে কি আয়েশা বঞ্চনার শিকার হ’তেন না? বর্তমানে তো অহী আসবে না। তাহ’লে একজন সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে যদি উক্ত ঘটনার অবতারণা হয়, তবে সে কি করবে? তার জন্য নবী (ছাঃ) কী আদর্শ রেখে গেছেন? একজন মানুষ হিসাবে কী রাস্তা দেখিয়ে গেলেন? নবীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে সে কি তার স্ত্রীকে তালাক দেবে না? এভাবেই কি তালাকের অভিশাপ সমাজকে কলুষিত করছে না? উক্ত প্রশ্নের জবাব কি?
রাসূল (ছাঃ) আয়েশা (রাঃ)-এর প্রতি সন্দেহের বশে নয়, বরং মুনাফিকদের অপপ্রচার দেখে এবং কিছু ছাহাবীর পরামর্শে অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাঁকে পিত্রালয়ে
পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন অহী প্রাপ্তির মাধ্যমেই তাঁর পবিত্রতার বিষয়টি নিশ্চিত হোক (ইবনু হাজার, ফাৎহুল বারী ৮/৪৮০)।
এজন্য রাসূল (ছাঃ) আয়েশা (রাঃ)-কে বলেছিলেন, হে আয়েশা! তোমার সম্পর্কে এ ধরনের কথা
আমার কাছে পৌঁছেছে। তুমি নির্দোষ হ’লে আল্লাহ অবশ্যই তোমার নির্দোষিতা ঘোষণা করবেন। আর যদি তুমি কোন গুনাহে জড়িয়ে গিয়ে থাক, তাহ’লে আল্লাহর কাছে তওবা ও ইস্তিগফার কর। কেননা বান্দা নিজের পাপ স্বীকার করে তওবা করলে আল্লাহ তওবা কবুল করেন (বুখারী হা/২৬৬১; মুসলিম হা/১৬৯৫; মিশকাত হা/৩৫৬২)।
আর রাসূল (ছাঃ) তাঁর স্ত্রীর ব্যাপারে সন্দেহ করেননি বলেই আলী ও বারীরা (রাঃ)-এর সাথে পরামর্শ শেষে খুৎবায় দাঁড়িয়ে বলেন, আমার পরিবারকে কেন্দ্র করে যে লোক আমাকে জ্বালাতন করেছে, তার মুকাবিলায় কে প্রতিকার করবে? আল্লাহর
কসম, আমি তো আমার স্ত্রী সম্পর্কে ভালো ছাড়া অন্য কিছু জানি না। আর এমন ব্যক্তিকে জড়িয়ে তারা কথা তুলেছে, যার সম্পর্কে ভালো ছাড়া অন্য কিছু আমি জানি না। আর সে তো আমার সাথে ছাড়া আমার ঘরে কখনও প্রবেশ করত না (বুখারী হা/২৬৬১; মুসলিম হা/১৬৯৫)।
দুঃখজনক হ’ল, নবী বিদ্বেষীরা এমন রাসূলের বিরুদ্ধে অপবাদ দেয় যে রাসূল কখনো স্ত্রীদের প্রহার কিংবা গালি-গালাজ পর্যন্ত করেননি। আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) এক জিহাদের ময়দান ব্যতীত নিজ হাত দিয়ে কাউকে মারেননি, এমনকি তাঁর স্ত্রী ও খাদেমদেরকেও না (মুসলিম হা/২৩২৮; মিশকাত হা/৫৮১৮)।
সূত্র: মাসিক আত-তাহরীক।