প্রশ্নোত্তরে ফিকহুল ইবাদাত

প্রশ্ন : বাচ্চাদের খাৎনা করার সময় আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে খাওয়ার অনুষ্ঠান করা যাবে কি?

উত্তর : নবী করীম (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগে খাৎনার জন্য কোন অনুষ্ঠান করার প্রমাণ ছহীহ হাদীছে পাওয়া যায় না।

ওছমান বিন আবুল ‘আছ ছাক্বাফী (রাঃ)-কে একটি খাৎনার অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়া হ’লে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন,‘আমরা
রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় খাৎনার অনুষ্ঠানে যেতাম না এবং এজন্য আমাদের দাওয়াতও দেওয়া হ’ত না (ইবনু কুদামাহ, আল-মুগনী ৭/২৮৬)

তবে এক মুসলিমের উপর অন্য মুসলিমের জন্য ছয়টি কর্তব্য রয়েছে। যার অন্যতম হ’ল যখন সে দাওয়াত দেয়, তা কবুল করা’ (তিরমিযী হা/২৭৩৭ প্রভৃতি; মিশকাত হা/৪৬৩০)

উক্ত হাদীছের আলোকে পরবর্তী বিদ্বানগণ খাৎনা বা অনুরূপ শরী‘আতসম্মত উপলক্ষে নিকটাত্মীয়দের দাওয়াত দিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এতে আড়ম্বর প্রকাশ করা, আলোকসজ্জা করা বা অপব্যয় করা ইত্যাদি পরিহার করতে হবে। ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ‘খাৎনা উপলক্ষে দাওয়াত করা জায়েয। যার ইচ্ছা হয় করবে, আর যার ইচ্ছা বর্জন করবে’ (মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ৩২/২০৬)

ইবনু কুদামাহ বলেন, ‘বিবাহের ওয়ালীমা ছাড়া খাৎনা ও অন্যান্য সকল দাওয়াতের বিধান হ’ল তা মুস্তাহাব। কেননা এতে খাদ্য খাওয়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। আর এই ধরনের দাওয়াত গ্রহণ করাও মুস্তাহাব। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলকে খাৎনা
অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়া হ’লে তিনি কবুল করে খাবার গ্রহণ করেন’ (ইবনু কুদামাহ, আল-মুগনী ৭/২৮৬; মারদাভী, আল-ইনছাফ ৮/৩২০-২১)

ইমাম শাফেঈ ও ইমাম নববী (রহঃ) প্রমুখ খাৎনার দাওয়াতকে বৈধ বলে উল্লেখ করেছেন (কিতাবুল উম্ম ৬/১৯৫; রাওযাতুত ত্বালেবীন ৭/৩৩৩)

শায়খ বিন বায সহ সমকালীন বিদ্বানগণ বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠানে দোষ নেই। কেননা খাৎনা শরী‘আতসম্মত বিষয়সমূহের অন্যতম। আর আল্লাহর শুকরিয়ার্থে এতে খাবার প্রস্ত্তত করায় কোন বাধা নেই’ (ফাতাওয়া আল-কাবীর; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৫/১৪২)

তবে এজন্য বাড়াবাড়ি করা যাবে না। যেমন সুন্নাতে খাৎনা অনুষ্ঠানের জন্য তোরণ নির্মাণ, কার্ড ছাপিয়ে দাওয়াত প্রদান, উপহার সামগ্রী প্রদান, কেউ দাওয়াতে বাদ পড়লে সম্পর্কচ্ছেদ ইত্যাদি কুসংস্কার সমূহ অবশ্যই বর্জন করতে হবে।

সূত্র: মাসিক আত-তাহরীক।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Mahmud Ibn Shahid Ullah

"যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ❛❛যখন দেখবেন বাত্বিল আপনার উপর সন্তুষ্ট, তখন বুঝে নিবেন আপনি ক্রমের হক্ব থেকে বক্রপথে ধবিত হচ্ছেন।❞
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button