তাওহীদ

আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর আশ্রয়-নিরাপত্তা প্রার্থনা করার হুকুম কী?

প্রশ্নঃ হুযাইফা রাদিয়াল্লাহ আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: «لَا تَقُولُوا مَا شَاءَ اللَّهُ، وَشَاءَ فُلَانٌ، وَلَكِنْ قُولُوا مَا شَاءَ اللَّهُ ثُمَّ شَاءَ فُلَانٌ»‘‘তোমরা বলবে না যে, আল্লাহ যা ইচ্ছা করেছেন এবং অমুকে যা চেয়েছে তাই হয়েছে। বরং বলবে যে, আল্লাহ যা ইচ্ছা করেছেন অতঃপর অমুকে যা কামনা করেছে (করতে চেয়েছে) তাই হয়েছে’’। (আবু দাউদ, নং ৪৯৮০, আহমদ ৫/৩৮৪)  

এ বিষয়ে ইব্রাহীম আন-নাখায়ী বলেন যে, আমি আল্লাহর আশ্রয় চাচ্ছি এবং আপনারও আশ্রয় চাচ্ছি’ বলা মাকরুহ। তবে জায়েয হবে এভাবে বললে ‘আল্লাহ অতঃপর আপনার আশ্রয় চাই। তিনি বলেন, সবাই যেন বলে, ‘যদি আল্লাহ অতঃপর অমুকের সাহায্য না পেলে মুক্তি পেতাম না’’। কিন্তু এ কথার মধ্যে আল্লাহর সাথে ‘এবং’ সংযুক্ত করে অন্য কিছুই উল্লেখ করা যাবে না। (আব্দুর রাযযাক এবং ইবনে আবী দুনিয়া)।

ঊপরোক্ত বিষয় বস্তুর ব্যাখ্যা কী এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর আশ্রয়-নিরাপত্তা প্রার্থনা করার হুকুম কী?

উত্তর: আরবী ভাষায় ‘‘واو’’ অক্ষর দ্বারা পূর্বা-পর বিষয়কে একত্রিত করা হয়ে থাকে, কিংবা একটি আগে অপরটা পরে তাও বুঝায় না, বরং ওয়াও (এবং) দ্বারা পূর্বা-পর দুটোকেই একসাথে বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আর সৃষ্টিকে স্রষ্টার সমপর্যায় বলা, বিশ্বাস করা শির্ক বা অংশীবাদীতা। কিন্তু (ثم) সুম্মা বা ‘অতঃপর’ শব্দ দ্বারা পূর্বা-পর বিষয়কে সমপর্যায়ের বুঝায় না বরং পূর্বাপর বিষয়ের মধ্যে পার্থক্য বা স্তর বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অতএব আরবী (ثم) সুম্মা বা ‘অতঃপর’ শব্দ ব্যাবহার করা দোষনীয় নয়; কেননা তাদ্বারা পার্থক্য বা স্তর বুঝানো হয়ে থাকে এবং পরের বিষয়কে পূর্বের বিষয়ের অনুগত প্রমাণ করে।

যে সব বিষয়ের সমাধান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো পক্ষে সম্ভব নয় সে সব বিষয়ে অন্যের কাছে আশ্রয়-নিরাপত্তার আবেদন নিবেদন জানানো বড় শির্কের অর্ন্তভুক্ত। তবে আল্লাহর সৃষ্ট জীবনের পক্ষে যে সব বিষয়ে সমাধান করা অসম্ভব নয় সে বিষয়ে তাদের সাহায্য চাওয়া জায়েয। কিন্তু আহ্বান-আবদার সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে যেন আল্লাহ ও বান্দার মাঝে শির্ক না হয়ে যায়। আর হ্যাঁ যে ব্যক্তি জীবিত ও উপস্থিত সে কোনো কিছু করতে সক্ষম, পক্ষান্তরে যারা মৃত তাদেরকে ডেকে আবেদন-নিবেদন জানালে কোনোই লাভ হবে না। কেননা মৃতরা সাড়া দিতে অক্ষম এবং কারোই কোনো কল্যাণ কিংবা অকল্যাণ করার সাধ্য তাদের নেই।

অতএব তাদের সান্নিধ্যে কোনো কিছু পেশ করা কিংবা উপস্থাপন করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। 

সূত্রঃ প্রশ্নোত্তরে তাওহীদ
লেখকঃ ড. ইবরাহীম ইবন সালেহ আল-খুদ্বায়রী

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Mahmud Ibn Shahid Ullah

"যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ❛❛যখন দেখবেন বাত্বিল আপনার উপর সন্তুষ্ট, তখন বুঝে নিবেন আপনি ক্রমের হক্ব থেকে বক্রপথে ধবিত হচ্ছেন।❞
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button