তাওহীদ

একবিংশ শতাব্দীই শেষ শতাব্দী এ বিশ্বাস পোষণ করার হুকুম কী? সহস্রাব্দ অথবা এ ধরনের অন্যান্য বর্ষবরণ উৎসবের হুকুম কী?

প্রশ্নঃ একবিংশ শতাব্দীই শেষ শতাব্দী এ বিশ্বাস পোষণ করার হুকুম কী? সহস্রাব্দ অথবা এ ধরনের অন্যান্য বর্ষবরণ উৎসবের হুকুম কী?

 উত্তর: পৃথিবীর শেষ বলতে ক্বিয়ামত সংঘটিত হওয়া বুঝায়, সুতরাং কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ গায়েবী ব্যাপারে। এর খবর একমাত্র আল্লাহই জানেন, তবে তা নিকটবর্তী। মহান আল্লাহ বলেন:

﴿ يَسۡ‍َٔلُكَ ٱلنَّاسُ عَنِ ٱلسَّاعَةِۖ قُلۡ إِنَّمَا عِلۡمُهَا عِندَ ٱللَّهِۚ وَمَا يُدۡرِيكَ لَعَلَّ ٱلسَّاعَةَ تَكُونُ قَرِيبًا ٦٣ ﴾ [الاحزاب: ٦٣]  

‘‘লোকেরা আপনাকে ক্বিয়ামত (দিবস) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, বলুন: সেটার খবর কেবল আল্লাহই জানেন। তা আপনি কী করে জানবেন? সম্ভবত ক্বিয়ামত শীঘ্রই সংঘটিত হয়ে যাবে’’। (সূরা আল-আহযাব:৬৩)

মহান আল্লাহ আরো বলেন: 

﴿ يَسۡ‍َٔلُونَكَ عَنِ ٱلسَّاعَةِ أَيَّانَ مُرۡسَىٰهَاۖ قُلۡ إِنَّمَا عِلۡمُهَا عِندَ رَبِّيۖ لَا يُجَلِّيهَا لِوَقۡتِهَآ إِلَّا هُوَۚ ثَقُلَتۡ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ لَا تَأۡتِيكُمۡ إِلَّا بَغۡتَةٗۗ ﴾ [الاعراف: ١٨٧]  

‘‘তারা আপনাকে প্রশ্ন করে ক্বিয়ামত কখন ঘটবে? বলুন: ‘এ বিষয়ের প্রকৃত জ্ঞান শুধু আমার প্রতিপালকেরই আছে। একমাত্র তিনিই যথাসময়ে উহা প্রকাশ করবেন। তখন আকাশ ও ভুমণ্ডলে এক ভয়াবহ অবস্থার উদ্ভব ঘটবে। আকস্মিকভাবেই তা তোমাদের সম্মুখে আসবে’’। (সূরা আল-আ‘রাফ: ১৮৭)

অতএব, দুনিয়ার আয়ুকালকে ঘন্টা বা দুই হাজার বছর নির্ধারিত করে দেওয়া জায়েয হবে না। কেননা দুনিয়ার আয়ূকাল গায়েবী বিষয় আর তা মহান আল্লাহ ছাড়া কেউই জানে না।

দুই সহস্র বছর কিংবা নতুন কোনো শতাব্দীকে কেন্দ্র করে উৎসব উদযাপন করা সম্পুর্ণ অবৈধ কাজ। ইয়াহূদী ও খৃষ্টান সম্প্রদায় সহস্রাব্দের শেষে অথবা সূচনার সাথে মনগড়া ঘটনা দুর্ঘটনার সম্পর্কে জুড়ে দেয়, আর দৃঢ়তার সাথেই তাদের পূর্বাভাষ বাস্তবেও সংঘটিত হওয়ার কথা প্রচার করে বেড়ায়।

সুতরাং মুসলিমদের অবশ্যই কর্তব্য হচ্ছে যে; ঐ ধরনের তথাকথিত মনগড়া বিভ্রান্তিকর প্রপাগাণ্ডায় কর্ণপাত না করা বরং সকলকে আল্লাহর কিতাব ও তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাতকে যথাযথভাবে আঁকড়ে ধরতে হবে। সাথে সথে ইয়াহূদী, খৃষ্টানদের সর্ব প্রকার বিভ্রান্তির ব্যাপারে সতর্কতাও অবলম্বন করতে হবে। কেননা তারা মানুষকে ঈমানের পরিপন্থী কুফরী কাজে উদ্ভুদ্ধ করে এবং রহিত ধর্মসমূহকে ইসলামের সাথে একত্রিকরণের ছদ্মাবরণে দীনে হক পরিত্যাগ করানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত। আর তাই মুসলিমদেরকে ঐ সব বেদীন সম্প্রদায়ের রূপধারণ, তাদের ঈদ উপাসনায় যোগদান করতে কিংবা তদনুরূপ ঈদ-উৎসব পালন করতেও নিষেধ করা হয়েছে। 

অতএব তাদের ঈদ-উপাসনায় কোনো প্রকার সহযোগিতা প্রদান করা, এমনকি ওগুলোকে আনন্দ উৎসবের পর্ব হিসাবে স্বীকার করা এবং ঐ উপলক্ষে তাদেরকে অভিনন্দিত করা আমাদের জন্য নাজায়েয বা অবৈধ। বরং আমাদের দীন ইসলাম নিয়েই আমাদের গর্ব করা উচিৎ। আর এ দীনের সুউচ্চ মর্যাদা ও সঠিক ধারণা সবার কাছে তুলে ধরা এবং এদিকে দাওয়াত দেওয়া আমাদেরই একান্ত কর্তব্য।

সূত্রঃ প্রশ্নোত্তরে তাওহীদ
লেখকঃ ড. ইবরাহীম ইবন সালেহ আল-খুদ্বায়রী

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Mahmud Ibn Shahid Ullah

"যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ❛❛যখন দেখবেন বাত্বিল আপনার উপর সন্তুষ্ট, তখন বুঝে নিবেন আপনি ক্রমের হক্ব থেকে বক্রপথে ধবিত হচ্ছেন।❞
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button