দু'আ, যিকির ও ঝাড়ফুঁক

প্রশ্ন : কাউকে দান করার পর তার নিকটে দো‘আ চাওয়া যাবে কি?

উত্তর : কাউকে কোন কিছু দান করার পর দো‘আ চাওয়া অনুচিৎ। কেননা এটি দানের বিনিময়ে
প্রতিদান চাওয়ার মত হয়ে যায়। অথচ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘ক্বিয়ামতের দিন যে সাত শ্রেণীর লোক আল্লাহর ছায়ার নিচে আশ্রয় পাবে, তাদের অন্যতম হ’ল, যে ব্যক্তি ডান হাতে দান করে, অথচ বাম হাত টের পায় না’ (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/৭০১)

অন্যদিকে জান্নাতী বান্দাদের দুনিয়াবী বৈশিষ্ট্য বলতে গিয়ে আল্লাহ বলেন,
‘তারা কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য মিসকীন, ইয়াতীম ও কয়েদীদের
খাদ্য দান করে থাকে’। ‘তারা বলে, আমরা কেবল আল্লাহর চেহারা অন্বেষণের জন্য
তোমাদের খাদ্য দান করে থাকি। আমরা তোমাদের নিকট থেকে কোন প্রতিদান ও
কৃতজ্ঞতা কামনা করি না’ (দাহর ৭৬/৮-৯)

তবে যাকে বা যে প্রতিষ্ঠানে ছাদাক্বা করা হ’ল, তাদের উচিৎ দানকারীর জন্য দো‘আ করা (তওবাহ ৯/১০৩)
রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তোমাদের কোন উপকার করল, তোমরা তাকে উত্তম
বিনিময় প্রদান কর। সক্ষম না হ’লে অন্ততঃপক্ষে তার জন্য দো‘আ কর। যাতে সে
বুঝতে পারে যে, তোমরা তাকে উপযুক্ত উপঢৌকন প্রদান করেছ’ (আবুদাঊদ হা/৫১০৯; মিশকাত হা/১৯৪৩)। যেমন রাসূল (ছাঃ) দো‘আ করে বলতেন, বা-রাকাল্লা-হু লাকা ফী আহলিকা ওয়া মা-লিকা’ অথবা বহুবচনে ‘কুম’ (আল্লাহ আপনার জন্য আপনার পরিবারে ও সম্পদে বরকত দান করুন)’ (বুখারী হা/৩৭৮০; ইবনু মাজাহ হা/১৯০৬-০৭)

আর
মুমিনগণ পরস্পরের নিকট দো‘আ চাওয়া জায়েয। যেমন ছাফওয়ান (রাঃ) বলেন, আমি
শামে গেলাম আবুদ্দারদা (রাঃ)-এর সাক্ষাতের জন্য। কিন্তু তিনি ঐসময় বাড়িতে
ছিলেন না। তখন উম্মুদ্দারদা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি হজ্জে যাবে? আমি
বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, আমাদের জন্য কল্যাণের দো‘আ করো। কেননা
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলতেন, ‘কোন মুসলমান কারু জন্য তার পিছনে খালেছ মনে দো‘আ
করলে, সে দো‘আ কবুল হয়। সেখানে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত থাকে। যখনই ঐ ব্যক্তি
তার ভাইয়ের জন্য দো‘আ করে, তখনই উক্ত ফেরেশতা বলে ‘আমীন’। তোমার জন্যও
অনুরূপ হৌক’ (মুসলিম হা/২৭৩৩)। এ ব্যাপারে ইমাম নববী মুসলিম উম্মাহর ইজমা‘ উদ্ধৃত করেছেন (নববী, আল-আযকার ‘উত্তম ব্যক্তির নিকট দো‘আ চাওয়া’ অনুচ্ছেদ)
তবে যদি এই দো‘আ কোন মৃত ব্যক্তির নিকট চাওয়া হয়, তবে সেটি হারাম হবে। আর
যদি কোন জীবিত ব্যক্তির নিকট দো‘আ চাওয়ার মধ্যে তার উপরেই ভরসা করা হয়, তবে
সেটাও নিষিদ্ধ। যদি এই বিশ্বাস করা হয় যে, তার দো‘আ কবুল হবেই, সেটাও
নিষিদ্ধ। সর্বাবস্থায় ভরসা ও প্রার্থনা কেবলমাত্র আল্লাহর নিকটেই করতে হবে।

সূত্র: মাসিক আত-তাহরীক।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Mahmud Ibn Shahid Ullah

"যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ❛❛যখন দেখবেন বাত্বিল আপনার উপর সন্তুষ্ট, তখন বুঝে নিবেন আপনি ক্রমের হক্ব থেকে বক্রপথে ধবিত হচ্ছেন।❞
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button