তাওহীদ

জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ দিন?

প্রশ্নঃ জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ দিন?

উত্তর: মহান আল্লাহ জান্নাত এবং জাহান্নাম প্রস্তুত করে রেখেছেন বান্দাদেরকে কর্মফল ভোগ করাবার জন্যে।  সুতরাং জান্নাত হচ্ছে শান্তির ঘর এবং মর্যাদাময় আবাসস্থল। আর এখানে আল্লাহর প্রিয় মোমেন বান্দাগণ (আউলিয়াগণ) শান্তি-সুখে বাস করবে। জান্নাতের প্রশান্তি এমনতর যা কোনো চর্মচোখ দেখে নি, কোনো কান শ্রবণ করে নি এবং কোনো মানুষের হৃদয় অনুভব করে নি। জান্নাতের সর্বোচ্চ আনন্দময় প্রশান্তি হচ্ছে জান্নাতবাসীরা তাদের মহান প্রতিপালক আল্লাহর দর্শন লাভ করবে।

সর্বোচ্চ বরকতময় আল্লাহ বলেন:

﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ أُوْلَٰٓئِكَ هُمۡ خَيۡرُ ٱلۡبَرِيَّةِ ٧ جَزَآؤُهُمۡ عِندَ رَبِّهِمۡ جَنَّٰتُ عَدۡنٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدٗاۖ رَّضِيَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُواْ عَنۡهُۚ ذَٰلِكَ لِمَنۡ خَشِيَ رَبَّهُۥ ٨ ﴾ [البينة: ٧،  ٨]  

‘‘(৭)যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে তারাই সৃষ্টির মধ্যে উত্তম। (৮)তাদের প্রতিপালকের কাছে রয়েছে তাদের জন্য পুরস্কার স্থায়ী জান্নাত, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহমান। সেখানেই তাদের স্থায়ী নিবাস। আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও সন্তুষ্ট তাঁর প্রতি; আর তা তারই জন্যে, যে তার রবকে ভয় করে’’। (সূরা আল-বায়্যিনাহ)

মহান আল্লাহ আরো বলেন:  

﴿ فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡسٞ مَّآ أُخۡفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعۡيُنٖ جَزَآءَۢ بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٧ ﴾ [السجدة: ١٧]  

‘‘আর কেউই জানে না তাদের জন্য নয়ন-প্রীতিকর কি লুকায়িত রাখা হয়েছে, তাদের কৃতকর্মের পুরস্কারস্বরূপ’’। (সূরা আস-সাজদাহ’ আয়াত নং ১৭)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরো বলেন:

 ﴿ وُجُوهٞ يَوۡمَئِذٖ نَّاضِرَةٌ ٢٢ إِلَىٰ رَبِّهَا نَاظِرَةٞ ٢٣ ﴾ [القيامة: ٢٢،  ٢٣]  

‘‘(২২) সে দিন কোনো কোনো মুখমণ্ডল উজ্জল হবে, (২৩) তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে’’। (সূরা আল -ক্বিয়ামাহ)

আর জাহান্নাম হচ্ছে আযাব, অপমান ও লাঞ্ছনার গৃহ। আল্লাহ তাঁর শত্রু কাফের সম্প্রদায়ের জন্য তা প্রস্তুত রেখেছেন। মহান আল্লাহ বলেন: 

﴿ وَٱتَّقُواْ ٱلنَّارَ ٱلَّتِيٓ أُعِدَّتۡ لِلۡكَٰفِرِينَ ١٣١ ﴾ [ال عمران: ١٣١]  

 ‘‘তোমরা সে অগ্নিকে ভয় কর যা কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে’’। (আলে ইমরান: ১৩১) 

জাহান্নামের মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের আযাব হবে; মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:

 ﴿إِنَّآ أَعۡتَدۡنَا لِلظَّٰلِمِينَ نَارًا أَحَاطَ بِهِمۡ سُرَادِقُهَاۚ وَإِن يَسۡتَغِيثُواْ يُغَاثُواْ بِمَآءٖ كَٱلۡمُهۡلِ يَشۡوِي ٱلۡوُجُوهَۚ بِئۡسَ ٱلشَّرَابُ وَسَآءَتۡ مُرۡتَفَقًا ٢٩ ﴾ [الكهف: ٢٩]  

‘‘আমরা সীমালংঘনকারীদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি অগ্নি, যার দেয়াল তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখবে। তারা (পিপাসা নিবারনের জন্য) পানির জন্য আর্ত চিৎকার করবে, কিন্তু তাদেরকে দেওয়া হবে গলিত পদার্থের ন্যায় পানীয়, যা তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে। তা কত নিকৃষ্ট পানীয় এবং তা কত নিকৃষ্ট আশ্রয়স্থল!’’ (সূরা আল-কাহাফ: ২৯)

সর্বশেষ কথা হচ্ছে যে, জান্নাত এবং জাহান্নাম প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা তিনি যেন আমাদেরকে জান্নাত দান করেন এবং জাহান্নাম হতে রক্ষা করেন।

সূত্রঃ প্রশ্নোত্তরে তাওহীদ
লেখকঃ ড. ইবরাহীম ইবন সালেহ আল-খুদ্বায়রী

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Mahmud Ibn Shahid Ullah

"যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ❛❛যখন দেখবেন বাত্বিল আপনার উপর সন্তুষ্ট, তখন বুঝে নিবেন আপনি ক্রমের হক্ব থেকে বক্রপথে ধবিত হচ্ছেন।❞
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button