বে-নামাযীর তওবা
প্রশ্ন: আমি আমার জিন্দেগির একটা দীর্ঘসময় নামায আদায় করিনি। আমি আল্লাহ্র কাছে তওবা করে গত দুই বছর ধরে নিয়মিত নামায আদায় করছি। জীবনের যে দীর্ঘসময় নামায আদায় করিনি সেটার কী হুকুম হবে?
উত্তর
আলহামদুলিল্লাহ।
আপনি আপনার উপর আল্লাহ্র নেয়ামতের কথা স্মরণ করুন যে, আপনি বে-নামাযী ছিলেন; কিন্তু আল্লাহ্ আপনাকে ইসলামের দিকে ফিরিয়ে এনেছেন। সুতরাং ওয়াক্তমত নিয়মিত নামাযগুলো আদায় করুন। বেশি বেশি নফল নামায আদায় করুন; যাতে করে এ নফল নামাযগুলো আপনার ছুটে যাওয়া ফরয নামাযের প্রতিকার হতে পারে। যেমনটি এসেছে হুরাইছ বিন ক্বাবিসা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে তিনি বলেন, আমি মদিনায় আসার পর দোয়া করলাম: হে আল্লাহ্, আমার জন্য একজন সৎ সঙ্গি পাওয়া সহজ করে দিন। এরপর আমি আবু হুরায়রা (রাঃ) এর মজলিসে বসে বললাম, আমি আল্লাহ্র কাছে দোয়া করেছি, আল্লাহ্ যেন আমাকে একজন সৎ সঙ্গি দান করেন। আপনি আমাকে এমন একটি বাণী শুনান যে বাণীটি আপনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনেছেন; আশা করি সে বাণীর মাধ্যমে আল্লাহ্ আমাকে উপকৃত করবেন। তখন তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন: কিয়ামতের দিন বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম যে আমলের হিসাব নেয়া হবে সেটা হচ্ছে- নামায। যদি নামায ঠিক থাকে তাহলে সে উত্তীর্ণ ও সফলকাম হবে। আর যদি নামায ঠিক না থাকে তাহলে সে ব্যর্থ ও বিফল হবে। যদি তার ফরয নামাযে কিছু ঘাটতি থাকে তখন রব্ব বলবেন: দেখ; আমার বান্দার কোন নফল আমল আছে কি? থাকলে সেটা দিয়ে ফরযের ঘাটতি পূরণ করা হবে। এভাবে তার বাকী আমলগুলোরও হিসাব নেয়া হবে।”[সুনানে তিরমিযি (৪১৩), সহিহুল জামে (২০২০)]
সুনানে আবু দাউদ গ্রন্থে হাদিসটি আনাস বিন হাকীম আল-যাব্বি থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি মদিনায় আসার পর আবু হুরায়রা (রাঃ) এর সাথে সাক্ষাত হল। তিনি আমার বংশ-পরিচয় জিজ্ঞেস করলেন। আমি আমার বংশ-পরিচয় উল্লেখ করলাম। এরপর তিনি বললেন: ওহে যুবক, আমি কি তোমাকে একটি হাদিস বর্ণনা করব না? আমি বললাম: অবশ্যই; আল্লাহ্ আপনার প্রতি রহম করুন। (বর্ণনাকারী ইউনুছ বলেন: আমার ধারণা হচ্ছে- তিনি কথাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকেই বর্ণনা করেছেন।) তিনি বলেন: কিয়ামতের দিন মানুষের কাছ থেকে সর্বপ্রথম যে আমলের হিসাব নেয়া হবে সেটা হচ্ছে- নামায। তিনি বলেন, আমাদের রব্ব ফেরেশতাদেরকে বলবেন -অথচ তিনি সম্যক অবগত-: তোমরা আমার বান্দার নামায দেখ; আমার বান্দা কি নামায পরিপূর্ণভাবে আদায় করেছে; নাকি নামাযে ঘাটতি আছে? যদি নামায পরিপূর্ণ পাওয়া যায় তাহলে নামায পরিপূর্ণ হিসেবে লেখা হবে। আর যদি নামাযে ঘাটতি পাওয়া যায় তখন রব্ব বলবেন: দেখ, আমার বান্দার নফল নামায আছে কিনা? যদি নফল নামায থাকে তখন বলবেন: নফল দিয়ে আমার বান্দার ফরযের ঘাটতি পূরণ কর। এভাবে অন্য আমলগুলোর হিসাব নেয়া হবে।”[সহিহুল জামে (২৫৭১)]
বে-নামাযির তওবার ব্যাপারে আরও বিস্তারিত জানতে 91411 নং প্রশ্নোত্তরটি দেখুন।