সালাত / নামায

জুমআর দিন মিম্বরে চড়ে খতীবের খুতবা দেওয়ার পূর্বে একজন ক্বারি কুরআন তিলাওয়াত করে (অথবা বক্তৃতা করে) শোনায়। এটা কি শরীয়তসম্মত?

প্রশ্নঃ জুমআর দিন মিম্বরে চড়ে খতীবের খুতবা দেওয়ার পূর্বে একজন ক্বারি কুরআন তিলাওয়াত করে (অথবা বক্তৃতা করে) শোনায়। এটা কি শরীয়তসম্মত?

উত্তরঃ আলহামদু লিল্লাহ।

এ কাজের কোন দলীল আমাদের জানা নেই। আর মহানবী (সঃ) বলেনা, “যে ব্যক্তি আমাদের এ (দ্বীন) ব্যাপারে নতুন কিছু আবিষ্কার করে, সে ব্যক্তির সে কাজ প্রত্যাখ্যাত।” (বুখারী ও মুসলিম) “যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করে, যার উপর আমাদের কোন নির্দেশ নেই, সে ব্যক্তির সে কাজ প্রত্যাখ্যাত।” (মুসলিম, লাজনাহ দায়েমাহ)

আমাদের আদর্শ নবী মুহাম্মদ (সঃ)। তিনি মিম্বারে খুতবা দেওয়ার আগে নিচে দাঁড়িয়ে খুতবা দেন নি। তিনি উম্মতকে নির্দেশ করে বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমাআর দিন নাপাকির গোসলের ন্যায় গোসল করল এবং (সূর্য ঢলার সঙ্গে সঙ্গে) প্রথম অক্তে মসজিদে এল, সে যেন একটি উট দান করল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় সময় এল, সে যেন একটি গাভী ডান করল। যে ব্যক্তি তৃতীয় সময় এল, সে যেন একটি শিং বিশিষ্ট দুম্বা দান করল। যে ব্যক্তি চতুর্থ সময়ে এল, সে যেন একটি মুরগী দান করল। আর যে ব্যক্তি পঞ্চম সময়ে এল, সে যেন একটি ডিম দান করল। তারপর ইমাম যখন খুতবাহ প্রদানের জন্য বের হন, তখন(লেখক) ফিরিশতাগণ যিকর শোনার জন্য হাজির হয়ে যায়।” (বুখারী ও মুসলিম)

তিনি আর বলেছেন, “যে কোন ব্যক্তি জুমআর দিন গোসল ও সাধ্যমত পবিত্রতা অর্জন করল, নিজেস্ব তেল গায়ে লাগায় অথবা নিজ ঘরের সুগন্ধি (আতর) ব্যবহার করে, অতঃপর (মসজিদে) গিয়ে দুজনের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি না করেই (যেখানে স্থান পায় বসে যায়) এবং তাঁর ভাগ্যে যত রাতাআত নামায জোটে, আদায় করে তারপর ইমাম খুতবাহ আরাম্ভ করলে নীরব থাকে, সে ব্যক্তির সংশ্লিষ্ট জুমাআহ থেকে পরবর্তী জুমআহ পর্যন্ত কৃত সমুদয় (সাগীরা) গুনাহরাশিকে মাফ করে দেওয়া হয়।” (বুখারী)

সুতরাং মসজিদে গিয়ে নামায পড়া কর্তব্য মুসল্লীদের। অতঃপর ইমাম খুতবা দিলে নীরব হয়ে বসে খুতবা শুনবে। সুতরাং তাঁর আগে আবার খুতবা শোনার অবসর কোথায়? মিম্বারে খুতবা শুরু হওয়ার আগে কেউ না কেউ আসতেই থাকবে। সুতরাং তাঁদেরকে নামায পড়তে না দিয়ে লেকচার শুনিয়ে ডিস্টার্ব করা কীভাবে বৈধ হতে পারে?


অথচ রাসুল (সঃ) সাহাবাগণকে সশব্দে কুরআন পড়তে নিষেধ করে বলেন, “তোমরা একে অপরকে কষ্ট দিয়ো না এবং একে অপরের উপর কিরাআতে শব্দ উঁচু করো না।” (আহমাদ ৩/৯৪, আবূ দাঊদ ১২৩২ নং, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ প্রমুখ)  পরন্ত তিনি জুমাআর দিন নামাযের পূর্বে দার্সের জন্য হালকা বাঁধতে নিষেধও করেছেন। (আবূ দাঊদ ৯৯১, নাসাঈ ৭১৪, ইবনে মাজাহ ১১৩৩ নং)

তাহলে জুমআর খুতবার পূর্বে নামাযের সময় অতিরিক্ত লেকচার কীভাবে বৈধ হতে পারে? আসলে স্থানীয় ভাষায় খুতবা ‘হারাম’ করে উক্ত ‘লেকচারের বিদআত’ আবিষ্কৃত হয়েছে।

সূত্র: দ্বীনি প্রশ্নোত্তর
লেখক: আব্দুল হামিদ ফাইযী আল মাদানী

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Mahmud Ibn Shahid Ullah

"যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ❛❛যখন দেখবেন বাত্বিল আপনার উপর সন্তুষ্ট, তখন বুঝে নিবেন আপনি ক্রমের হক্ব থেকে বক্রপথে ধবিত হচ্ছেন।❞
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button