ইসলাম ও হিন্দুধর্ম সম্পর্কে হিন্দুগনের প্রশ্ন

হিন্দুগন বলেন সৃষ্টিকর্তা মানুষের আবতার(আকৃতি) গ্রহন করেন

প্রশ্ন: হিন্দুগন বলেন সৃষ্টিকর্তা মানুষের আবতার(আকৃতি) গ্রহন করেন এটা কতটুকু সত্য ?

✔ জবাব:- সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টির মৌলিকত্ব এক নয়-
অনেক হিন্দুগন বলেন মানুষের সুখ,ব্যথা,কষ্ট,দুঃখ বোঝার জন্য সৃষ্টিকর্তা মানুষের রূপ ধারন করেন মানুষরূপে পৃথিবীতে জন্মগ্রহন করেন। এটা অযৌক্তিক কারন সৃষ্টিকর্তার মৌলিকত্ব এবং মানুষের মৌল গুনাবলী বিপরীত-
✔ মানুষ মরনশীল কিন্তু সৃষ্টিকর্তা অমর। অতএব অমর এবং মরনশীল একসাথে হতে পারেনা ।
✔ মানুষের খাবার প্রয়োজন হয়
✔ ঘুমের প্রয়োজন হয়, সৃষ্টিকর্তার নিষ্প্রেয়োজন
✔ মানুষের শুরু আছে , সৃষ্টিকর্তা কোন শুরু নেই
✔ আল্লাহর প্রয়োজন হয়না খাবারের, ঘুমের অথবা তাঁর মানুষকে প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে হয় যা সৃষ্টিকর্তার ক্ষেত্রে নিষ্প্রয়োজন ।
সুতরাং মানুষের এবং সৃষ্টিকর্তার গুনাবলী একই মানুষের উপর আরোপ করা হাস্যকর ব্যপার । পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে –
‘‘তিনি সবাইকে আহার প্রদান করেন কিন্তু তাঁর আহারের প্রয়োজন হয়না।’’ সুরা আনাম-৬,আয়াত-১৪
এছারাও উল্লেখ আছে –
‘‘ তাঁর কোন বিশ্রাম বা নিদ্রার প্রয়োজন হয়না ।’’ সুরা বাকারা -২,আয়াত-২৫৫
VCD দৃষ্টান্ত-
ধরুন আপনি একজন VCD মেকার,vcd, কিভাবে চালাতে হবে তারজন্য আপনারা vcd হবার প্রয়োজন নেই আপনি যা করতে পারেন তাহলো আপনি ব্যবহার কারীদের জন্য vcd-র বিবরনী লিখে দিতে পারেন কিভাবে vcd চালাতে,বন্ধ করতে,সামনে পেছনে নিতে কিভাবে রক্ষনাবেক্ষন করতে হবে আপনি তা লিখে দিতে পারেন একই ভাবে সৃষ্টিকর্তার মানুষ হবার প্রয়োজন নেই এবং তিনি মানুষের জীবন-যাপন সঠিক ভাবে পালন করার জন্য নিয়ম-নীতি পাঠিয়েছেন আর সর্বশেষ বিবরনী হল পবিত্র কুরআন ,সৃষ্টিকর্তার পৃথিবীতে মানুষ হয়ে আসার ভাবনাটা অযৌক্তিক। তিনি মানুষের মধ্য হতে বার্তাবাহক বা নবী পছন্দ করে তাঁর মাধ্যমে এই বিবরনী প্রকাশ করেন ।
’আবতারবাদ’ প্রকৃতার্থে কি বোঝায়?-
সাধারন হিন্দুগন বিস্বাস করেন সৃষ্টিকর্তার মানবাকৃতিতে পৃথিবীতে নেমে আসাই হলো ‘আবতার’। ‘আবতার’ ‘আও’ অর্থ নীচে এবং ‘তরঅ’ অর্থ নামা অথাৎ নীচে নামা। অক্সফোর্ড ডিকশনারির মতে আবতার অর্থ- ’শরীর আকৃতিতে অবতারন করা’। এই ধারনা এসেছে –
‘‘যদা যদাহি ধর্ন্মস্য গ্লানির্ভবাতি ভারত । অভুত্থনমধর্মস্য তদাত্নানং সৃজাম্যহাম। পরিত্রানায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম। ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।’’
অর্থাৎ যে যে সময়ে ধর্মের পতন আর পাপের প্রার্দূভাব হয়, সেই সময়ে আমি জন্ম লইয়া থাকি। এইভাবে পাপিদের বিনাশ করিতে আর সৎ লোকদের বাঁচাইতে, এবং ধর্মকে আবার প্রতিষ্ঠিত করিতে যুগে যুগে আমি জন্মগ্রহন করি। ভগবৎগীতা-অধ্যায়-৪, শ্লোকা-৭-৮
একই বানী রয়েছে –
‘‘যখন পাপ বৃদ্ধি পায় আমি অবর্তীন হই।’’ ভগবৎপুরানা খন্ড-৯, অধ্যায়-২৪, শ্লোকা-৫৬
বেদ কি বলে আবতার সম্বন্ধে?-
‘আবতার’ সম্পর্কীয় ধারনা হিন্দুগন যা পোষন করেন বেদের কোথাও তা খুজেঁ পাওয়া যায়না। এজন্য হিন্দু পন্ডিতগন বলেন হিন্দুগনের আবতার সম্পকীয় ভাবনা ভুল। তারাঁ বলেন সৃষ্টিকর্তা মানব হয়ে পৃথিবীতে অবতার করেননা তিনি মানবজাতির মধ্য থেকে প্রতিনিধি নির্বাচন করেন বার্তা প্রেরনের জন্য। আপনি যদি বেদ পড়েন আবতার সর্ম্পকীয় কোন মতবাদ কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু বেদ উল্লেখ করেছে ঋষি বা বার্তাবাহকের কথা যা সৃষ্টিকর্তা মানবজাতির পথপ্রর্দশকরুপে প্রেরন করেছেন। যা পুরোপুরি ইসলামের ধারনার সাথে সামঞ্জস্য যে- সৃষ্টিকর্তা মানুষকে পথপ্রর্দশকরুপে নির্বাচন করে মানবজাতির মধ্যে যোগসুত্র স্থাপন করেছেন।

সুত্রঃ মূল: ড. জাকির নায়েক
অনুবাদ: শাহরিয়ার আজম

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
Back to top button