কুরআন ও কুরআনের জ্ঞানসমূহ

প্রশ্ন : হাদীছে এসেছে যে, কোন ব্যক্তি যদি সূরা বাক্বারাহ পড়ে তাহলে তার ঘরে শয়তান প্রবেশ করে না। কিন্তু সূরাটি যদি মোবাইল বা কম্পিউটারে বাজানো হয় তাহলে কি এই ফযীলত পাওয়া যাবে?

উত্তর : রেডিও বা ক্যাসেট থেকে বেরিয়ে আসা ধ্বনিকে পড়া হিসাবে গণ্য করা জায়েয নয়। বরং অবশ্যই নিজেদেরকে পড়তে হবে।

শায়খ মুহাম্মাদ ইবনু ছালেহ আল-উছাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘না, না। ক্যাসেটের শব্দ কিছুই না। এটি কোন উপকার দিবে না। কেননা ক্যাসেট বাজিয়ে এ কথা বলা যায় না যে, ‘সে কুরআন পড়েছে’। বলা যায়, ‘সে পূর্বে তেলাওয়াতকৃত ক্বারীর কণ্ঠস্বর শুনেছে’। তাই আমরা যদি কোন এক মুয়াজ্জিনের আযান রেকর্ড করে রাখি এবং যখন ওয়াক্ত হয় তখন সেটাকে মাইক্রোফোনে চালু করে এটাকে আযান হিসাবে গ্রহণ করি, তাহলে এটা কি জায়েয হবে? জায়েয হবে না। অনুরূপভাবে আমরা যদি একটি হৃদয়াগ্রাহী খুত্ববাহ রেকর্ড করে রাখি। এরপর যখন জুমু‘আর দিন আসবে, তখন আমরা মাইক্রোফোনের সামনে ক্যাসেট-প্লেয়ারে এ রেকর্ডটি চালু করি। ক্যাসেট প্লেয়ার বলল, ‘আস্সালামু আলাইকুম’। এরপর মুয়াজ্জিন আযান দিল। তারপর ক্যাসেট-প্লেয়ার খুত্ববাহ দিল। এটা কি জায়েয হবে? জায়েয হবে না। কেন? কেননা এটি পূর্ববর্তী একটি কণ্ঠস্বরের রেকর্ড। যেমনিভাবে আপনি যদি কোন একটি কাগজে লিখেন কিংবা ঘরে একটি মুছহাফ (কুরআনগ্রন্থ) রাখেন, তাহলে পড়ার বদলে সেটা কি যথেষ্ট হবে? না, যথেষ্ট হবে না’  (আসইলাতুল বাব আল-মাফতূহ, প্রশ্ন নং-৯৮৬)।

কিন্তু ঘরের লোকদের মধ্যে সূরা বাক্বারাহ পড়তে পারার মত কেউ যদি না থাকে এবং ঐ ঘরে এসে পড়ে দিবে এমন কেউ যদি না থাকে; সেক্ষেত্রে তারা যদি ক্যাসেট-প্লেয়ার ব্যবহার করে, তাহলে অগ্রগণ্য মত হচ্ছে- এতে করে তারা এ ফযীলত তথা ‘ঘর থেকে শয়তানের পলায়ন করা’র ফযীলত হাছিল করবে ইনশাআল্লাহ। বিশেষতঃ বাড়ীর কেউ যদি এই পড়াটা শুনে। শায়খ ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ) এরূপ একটি প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘যে অভিমতটি অগ্রগণ্য (আল্লাহই সর্বজ্ঞ) গোটা সূরাটি রেডিওতে কিংবা ঘরের মালিকের নিজে পড়ার মাধ্যমে নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘শয়তান পালিয়ে যাওয়া’-এর যে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন সেটা হাছিল হবে। কিন্তু শয়তান পালিয়ে গেলেও পড়া শেষ হলে আবার না ফেরা অনিবার্য নয়। যেমনটি শয়তান আযান ও ইক্বামত শুনে পালিয়ে যায়। এরপর সে ফিরে এসে ব্যক্তি ও তার অন্তরের মাঝে আড়াল তৈরি করে এবং বলে, এটা এটা স্মরণ কর। যেমনটি এ মর্মে ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। তাই মুমিন ব্যক্তির জন্য শরী‘আতের বিধান হল, তিনি সর্বদা আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় চাইবেন, শয়তানের ষড়যন্ত্র, কুমন্ত্রণা ও যে পাপের দিকে শয়তান ডাকে এসব ব্যাপারে সাবধান থাকবেন’ (ইবনু বায, মাজমূঊ ফাতাওয়া, ২৪তম খণ্ড, পৃ. ৪১৩)।

 

সূত্র: মাসিক আল-ইখলাছ।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Mahmud Ibn Shahid Ullah

"যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ❛❛যখন দেখবেন বাত্বিল আপনার উপর সন্তুষ্ট, তখন বুঝে নিবেন আপনি ক্রমের হক্ব থেকে বক্রপথে ধবিত হচ্ছেন।❞
Back to top button