প্রশ্ন : সূরা আলে ইমরান ১০২ নং আয়াতে বর্ণিত মুমিন ও মুসলিমের মধ্যে পার্থক্য কি? আর মুহসিন কাকে বলে?
উত্তর : আয়াতটির অর্থ হ’ল- ‘হে মুমিনগণ! তোমরা যথার্থভাবে আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমরা অবশ্যই মুসলিম না হয়ে মরো না’ (আলে ইমরান ৩/১০২)। এখানে তিনটি বিষয় এসেছে, মুমিন, মুত্তাক্বী ও মুসলিম। প্রথম দু’টি হৃদয়ে বিশ্বাসগত কমবেশীর সাথে সম্পর্কিত এবং শেষেরটি বাহ্যিক আমলের সাথে সম্পর্কিত। যা অবশ্যই কঠিন। আলোচ্য আয়াতে হৃদয়ের বিশ্বাসকে আল্লাহভীতি ও যথাযথভাবে আমলের মাধ্যমে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক্ষণে উপরোক্ত আলে ইমরান ১০২ আয়াতে মুমিনদেরকে বলা হয়েছে যে, তোমরা ইসলামের বিধি-বিধান সমূহ পরিপূর্ণভাবে পালন কর, যেন এর উপরেই তোমরা মৃত্যুবরণ করতে পার’ (ইবনু কাছীর, ঐ আয়াতের তাফসীর দ্রঃ)। ঈমানের কমবেশীর বিষয়টি আল্লাহ দেখবেন।
স্মর্তব্য যে, দ্বীনের স্তর হচ্ছে তিনটি : (১) ঈমান, যা ছয়টি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহর উপরে বিশ্বাস, ফেরেশতাগণ, আসমানী কিতাবসমূহ, নবী ও রাসূলগণ, ক্বিয়ামত দিবস এবং তাক্বদীরের ভালো-মন্দের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা। (২) ইসলাম, যা পাঁচটি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত। কালেমা শাহাদত, ছালাত, যাকাত, ছিয়াম ও হজ্জ। (৩) ইহসান, যা একনিষ্ঠচিত্তে ও পূর্ণ ইখলাছের সাথে আল্লাহর ইবাদত করাকে বুঝায়। অর্থাৎ এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করা যেন বান্দা আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছে অথবা আল্লাহ স্বীয় বান্দাকে দেখছেন। পূর্ণ ঈমানের সাথে সকল প্রকার সৎকর্ম ইসলাম ও ঈমানের অন্তর্ভুক্ত। আর সেগুলি পূর্ণ ইখলাছের সাথে সম্পাদন করা ইহসানের অন্তর্ভুক্ত। এটিই হ’ল দ্বীনের সর্বোচ্চ স্তর। উল্লিখিত তিনটি বিষয় হাদীছে জিব্রীলে বর্ণিত হয়েছে (বুখারী হা/৫০, মুসলিম হা/৯; মিশকাত হা/২)।
সূত্র: মাসিক আত-তাহরীক।