অন্যান্য

প্রশ্ন: বে-নামাযীকে বিয়ে করা যাবে কি না?

উত্তর:  রাসূলে করীম (সাঃ) বলেছেন:
بَيْنَ الرَّجُلِ والْكُفْرِ والشِّرْكِ تَرْكُ الصَّلاَةِ
অর্থ: “মুসলিম বান্দা এবং কাফির ও মুশরিকের মধ্যে পার্থক্য হল সালাত পরিত্যাগ করা।”

তিনি সালাত পরিত্যাগ করার ব্যাপারে আরও বলেছেন ঃ
الْعَهْدُ الَّذِيْ بّيْنَناَ وَبَيْنَهُمْ الصّلاَةُ فَمَنْ تَرِكَهاَ فَقَدْ كَفَرَ
অর্থ: “তাদের মাঝে এবং আমাদের মাঝে চুক্তি হচ্ছে সালাতের, যে ব্যক্তি সালাত পরিত্যাগ করবে সে কাফির হয়ে যাবে।”
(আহমদ, তিরমিযী, নাসাঈ)

 

মুসলিম নারীদের বিবাহের ব্যাপারে আল্লাহ্ পাক বলেছেন ঃ
وَلاَ تَنكِحُوا الْمُشْرِكَاتِ حَتّٰى يُؤْمِنَّ وَلأَদ্ধمَةٌ مُؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكَةٍ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ
“আর তোমরা মুশরিক নারীদেরকে বিবাহ করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্যই মুসলিম ক্রীতদাসী মুশরিক নারী অপেক্ষা উত্তম যদিও তাদেরকে তোমাদের ভাল লাগে।” (সূরা বাক্বারা; ২২১)

 

এ ব্যাপারে আল্লাহ পাক আরও বলেছেন:
فَإِنْ عَلِمْتُمُوهُنَّ مُؤْمِنَاتٍ فَلاَ تَرْجِعُوهُنَّ إِلَى الْكُفَّارِ لاَ هُنَّ حِلٌّ لَهُمْ وَلاَ هُمْ يَحِلُّونَ لَهُنَّ
“যদি তোমরা জান যে, তারা ঈমানদার, তবে আর তাদেরকে কাফিরদের কাছে ফেরত পাঠিও না। এরা কাফিরদের জন্য হালাল নয় এবং কাফিররা এদের জন্য হালাল নয়।” (সূরা মুমতাহিনা: ১০)
নবী কারীম (সাঃ) এর সাহাবীগণ সালাত্ ব্যতীত কোন আমল পরিত্যাগ করার কারণে কাউকে কাফির মনে করতেন না। এই দলীলগুলো থেকে আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারি যারা সালাত্ পরিত্যাগ করল বা সালাত্ কায়েম করল না- তারা মুশরিক বা কাফির। মুশরিকদের জন্য বেহেশত হারাম।

উল্লিখিত বিষয়ে রাসূলে করীম (সাঃ) আরও বলেছেন :
من ترك الصلاة متعمدا فقد كفر جهارا.
অর্থ: “যে ব্যক্তি ইচ্ছে করে সালাত ছেড়ে দিল, সে কুফরী করল, অর্থাৎ সে কাফির হয়ে গেল।” (সহীহ নামায পৃঃ ১২)

 

এ আয়াতগুলোর ভিত্তিতে মুসলমানগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, কোন মুসলিম নারীর সাথে কাফিরদের বিবাহ বৈধ নয়। অতএব কোন অভিভাবক যদি নিজ মেয়ে বা নিজের অধীনের কোন মেয়ের বিবাহ সালাত্ ত্যাগকারী ব্যক্তির সাথে সম্পন্ন করে তবে সূরা মুমতাহিনার ১০ আয়াত অনুযায়ী সে বিবাহ বিশুদ্ধ হবে না। এ বিবাহের মাধ্যমে উক্ত নারী তার জন্য বৈধ হবে না। সে ক্ষেত্রে জন্ম নেয়া সন্তানও বৈধ সন্তান হবে না। আল্লাহ পাক আল কুরআনে বলেছেন:
অর্থঃ “মুমিন নারী মুমিন পুরুষের জন্য বৈধ।”

 

সূরা বাকারাহ- ২২১ নং আয়াতে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে মুশরিক নারী ও মুশরিক পুরুষকে ক্রীতদাস ও ক্রীতদাসী অপেক্ষা খারাপ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এবং তারা যত মনোমুগ্ধকরই হোকনা কেন তাদের সাথে মুমিনের বিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
কুরআন ও হাদীসের উল্লিখিত বানী থেকে পরিষ্কার ভাবে দেখা যাচ্ছে যে, বেনামাযীর সাথে নামাযী সন্তানের বিবাহ দেয়া যাবে না। কারণ, যেহেতু সূরা ‘রূম’ ৩১ নম্বর আয়াতে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে ঃ
{وَأَقِيمُوا الصَّلاةَ وَلا تَكُونُوا مِنَ الْمُشْرِكِينَ}
অর্থ ঃ সলাত কায়েম কর, মুশরিকদের সঙ্গে গণ্য হয়ো না।”
(সহীহ নামায, পৃঃ ১২)

এ আয়াত থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, সালাত কায়িম করলে মুসলমান থাকবে, না কায়িম করলে মুশরিক হয়ে যাবে।
হাদীসে বলা হয়েছে ঃ
অর্থ: “যে ব্যক্তি ইচ্ছে করে সালাত্ ছেড়ে দিবে, সে কুফরী করল, অর্থাৎ সে কাফির হয়ে গেল।” (তাবারানী)

উল্লিখিত বর্ণনা থেকে আমরা পরিষ্কার বুঝতে পারি যে, যারা সালাত্ আদায় করে না, তারা কাফির ও মুশরিক। এছাড়াও, বুখারী, মুসলিমে স্পষ্ট রূপে বলা আছে ঃ
لاَ يَرِثُ الْمُؤْمِنُ الْكَافِرَ وَلاَ يَرِثُ الْكَافِرُ الْمُؤْمِنَ.
“কোন মুসলিম কাফিরের মীরাস লাভ করতে পারবে না। কোন কাফিরও কোন মুসলিমের মীরাস লাভ করতে পারবে না।” (বুখারী ও মুসলিম)

 

হাদীস থেকে পরিষ্কার ভাবে প্রতীয়মাণ হয় যে, কোন মুমিন পিতা-মাতা যদি মারা যায় তাহলে তার বে-নামাযী সন্তানরা তার সম্পত্তির ভাগ পাবে না। এমনকি কোন মুমিন সন্তান যদি মারা যায় তবে তার সে-নামাযী পিতা-মাতা বা অন্যান্য আত্মীয় স্বজন তার সম্পত্তির কোন ভাগ পাবে না। কেননা উপযুক্ত আয়াতগুলোতে বলা হয়েছে, বে-নামাযী কাফির ও মুশরিক এবং কোন কাফির কোন মুসলিমের মীরাস লাভ করতে পারবে না। যদি বে-নামাযী সন্তান বা বে-নামাযী পিতা-মাতাকে সম্পত্তি দেওয়া হয়, তাহলে মীরাস সমূহের অন্যান্য অধিকারীদের হক নষ্ট করা হবে।

 

আল্লাহ পাক বলেছেন ঃ
অর্থ: “কারো হক কেউ নষ্ট করলে, পরকালে তার নিজের পুণ্য দিয়ে এবং হকের অধিকারীর পাপ নিজে নিয়ে হক আদায় করতে হবে।”
তাই, ফারায়েযের সময় এই হক সম্পর্কে আমাদের সচেতন থাকা বিশেষ জরুরী।

 

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button