প্রশ্ন : জনৈক আলেম বলেন, দুনিয়া অর্জন ও মানুষের কল্যাণবিহীন জ্ঞানার্জন করা হারাম। এক্ষণে আমার জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়া জায়েয হবে কি?
উত্তর : দ্বীনের মৌলিক বিশ্বাস, বিধি-বিধান,
দুনিয়ার জ্ঞান অর্জন যদি আখিরাতের লক্ষ্যে পরিচালিত হয়, তাহ’লে সেটিও আল্লাহর ইবাদত হিসাবে গণ্য হবে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিবসের
আগমন-নির্গমনে জ্ঞানীদের জন্য (আল্লাহর) নিদর্শন সমূহ নিহিত রয়েছে’।
‘যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আসমান ও যমীনের
সৃষ্টি বিষয়ে চিন্তা-গবেষণা করে এবং বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি এগুলিকে অনর্থক সৃষ্টি করোনি। মহা পবিত্র তুমি। অতএব তুমি আমাদেরকে
জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচাও!’ (আলে ইমরান ৩/১৯০-৯১)।
আদম (আঃ), দাঊদ ও সুলায়মান (আঃ) এবং পরবর্তীতে বনু ইসরাঈলের নবীগণ সকলে স্ব স্ব সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন (বুখারী হা/৩৪৫৫, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৬৭৫)।
অতএব শুধু রাষ্ট্র বিজ্ঞান নয় বরং বিজ্ঞানের সকল শাখায় বুৎপত্তি অর্জন করা মুসলমানের জন্য অবশ্য কর্তব্য। যদি সেখানে আল্লাহর সৃষ্টিতত্ত্ব গবেষণা ও
তাঁর প্রতি আনুগত্য উদ্দেশ্য হয়, তাহ’লে সেটি ইবাদতে পরিণত হবে।
প্রকৃত শিক্ষা হ’ল সেটাই, যা খালেক্ব-এর জ্ঞান দান করার সাথে সাথে ‘আলাক্ব-এর চাহিদা পূরণ করে। অর্থাৎ নৈতিক ও বৈষয়িক জ্ঞানের সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থাই হ’ল পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা। মানবীয় জ্ঞানের সম্মুখে যদি অহি-র জ্ঞানের অভ্রান্ত সত্যের আলো না থাকে, তাহ’লে যেকোন সময় মানুষ পথভ্রষ্ট হবে এবং বস্ত্তগত উন্নতি তার জন্য ধ্বংসের কারণ হবে (তাফসীরুল কুরআন ৩০তম
পারা, সূরা ‘আলাক্বের তাফসীর দ্রষ্টব্য)। অতএব দুনিয়া পরিচালনা বা আর্থিক
চাহিদা মিটানোর জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানসহ অন্য যেকোন বিষয়ে জ্ঞানার্জন করা বৈধ।
যায়েদ বিন ছাবেত (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাকে সুরিয়ানী ভাষা শিক্ষার জন্য আদেশ করেছিলেন। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, আমাকে ইহূদীদের কিতাব শিখতে বলা হয়েছিল (তিরমিযী হা/২৭১৫; মিশকাত হা/৪৬৫৯; ছহীহাহ হা/১৮৭)।
সূত্র: মাসিক আত-তাহরীক।