ইসলাম ও হিন্দুধর্ম সম্পর্কে হিন্দুগনের প্রশ্ন

ইসলামই যদি আল্লাহর মনোনিত ধর্ম হয় তবে কেন আল্লাহ খ্রীষ্টান, হিন্দু এবং ইহুদি বানিয়ে দুনিয়াতে পাঠান

প্রশ্ন : ইসলামই যদি আল্লাহর মনোনিত ধর্ম হয় তবে কেন আল্লাহ খ্রীষ্টান, হিন্দু এবং ইহুদি বানিয়ে দুনিয়াতে পাঠান?

উত্তরঃ প্রত্যেক শিশুই মুসলিম হয়ে জন্মগ্রহন করে-
রাসূল (ﷺ )বলেন-‘‘প্রত্যেক শিশুই মুসলিম হয়ে জন্মগ্রহন করে’’ মুসলিম অর্থ নিজের ইচ্ছা বা আকাংখা আল্লাহর নিকট সমর্পন করে দেয়া। সে বড় হবার পর মা-বাবা বা তার অভিভাবকের ধর্ম অনুসরন করে। সে হয়তো আগুনের পুজা করে ,পাথরের পূজা করে, মূর্তির পূজা করে।
ধ্রুবসত্য আল্লাহ প্রত্যেকের নিকট পৌঁছে দেবেন-
যদি কোন শিশু হিন্দু ঘরে জন্মগ্রহন করে মৃত্যু বরন করে তবে সে স্বর্গবাসী হবে কারন সে নিরাপরাধ। কিন্তু পরবর্তীতে সে বেড়ে ওঠার পর যখন সে জানতে ও বুঝতে শিখে এরেপরও যদি সে ভ্রান্ত ধারনায় নিমজ্জিত থাকে তবে তার ভুলের সমূহ মাশুল তাকেই বহন করতে হবে। যদিও হিন্দু ধর্ম অনেকাংশে মানুষের দ্বারা বিকৃত হয়েছে তবুও সেখানে উল্লেখ রয়েছে ’অন্তিম ঋষি’ মুহাম্মদ (ﷺ)-এর নাম যা পূর্বেই বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। খ্রীষ্টানদের ধর্মগ্রন্থে উলেখ রয়েছে তিনি পথপ্রদর্শক হয়ে আসবেন এবং তাঁকে পবিত্র কুরআন দেয়া হবে। হিন্দুধর্মগ্রন্থ ,খ্রীষ্টানধর্মগ্রন্থ বা বৌদ্ধধর্মগ্রন্থ যাই পড়েন আপনাকে কুরআনের দিকেই ফিরে আসতে হবে। প্রত্যেকেই নিজের জ্ঞান, বিবেক ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে চিন্তা ভাবনা করা উচিৎ সঠিক পথ কোনটি। আল্লাহ বলেন
‘‘ আমরা অচিরেই তাদের দেখবো আমার নির্দেশ বানী দিগন্তে এবং তাঁদের নিজেদের মধ্যেও; যে পর্যন্ত না তাদের কাছে সুষ্পষ্ট হয়ে যায় এটা ধ্রুবসত্য নিঃসন্দেহে।’’ সুরা ফুসিলাত-৪১, আয়াত-৫৩-
কি সমস্যা সত্যকে আলিঙ্গন করতে?-
অতএব আল্লাহ প্রত্যেককেই সত্যের আলোয় পথ দেখাবেন কিন্তু সত্য অনুধাবন করার পরও সে যদি ভাবে-
✔ আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করি আমি অসৎ হতে পারবোনা,
✔ মিথ্যা বলতে পারবোনা,
✔ মদ-গাঁজা খেতে পারবোনা,
✔ জুয়া খেলা যাবেনা,
✔ রাস্তাঘাটে মহিলাদের উক্তক্ত করার সুযোগ পাওয়া যাবে না
✔ আমাকে ইসলামী পোষাক পড়তে হবে।
✔ আমাকে সন্ত্রাসী, গোড়াঁ বলা হবে।
✔ আত্নীয়-স্বজন আমাকে ত্যাজ্য করবে ইত্যাদি।
এসব চিন্তা-ভাবনা তাকে পেছন হতে টেনে ধরে যার ফলে সে সত্য হতে ধীরে ধীরে দুরে সরে যায়। সত্যকে জানার পরেও যদি তার মনোভাব এমন হয় সে কখনোই ইসলামের ছায়াতলে আসতে পারবেনা।
মিথ্যাকে ছুড়েঁ ফেলে যেকোন মুল্যে সত্যকে আকড়েঁ ধরা-
আরো বিভিন্ন অপচিন্তা আপনাকে পেছনে টেনে ধরে, সত্য গ্রহনে বিপত্তি সৃষ্টি করে। সৃষ্টিকর্তা আপনার নিকট যেকোন না কোন ভাবে তারঁ একত্ববাদের বার্তা পৌঁছেঁ দিবেনই পবিএ কুরআনে এটা তারঁ চ্যালেঞ্জ সত্য আপনার সামনে তিনি উম্মোচিত করবেন। এরপরে দায়-দায়িত্ব আপনার যুক্তিকতার মাধ্যমে বাছ-বিচার করে মিথ্যাকে ছুড়েঁ ফেলে যেকোন মুল্যে সত্যকে আকড়েঁ ধরা। যেদিন প্রতিটি মানুষের কর্মের হিসাব নেয়া হবে তখন আপনি এই অনুযোগ সৃষ্টিকর্তার নিকট করতে পারবেননা আপনি সত্যের সন্ধান পাননি। আজ আপনি যদি ইসলাম গ্রহন করেন পূর্বের সমস্ত পাপ আপনার ক্ষমা করে দেয়া হবে এবং আপনার সৎ কর্মের পুরষ্কার দেয়া হবে দ্বিগুন অন্যান্য মুসলিমদের চাইতে।
মুসলিমগনের দায়বদ্ধতা-
তাই প্রতিটি মুসলিমদের উচিত অমুসলিমগনের নিকট ইসলামের বার্তা পৌছে দেয়া, ইসলাম জোর- জবরদস্তিতে বিশ্বাসী নয় । আপনার কাজ বার্তা পৌছে দেয়া, আল্লাহ বলেন-
‘‘ তোমার কাজ বার্তা পৌছেঁ দেয়া।’’ সুরা গাশিয়া -৮৮,আয়াত -২১,২২
যখনই আপনি বার্তার সত্যতা বুঝতে পারবেন আপনার ইসলামের ছায়াতলে আসতে হবে আর যদি না আসেন আপনার কর্মের জন্য দায়ী হতে হবে আপনাকেই। একই ভাবে অনেকে মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করে কিন্তু কর্মে এবং চিন্তায় তারা মুসলিম নয় তারা নামে মাত্র মুসলিম , তারা বেহেশতে যাবেনা। এটা ভুল ধারনা মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করে, নাম মোহাম্মদ, কাদের, মানিক, হলেই সে স্বর্গে যাবেনা, অনেকেই বলে কলেমা পড়লেই বেহেশতে প্রবেশ করবে ,কালেমা পড়ে তার মর্ম অনুযায়ী কাজ করা না হয় তবে তা নিরর্থক । এমনকি মদিনার মুনাফিকরা কালেমা পড়েছিল তারা কি বেহেশতে প্রবেশ করবে? আল্লাহু আলম।

সুত্রঃ মূল: ড. জাকির নায়েক
অনুবাদ: শাহরিয়ার আজম

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
Back to top button