ডঃ জাকির নায়েক এর প্রশ্নোত্তর পর্ব সমগ্র

যদি সকল ধর্মই এক সৃষ্টিকর্তার ধারনা প্রকাশ করে তার মানে এই নয় যে -সকল ধর্ম একই?

প্রশ্ন : যদি সকল ধর্মই এক সৃষ্টিকর্তার ধারনা প্রকাশ করে তার মানে এই নয় যে -সকল ধর্ম একই?

উত্তরঃ আলহামদু লিল্লাহ।

” সবধর্মই এক”- এক অর্থহীন প্রলাপ-

পৃথিবীর অনেক দেশেই দেখা যায় বিভিন্ন ধর্মের ব্যক্তিগন বা সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদগন একই মঞ্চে দাড়িয়ে উক্তি করেন–” সবধর্মই এক” । এসব অর্থহীন প্রলাপ ব্যতীত আর কিছুই নয়। আপনি যদি উক্ত হিন্দু ব্যক্তিকে বলেন মুসলিম হতে বা মুসলিম ব্যক্তিকে বলেন খ্রীষ্টান হতে তারাঁ কি নিজের ধর্ম পরিহার করবেন? উত্তর-না। তাহলে সবধর্ম কি করে একই হয়? এসব ব্যক্তিগন ধর্মকে ব্যবহার করে স্বার্থসিদ্ধতে পটু।

২+২=কত?-

ব্যাপারটা এমনই যে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের জিজ্ঞেস করা হল ২+২=কত? কেউ বললো ৪ কেই ৫ আবার কেউ বললো ৬। তিনজন শিক্ষক মঞ্চে উঠে বললেন তিনটা উত্তরই সঠিক।

আমাদের পরস্পরের মিলগুলো অনুসরন করি-

অমিল রয়েছে অনেক সেটা ভুলে গিয়ে ভ্রাতৃঃ ও সৌহার্দ্যের নিদর্শন স্থাপন করার লক্ষ্যে এই সুত্রটা প্রত্যেকের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করি – ধরুন আমরা বাইবেল, কুরআন, বেদ সব একসাথে করি তারপর সবগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্যতা নিরুপন করি,প্রত্যেকটির মধ্য হতে মিলগুলো আমরা একসাথে আনয়ন করি এবং সেটা অনুসরন করি। । আল্লাহপাক আমাদের শিক্ষা দেন –

‘‘ বলো- হে গ্রন্থপ্রাপ্ত লোকেরা আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে পরস্পর সমঝোথার সাথে এসো যেন আমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারো এবাদত করবোনা আর আমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে মনিব বলে স্বীকার করবোনা। কিন্তু তারা যদি ফিরে যায় তবে বলো-সাক্ষী থেকো আমরা কিন্তু মুসলিম।’’ সুরা ইমরান-৩,আয়াত-৬৪

মোহাম্মদ (ﷺ) ইসলাম ধর্ম নিয়ে এসেছেন?-

অনেকের ভ্রান্ত ধারনা বিশেষ করে অমুসলিমগনের এমনকি মুসলিমদের মধ্যেও যে হযরত মোহাম্মদ (ﷺ) ইসলাম ধর্ম নিয়ে এসেছেন ১৪০০ বছর পূর্বে। ইসলাম তখনই এসেছে যখন মানুষ সর্বপ্রথম পৃথিবীতে পর্দাপন করেছে। এক সৃষ্টিকর্তা হতে যুগে যুগে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ তথা স্থানে নবী বা বার্তাবাহক এসেছেন যেমন:- আদম (আঃ), নূহ (আঃ), ইব্রাহিম (আঃ), মুসা(আঃ) এবং সর্বশেষ বার্তাবাহক হযরত মোহাম্মদ (ﷺ)। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে –

‘‘আর এমন কোন সম্প্রদায় নেই যার মধ্যে একজন সতর্ককারী না গেছেন।’’ সুরা ফাতির-৩৫, আয়াত-২৪

কুরআনে ২৫ জন নবীর নাম উল্লেখ রয়েছে । চারজন নবীর উপর আসমানী গ্রন্থ নাযিল হয়েছিল। হযরত ঈসা (আঃ) -এর উপর তাওরাত ,দাউদ (আঃ)-যবুর ,ঈসা (আঃ)ইঞ্জিল এবং কুরআন-হযরত মোহাম্মদ (ﷺ)-এর উপর ।

ইঞ্জিল=বাইবেলে?

বর্তমানে খ্রীষ্টানগন ইঞ্জিল কিতাব যেটাকে বাইবেল বলেন, সেটা সেই ইঞ্জিল বা বাইবেল নয় যা মুসলিমগন বিশ্বাস করেন । বর্তমান বাইবেলে বিভিন্ন রং-বেরঙ্গের মতবাদে পরিপূর্ন । আপনি বাইবেল পড়লে সেখানে

✔ ঐতিহাসিকদের মন্তব্য দেখতে পাবেন

✔ ছবি দেখতে পাবেন ,

✔ কিছু তথাকথিত নবীর বাণী দেখতে পাবেন,

✔ সৃষ্টিকর্তার হতে নিয়ম কানুন দেখবেন

✔ এমনকি মা-ছেলে অশালীন সম্পর্ক ও বাবা-মেয়ের সাথে কুরুচিপূর্ন ঘটনার বর্ননা ও পরিলক্ষিত হবে

World Top update version-বাইবেল নাম্বার ১-

এসব ধর্মগ্রন্থে আছে ভাবতেই আর্শ্চয লাগে। বাইবেল পুরোপুরি সৃষ্টিকর্তার শব্দ বা আয়াত নয়। প্রতিবছরই কিছু খ্রীষ্টান স্কলারগন নিজের ইচ্ছামত শব্দ বা আয়াত সংযোজন বা বিয়োজন বা বাতিল করেন সামনের বছরের জন্য নতুন তথ্য পরিবেশন করেন (বাইবেলের মোড়কে) নিজেদের সুবিধার্থে যা Software update version এর মতো। যেমন আপনার কাছে ২০১২ সালের KJB (King James bible) আছে কিন্তু ২০১৩ সালে সেটা হতে সংযোযন ও বিয়োজন করে update ২০১৩ KJB বিক্রয় করা হবে। এটা স্রেফ নেহাতই এক রমরমা ব্যবসা। আর্শ্চযের ব্যপার এই যে দেদারসে লোকজন update version কিনছে এবং সব মিডিয়াতে ফলাও করে প্রচারিত হচ্ছে এ বছর update version-এ কত মুনাফা হয়েছে! আমার মনে হয় পৃথিবীতে যদি Top update পরিসংখ্যান হয় নিঃসন্দেহে বাইবেল স্থান হবে নাম্বার-১।

নবীগন এসেছিলেন নিদিষ্ট জাতির ও নিদির্ষ্ট একটি সময় পর্যন্ত-

এছাড়াও বিভিন্ন নবী যে বানী নিয়ে এসেছিলেন মানুষের কাছে তা বিকৃত হয়ে গেছে। নবীগন এসেছিলেন শুধু তাদের নিদিষ্ট জাতির জন্য এবং নিদির্ষ্ট একটি সময় পর্যন্ত । সুরা সাফ-৬১,আয়াত-৬ এ আল্লাহ বলেন –

‘‘ঈসা (আঃ)-কে শুধু বনী ইসরাঈল গোত্রের জন্য প্রেরন করা হয়েছে ।’’

বাইবেলে বর্নিত আছে –

‘‘ইহুদীগন ব্যতিত অন্য কারো কাছে যাবেনা’’ Gospel of mathew -10 ,verse 5-6

বাইবেলে বর্নিত আছে –

‘আমি শুধু বনী ইসরঈলের জন্য প্রেরিত হয়েছি ।’’ Gospel of mathew -15,verse-24

কিন্তু ইসলাম শুধু কোন গোত্র বা নিদির্ষ্ট সংখ্যক জাতির প্রতি আসেনি। আল্লাহ বলেন –

‘‘আমরা আপনাকে পাঠিয়েছি সমস্ত মানবজাতির রহমত সরূপ ।’’ সুরা আম্বিয়া-২১, আয়াত-১০৭

আপনাকে অনুসরন করতে হবে সর্বশেষ ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন-

হিন্দুধর্ম গ্রন্থ অথবা অন্য ধর্মগ্রন্থ হতে পারে সৃষ্টিকর্তা হতে আগত কিন্তু তা এসেছে নিদির্ষ্ট সময়ের জন্য নিদির্ষ্ট জতিকে ভিত্তি করে। প্রখ্যাত ঈতিহাসিক উইলিয়াম মূর বলেন-

‘‘ ১২০০বছর ধরে একমাত্র কুরআনই নিজের স্বকীয়তা বজায় রেখেছে।

তা তিনি বলেছেন আরও ২০০ বছর পূর্বে। এখনো কুরআন অবিকৃত রয়েছে। যদিও অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ সৃষ্টিকর্তা হতে আগত হয়ে থাকে আপনাকে অনুসরন করতে হবে সর্বশেষ ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন। ঈসা (আঃ), মুসা (আঃ), ইব্রাহিম (আঃ) ছিলেন মুসলিম । তারাঁ শান্তির বানী ইসলাম নিয়ে এসেছিলেন কালের আবর্তে মানুষ তা বিকৃত করেছে। ইসলামকেই অনুসরন করতে হবে ,অন্য কোন ধর্ম বা মতবাদ নয় যা মানুষের তৈরি, আল্লাহ বলেন -সুরা আল -ইমরান -৩, আয়াত-৮৫-

‘‘আর যে কেউ ইসলাম পরিত্যাগ করে অন্য ধর্ম অনুসরন করে তাহলে তার কাছ থেকে কখনো তা কবুল করা হবেনা। আর আখেরে সে হবে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তভূর্ক্ত।’’

সূত্রঃ ডঃ জাকির নায়েক এর প্রশ্ন – উত্তর পর্ব সমগ্র

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Mahmud Ibn Shahid Ullah

"যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ❛❛যখন দেখবেন বাত্বিল আপনার উপর সন্তুষ্ট, তখন বুঝে নিবেন আপনি ক্রমের হক্ব থেকে বক্রপথে ধবিত হচ্ছেন।❞
Back to top button