যদি কোন অমুসলিম পর্দা না করে শাড়ি অথবা কামিজ ব্যবহার করে তবে কি সে পোষাক পরিমিত শিষ্টাচার নয়?
প্রশ্ন :- যদি কোন অমুসলিম পর্দা না করে শাড়ি অথবা কামিজ ব্যবহার করে তবে কি সে পোষাক পরিমিত শিষ্টাচার নয়?
উত্তরঃ আলহামদু লিল্লাহ।
আসুন আমরা ইতিহাসের দিকে দৃষ্টিপাত করি-
ব্যাবিলনের সভ্যতা- কোন পুরুষ যদি কাউকে হত্যা করতো তারা শাস্তি হিসেবে তার স্ত্রীকে হত্যা করতো।
গ্রীক সভ্যতা- তারা মেয়েদের সম্পূর্ন মানুষ বলে মনে করতোনা। কুমারী মেযেদের মূল্য দিত। পতিতাবৃত্তি ছিল খুবই সাধারন।
রোমান সভ্যতা-তারা বলে স্বামী যেকোন সময় ইচ্ছা করলে তার স্ত্রীকে হত্যা করতে পারে।
মিশরী সভ্যতা-তারা মনে করে নারী হলো শয়তানের বাদ্যযন্ত্র।
প্রাক-ইসলামী যুগে-মেয়ে শিশুদের জীবন্ত কবর দেয়া হতো।
বর্তমান সমাজে শিষ্টাচারের বিশেষতঃ নির্ভর করে তার পারিপাশ্বিক পরিবেশের উপর ভিত্তি করে। উদাহরন স্বরুপ –
✔ কিছু আরব দেশ আছে নারীদের দিকে দৃষ্টিপাত করলেই অশিষ্টাচার্
✔ আপনি বাংলাদেশে মেয়েদের স্পর্শ না করে কথা বললে তা শিষ্টাচার,
✔ ইন্ডিয়াতে পুরুষ মহিলা দেখা হলে উঢ়ুঁ করে দুহাত জোর করে অভিবাদন জানানো শিষ্টাচারের একটা পর্যায়।
✔ অনেক দেশে যদি হাতে হাত মিলানো না হয় তবে শিষ্টাচারের বহিভূত কাজ।
✔ অনেক দেশে মেয়েদের চুমু খাওয়া শিষ্টাচারের লক্ষন।
✔ কিছু পাশ্চাত্য দেশে পুরুষ বা মহিলা নিজেদের ইচ্ছে মাফিক যাই করুক তা শিষ্টাচারের অন্তর্ক্তূক্ত। সুতরাং শিষ্টাচার নির্ভর করে পরিবেশ ও সংষ্কৃতির উপর। উদাহরন স্বরুপ
✔ কোন মেয়ে আমেরিকাতে শর্টস্কাট ও মিনি পড়ে তবে তা গ্রহনযোগ্য কিন্তু সে যদি তা বাংলাদেশে পড়ে তা অশিষ্ট ও সংষ্কৃতি বর্হিভূত।
একদিন এক আমেরিকান বললেন বাংলাদেশীরা শিষ্টাচারের নিয়ম জানেনা। আমি আশ্চর্য হলাম কেন জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন বাঙালিরা যখন শাড়ি পড়ে তখন পেট দেখা যায়। অতএব আমেরিকানদের দৃষ্টিতে পেট দেখা গেলে অশিষ্ট । এবার দেখা যাক আল্লাহ শিষ্টাচার সম্বন্ধে কি বলেছেন পবিত্র কুরআনে সুরা নুর-২৪, আয়াত-৩০-
‘‘তুমি মুমিন পুরুষদের বলো তারা তাদের দৃষ্টি অবনত করুক এবং আঙ্গিক কর্তব্যাবলীর হেফযত করুক, আর মুমিন নারীদের বলো যে তারা তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে,আর তাদের আঙ্গিক কর্তব্যাবলীর হেফাজত করে, আর তাদের অঙ্গ শোভা যেন প্রদর্শন না করে শুধু তার মধ্যে যা প্রকাশ হয়ে তাকে ভিন্ন; আর যেন তারা তাদেও মাথার কাপড় দিযে তাদের বুকের উপরটা ঢেকে রাখে আর তারা যেন তাদের শোভা সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে।’’
আল্লাহ বলেন-
‘‘হে নবী ! আপনার স্ত্রীগন ও বিশ্বাসী মহিলাদের বলুন যেন তারা তাদের ঢেকে বের হন যাতে তারা অনাকাঙ্খিত উত্যক্ত হওয়া থেকে রক্ষা পান ও তাঁদের চেনা যায় ( সম্মানিতা রূপে)।’’ সুরা আহযাব-৩৩, আয়াত-৫৯
সমপর্যায়ের সুন্দরীর দৃষ্টান্ত-
ধরুন দুজন বোন সমপর্যায়ে সুন্দরী একজন পরিহিতা ইসলামী পোষাক অন্যজন খোলামেলা পোষাক তারা যদি রাস্তা দিয়ে হেটে যান এবং রাস্তায় মোড়ে রয়েছে কিছু ছেলে যারা মেয়েদের উক্তক্ত করতে সদা তৎপর তবে তারা কাকে উক্তক্ত করবে? সহজ উত্তর যে খোলামেলা পোষাক পড়ে নিজের দেহ প্রদর্শন করে বের হবে তাকেই বিরক্ত করবে যদি আপনি বাইবেল পড়েন –
‘‘মহিলাগন এমন পোষাক পরবেননা যা পুরুষের দৃষ্টিকাড়ে এবং পুরুষরাও নারীগনের পোষাক পড়বেননা যারা তা করে সৃষ্টিকর্তার নিকট ঘৃনার পাত্র তারা Book of Duet-২৩, Verse-৫
বেদ ও বাইবেলের বক্তব্য কি?-
বাইবেলে বর্নিত-
`নারীগন শিষ্টাচারের সহিত পোষাক পরবেন, প্রশান্তভাবে থাকবেন তারাঁ স্বর্ন ও মুক্তা ব্যবহার করবেননা।’ 1st Timothy-২,V-9
বাইবেলের নিয়ম-কানুন অনুযায়ী একজন খ্রীষ্টান নারীর উচিৎ সম্ভ্রম হয়ে সম্মানিতা হয়ে রাস্তায় বের হওয়া। আপনি যদি খ্রীষ্টান নানদের পোষাক লক্ষ্য করেন তারা মুসলিম মেয়েদের মতো পর্দাও পোষাক পড়েন। মা মেরির ছবি যদি দেখেন তারঁ হাতের কব্জি এবং মুখমন্ডল ব্যতীত বাকী সব কাপড়ে ঢাকা। প্রত্যেক মুসলিম নারী যারাঁ সঠিকভাবে পর্দা করেন তারাঁ খ্রীষ্টান নানের মতোই সম্মানিতা। আপনি যদি হিন্দুধর্মে প্রধান ধর্মীয় বই পড়েন রিগবেদ-৮, হিম-৩৩, শোকা-১৯-
‘‘ব্রাহ্মা যখন তোমায় নারী আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন তুমি নিজেকে পর্দা দিবে, দৃষ্টি নিচু রাখবে উপরে দেখবেনা। পা একসাথে রাখবে এবং পর্দা যে সৌন্দর্য লুকায় তা প্রকাশ করবেনা।”
আরো বলা হয়েছে –
‘‘রমনীরা নরের পোষাক পরিধান করবেনা, পুরুষগনও অনুরুপ।’’ রিগবেদ-১০, হিম-৮৫, শোকা-৩০
আরও বলা হয়েছে –
‘‘পরশুরাম আসার পর রাম সীতাকে বলছেন-তিনি আমাদের অগ্রজ অতএব দৃষ্টি নিচু রাখ ও পর্দা টেনে নাও। মহাবীর চরিত্-২, পৃষ্ঠা-৭১
আপনি যদি হিন্দুস্তানের ইতিহাস পড়েন পাল বংশ, সেন বংশ মৌর্য বংশের মুদ্রায় ঘোমটা পরিহিতা রমনির ছবি দেখা যায়।
১২৫ বার ধর্ষন করে তার শাস্তি পাবার সম্ভাবনা মাত্র ১বার!!-
১৯৯০ সালে আমেরিকার গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী ১০২৫৫৫টি ধর্ষনের মামলা হয়েছে শুধু আমেরিকাতেই। অন্য এক রিপোর্টে বলা হয়েছে ১৯০০-র বেশি ধর্ষন হচ্ছে প্রতিদিন আমেরিকাতে। এখন ২০০৯ সাল না জানি আমেরিকানরা আরো কত দুঃসাহসী হয়েছে এই গত ১৮ বছরে। এই মামলার মাত্র ১০% গ্রেফতার হয় এবং এই ১০% এর মধ্যে ৫০% কে প্রাথমিক ক্ষমা ঘোষনা দেয়া হয় পরীক্ষামূলকভাবে। তারমানে কেউ যদি ১২৫বার ধর্ষন করে তার শাস্তি পাবার সম্ভাবনা মাত্র ১বার। এই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে যারা শাস্তি পায় ৫০%-ই ১ বছরের নিচে কারা ভোগ করে।
ইসলামের শরীয়া আমেরিকাতে প্রয়োগ-
আমি বলি আপনি ইসলামের শুধুমাত্র তিনটি শরীয়া আমেরিকাতে প্রয়োগ করেন-
✔ যে যখনই কোন পুরুষ কোন মহিলার দিকে তাকাবে সে তার দৃষ্টি নিচে রাখবে
✔ ও মহিলারা ইসলামের শরীয়া অনুযায়ী নিজেদের ঢেকে বের হবে
✔ এবং এরপর কেউ যদি বলৎকার করে তবে তার গর্দান কর্তন করা হবে
তবে কি আমেরিকাতে ধর্ষনের সংখ্যা বাড়বে নাকি কমবে? অবশ্যই কমবে। এটাই হাতেনাতে প্রমান, এজন্যই সৌদি আরবে পৃথিবীর সবচাইতে অপরাধের সংখ্যা নগন্য।
সূত্রঃ ডঃ জাকির নায়েক এর প্রশ্ন – উত্তর পর্ব সমগ্র