হারাম ও কবিরা গুনাহ

প্রশ্ন : এমপিও ভুক্ত বেসরকারী স্কুলের শিক্ষকদের বেতন থেকে প্রতি মাসে ১০% করে টাকা কেটে রাখা হয় এবং চাকুরি শেষে সর্বশেষ বেতন স্কেলের ১০০ মাসের সমপরিমাণ টাকা দেয়া হয়। উক্ত টাকা কি হালাল হবে?

উত্তর : উক্ত টাকা হালাল নয়। কেননা প্রভিডেন্ট ফান্ড (Provident Fund) একটি সূদী পদ্ধতি। চাকুরীজীবীরা শতকরা হারে যে অর্থ ফান্ডে জমা করেন তা মূলত ঋণ স্বরূপ এই কোম্পানীকে দেয়া হয়ে থাকে। আর ঋণ দিয়ে বেশি নেয়া স্পষ্টই সূদ। এই অর্থকে চক্রবৃদ্ধি আকারে কাজে লাগিয়ে অবসর গ্রহণকালে কর্মচারীকে বিশাল অঙ্কের টাকা প্রদান করা হয় (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ১৩তম খণ্ড, পৃ. ৫২০)।

তাই যদি জমা করার বিষয়টি স্বেচ্ছাধীন হয়, তাহলে জমা করা যাবে না। আর যদি বাধ্যতামূলক হয়, সেক্ষেত্রে জমাকৃত অর্থের পূর্ণাঙ্গ হিসাব রাখতে হবে এবং এককালীন টাকাটা পাওয়ার পর মূলধন থেকে সূদটা বিয়োগ করতে হবে। কেননা ইসলাম সকল প্রকারের সূদকে হারাম করেছে (সূরা আল-বাক্বারাহ : ২৭৫-২৭৯)।

অনেকে বলে থাকেন যে, এটা তো কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে একটি অবসর উপহার (Retirement gift), যা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পাথেয় স্বরূপ দেয়া হয়ে থাকে। যদি তাই হয়, তাহলে যে সমস্ত কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ডে অর্থ জমা করেন না, তাদের কেন দেয়া হয় না, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোম্পানী কেন ভাবে না। সুতরাং একে উপহার বলার কোন প্রশ্নই আসে না (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়েমাহ, ১৩তম খণ্ড, পৃ. ৫১০-৫১৫)।

মূলত এগুলো হারামকে হালাল করার একটা ঘৃণিত অপচেষ্টা মাত্র। সর্বোপরি কর্মচারী চাইলে তার এ্যাকাউন্টকে পুরোপুরি সূদমুক্ত রাখার আবেদনও করতে পারে। বিধায় ইচ্ছা করলে সে সূদের একটি টাকাও ভক্ষণ করতে বাধ্য নয়। তাই কোন যুক্তিতে প্রভিডেন্ট ফান্ডের সূদকে হালাল বলার উপায় নেই।

 

সূত্র: মাসিক আল-ইখলাছ।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Mahmud Ibn Shahid Ullah

"যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ❛❛যখন দেখবেন বাত্বিল আপনার উপর সন্তুষ্ট, তখন বুঝে নিবেন আপনি ক্রমের হক্ব থেকে বক্রপথে ধবিত হচ্ছেন।❞
Back to top button