যে ব্যক্তি ধূমপান ত্যাগ করার শপথ করেও আবার তা গ্রহণ করে তার কাফফারা
প্রশ্ন : এ প্রশ্নটি আল্লামা শাইখ ইবনে বায রহমাতুল্লাহ আলাইহিকে করা হয়েছিল: আমার স্বামী ধূমপানে আসক্ত এবং হাঁপানী রোগে আক্রান্ত, ধূমপানের ব্যাপারে আমাদের মধ্যে ঝগড়াও হয়েছে, তারপর সে দুই রাকাত স্বলাত পড়ে ধূমপান করবে না বলে শপথ করেছে কিন্তু এক সপ্তাহ পর আবার ধূমপান শুরু করেছে ফলে আবারও আমাদের মধ্যে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়েছে। এবার সে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছে যে, আর কখনো ধূমপান করবে না, কিন্তু আমি তা বিশ্বাস করতে পারছি না, এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি? তার শপথ ভঙ্গ করার জরিমানা কি? এবং আমাদের কিছু উপদেশ দিন, আল্লাহ আপনাকে ভাল বদলা দিন।
উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ্।
ধূমপান অপবিত্র হারাম, এর বহু ক্ষতি রয়েছে। আল্লাহ তার কুরআনে বলেন:
﴿ يَسۡ َٔلُونَكَ مَاذَآ أُحِلَّ لَهُمۡۖ قُلۡ أُحِلَّ لَكُمُ ٱلطَّيِّبَٰتُ ﴾ [المائ دة: ٤]
“হে নবী, তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে যে, তাদের জন্য কি হালাল করা হয়েছে, আপনি বলুন: তাদের জন্য পবিত্র ভাল জিনিস হালাল করা হয়েছে।” [সূরা মায়েদা: ৪]
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ব্যাপারে সূরা আ‘রাফে আল্লাহ বলেন:
﴿ وَيُحِلُّ لَهُمُ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيۡهِمُ ٱلۡخَبَٰٓئِثَ ﴾ [الاعراف: ١٥٧]
“তিনি তাদের জন্য ভাল জিনিস হালাল করেছেন এবং তাদের উপর অপবিত্র জিনিস হারাম করেছেন।” [সূরা আ‘রাফ: ১৫৭]
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, তামাক বা সিগারেট অপবিত্র, কাজেই আপনার স্বামীর উচিত হলো তা ত্যাগ করা এবং এ থেকে সতর্ক থেকে আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করা, আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ থেকে সতর্ক থাকা, দ্বীন ও স্বাস্থ্য রক্ষা করা এবং আপনার সাথে ভাল ব্যবহার করা। আর তার শপথ ভঙ্গ করার কাফফারা বা জরিমানা হলো কাফফারা ইয়ামীন, সেই সাথে আল্লাহর নিকট তাওবা করা। কাফফারা হলো: দশজন মিসকীনকে খাবার খাওয়ানো, বা পরিধেয় কাপড় পরিধান প্রদান করা বা একজন ক্রীতদাস মুক্ত করা।[75]
তাদেরকে রাত্রে বা দুপুরে খাওয়ানো অথবা প্রত্যেককে অর্ধ সা অর্থাৎ: প্রায় দেড় কিলোগ্রাম স্বদেশী খাবার দিয়ে দেওয়াই যথেষ্ট। আপনার প্রতি উপদেশ হলো: সে যদি স্বলাত পড়ে, তার চরিত্র ভালো হয় এবং ধূমপান ত্যাগ করে তবে আপনি তার নিকট তালাক চাইবেন না। কিন্তু যদি অন্যায় করেই যায় তবে তালাক চাওয়া নিষেধ করব না। আল্লাহ তাকে হেদায়েত দান করুন এবং তাওবার জন্য তাকে তাওফীক দান করুন।[76]
আল্লাহ্ সবচেয়ে ভালো জানেন।
[সম্পাদক][75] সূরা মায়েদার ৮৯ নং আয়াতের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।[76] ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ৩/২১৭-২১৮।সংকলন: আমের সালেহ আলাওয়ী নাজী
সূত্র: ইসলামহাউজ।