ছাত্রদের সামনে শিক্ষকের ধূমপানের হুকুম
প্রশ্ন : এ প্রশ্নটি করা হয়েছিল মিসরীয় মুফতি শাইখ নাসর ফরিদ ওয়াসেলকে: ছাত্রদের সামনে শিক্ষকের ধূমপান করা সম্পর্কে শরীয়তের হুকুম কি?
উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ্।
শিক্ষকমণ্ডলী আলেমদের অন্তর্ভুক্ত, যারা নবীদের উত্তরসূরী। জ্ঞান সংগ্রহের মূল হচ্ছে: তাকওয়া, আল্লাহভীতি ও প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে আল্লাহ সচেতনতা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۖ وَيُعَلِّمُكُمُ ٱللَّهُۗ﴾ [البقرة: ٢٨٢]
“তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, আর আল্লাহ তোমাদেরকে শিক্ষা দিবেন।” [সূরা বাকারা: ২৮২]। ছেলে মেয়ে এবং ছাত্রদের জন্য শিক্ষক হচ্ছেন অনুকরণীয় আদর্শ, কাজেই তার উচিত সার্বিক দিক দিয়ে উত্তম নমূনা হওয়া এবং মানুষের জন্য ভাল আদর্শ হওয়া। তাহলে তার জন্য আল্লাহর নিকট পূণ্য থাকবে। কারণ, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন:
«مَنْ سَنَّ فِي الْإِسْلَامِ سُنَّةً حَسَنَةً، فَعُمِلَ بِهَا بَعْدَهُ، كُتِبَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ عَمِلَ بِهَا، وَلَا يَنْقُصُ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْءٌ، وَمَنْ سَنَّ فِي الْإِسْلَامِ سُنَّةً سَيِّئَةً، فَعُمِلَ بِهَا بَعْدَهُ، كُتِبَ عَلَيْهِ مِثْلُ وِزْرِ مَنْ عَمِلَ بِهَا، وَلَا يَنْقُصُ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْءٌ»
“যে ব্যক্তি (রাসূল কর্তৃক অনুমোদিত) কোনো (বাদ পড়ে যাওয়া বা পরিত্যক্ত) সুন্নাতের প্রচার-প্রসার ঘটাবে তার জন্য তার সাওয়াব রয়েছে এবং যে আমল করবে সে তার সম সাওয়াব পাবে, পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি খারাপ (যা রাসূল অনুমোদন করেন নি বা নতুন) কোনো কাজের প্রচার-প্রসার ঘটাবে সে তার জন্য পাপী হবে এবং যে ব্যক্তি তা করবে সে তার সম পরিমাণ পাপী হবে কিয়ামত পর্যন্ত।”( মুসলিম: ১০১৭)
যে শিক্ষক ছাত্রদের সামনে ধূমপান করবে নিঃসন্দেহে সে একটি খারাপ নমুনা এবং ছাত্রদের জন্য খারাপ আদর্শ, সে অন্যায় ও পাপে লিপ্ত হলো ফলে সে দুনিয়া এবং আখেরাতে শাস্তিযোগ্য হবে। কারণ সে ছাত্রদের মধ্যে ধ্বংসের বীজ বপন করছে যা শরীয়ত ও দ্বীন কোনটাই সমর্থন করছে না। সে খারাপ পদ্ধতিতে তাদেরকে শিক্ষা দিচ্ছে যে, কি ভাবে তাদের ক্ষতি হবে, কি ভাবে তারা মালের অপচয় করবে এবং কি ভাবে তারা ধ্বংস হবে, এর দ্বারা সে দ্বীনের সুন্দর শিক্ষার বিপরীত কাজ কর্ম করছে, যা সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন:
﴿ وَلَا تُسۡرِفُوٓاْۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلۡمُسۡرِفِينَ ﴾ [الانعام: ١٤١]
“তোমরা অপচয় করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীকে পছন্দ করেন না।” [সূরা আনয়াম: ১৪১]
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
﴿وَلَا تُبَذِّرۡ تَبۡذِيرًا ٢٦ إِنَّ ٱلۡمُبَذِّرِينَ كَانُوٓاْ إِخۡوَٰنَ ٱلشَّيَٰطِينِۖ﴾ [الاسراء: ٢٦، ٢٧]
“তোমরা কিছুতেই অপচয় করো না, নিশ্চয়ই অপচয়কারীগণ শয়তানের ভাই।” [সূরা ইসরা: ২৬-২৭]
তিনি আরও বলেন:
﴿ وَلَا تَقۡتُلُوٓاْ أَنفُسَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُمۡ رَحِيم ا ﴾ [النساء: ٢٩]
“তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে হত্যা করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহশীল।” [সূরা নিসা: ২৯]
তিনি আরও বলেন:
﴿وَلَا تُلۡقُواْ بِأَيۡدِيكُمۡ إِلَى ٱلتَّهۡلُكَةِ ﴾ [البقرة: ١٩٥]
“তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিওনা।” [সূরা বাকারা: ১৯৫]।
( ফাতাওয়া নং ৮৭২ প্রশ্ন নং ৪)
আল্লাহ্ সবচেয়ে ভালো জানেন।
সংকলন: আমের সালেহ আলাওয়ী নাজী
সূত্র: ইসলামহাউজ।