পোশাক, সাজসজ্জা ও ছবি

প্রশ্ন : মহিলারা মাহরামদের সামনে কেমন পর্দা করবে? মহিলাদের পোশাক কেমন হওয়া দরকার?

উত্তর : মাহরামদের সামনেও মহিলারা স্বাভাবিক পর্দা করবে।

শায়খ উছায়মীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মহিলারা অন্যান্য মাহরামের সামনে তাদের লজ্জাস্থানকে আবৃত করবে এটা অপরিহার্য দায়িত্ব। যদি পোশাক এতটাই সংকীর্ণ বা আটোসাঁটো হয় যে, মহিলাদের আকর্ষণীয় বিষয়গুলো পরিস্ফুটিত হচ্ছে ও তাদের রূপ বিকশিত হচ্ছে, তবে এ জাতীয় পোশাক মহিলারা মাহরামদের সামনে পরিধান করতে পারবে না’ (উছায়মীন, মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল, ২য় খণ্ড, পৃ. ৮২৫)।

মহিলাদের পোশাক তাক্বওয়াসম্পন্ন হতে হবে। বেহায়াপনার কোন স্পর্শ থাকবে না।

রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘জাহান্নামবাসীদের মধ্যে দুই প্রকার মানুষ, যাদের আমি (এখনো পর্যন্ত) দেখিনি। একদল মানুষ, যাদের সঙ্গে গরুর লেজের মত চাবুক থাকবে, তা দ্বারা তারা লোকজনকে মারবে (অর্থাৎ মানুষের উপর অত্যাচার করবে) এবং একদল স্ত্রী লোক, যারা বস্ত্র পরিহিতা হয়েও বিবস্ত্রা বা উলঙ্গ হবে, যারা অন্যদের আকর্ষণকারিণী ও আকৃষ্টা হবে, আর তাদের মাথার চুলের অবস্থা উটের হেলে পড়া কুঁজের মত হবে। ওরা জান্নাতে যেতে পারবে না, এমনকি তার সুগন্ধিও পাবে না অথচ এত এত দূর হতে তার সুঘ্রাণ পাওয়া যায়’ (ছহীহ মুসলিম, হা/৫৪৭৫, ২১২৮)।

‘যারা বস্ত্র পরিহিতা হয়েও বিবস্ত্রা বা উলঙ্গ’ এই অংশের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনু আব্দুল বার্র (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, فهن كاسيات بالإسم و عاريات في الحقيقة ‘তারা নামমাত্র বস্ত্র পরিহিতা হলেও বাস্তবে কিন্তু তারা বিবস্ত্রা বা উলঙ্গ’ (আত-তামহীদ, ১৩তম খণ্ড, পৃ. ২০৪)।

সঊদী আরবের স্থায়ী ফাতাওয়া কমিটি বলেন, ‘দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গোচরীভূত হয় বা লজ্জাস্থান বিকশিত হয় এমন পোশাক পরিধান করা অবৈধ। যেমন কিছু ট্রাউজার, জিম বা সুইমিংয়ের পোশাক ইত্যাদি’ (ফাতাওয়া আল-লাজনা আদ-দায়িমাহ, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৪৩০ এবং ২৪তম খণ্ড, পৃ. ৪০)।

শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যা (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘এমন সংকীর্ণ পোশাক যে, সৃষ্টির অবয়ব প্রকাশিত হয় বা এমন ফিনফিনে পোশাক যে, চামড়া আবৃত হয় না, এমন পোশাক পরিধান করা নিষেধ। কারণ মহিলাদেরকে এ ধরনের পোশাক পরিধান করতে নিষেধ করা হয়েছে। অভিভাবকদের উচিত তাদের এধরনের পোশাক পরতে নিষেধ করা’ (ফাতাওয়া আল-কুবরা, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৩৫৩)।

ইমাম মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘মহিলারা মহিলাদের সম্মুখে অলঙ্কার পরিধানের স্থান সমূহ উন্মুক্ত করতে পারে। যেমন মাথা, কর্ণ, গ্রীবা, মালা পরিধানের স্থান,  পদযুগল, পাদমূল, হস্তদ্বয়, বাহুদ্বয় ইত্যাদি। এছাড়া অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ উন্মুক্ত করা জায়েয নয়’ (সূরা আন-নূর : ৩১; তালখীছু আহকামিল জানায়িয, পৃ. ৩০)।

 

সূত্র: মাসিক আল-ইখলাছ।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Mahmud Ibn Shahid Ullah

"যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ❛❛যখন দেখবেন বাত্বিল আপনার উপর সন্তুষ্ট, তখন বুঝে নিবেন আপনি ক্রমের হক্ব থেকে বক্রপথে ধবিত হচ্ছেন।❞
Back to top button