বিবাহ ও দাম্পত্য

তালাকদাতা তার স্ত্রীকে কিভাবে ফিরিয়ে আনবে

প্রশ্ন : সাধারণত বিবাহের সময় যে কোন ব্যক্তি তার পিতা-মাতার সম্মতি প্রয়োজন বোধ করে, কিন্তু স্বামী-স্ত্রী যদি পৃথক হয়ে যায়, এখন আবার তারা দু’জনে মিলিত হতে ইচ্ছা করে, তাহলেও কি তাদের পরিবারের সম্মতি এবং পূর্বের সকল আনুষ্ঠানিকতা পুরো করা জরুরী ?

উত্তর : আল-হামদুলিল্লাহ।

স্বামী যখন তার স্ত্রীকে তালাক দেয়, আর এ তালাক যদি প্রথম অথবা দ্বিতীয় হয় এবং স্ত্রীর ইদ্দত এখনো শেষ না হয়, (যেমন তার বাচ্চা প্রসব করা, যদি তালাক অবস্থায় গর্ভবতী থাকে, অথবা তার তিন ঋতু অতিবাহিত হওয়া) তাহলে তার স্ত্রীকে কথার দ্বারাই রুজআত তথা ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব, যেমন বলা : আমি তোমাকে রুজআত করে নিলাম তথা ফিরিয়ে নিলাম অথবা আমি তোমাকে রেখে দিলাম, তাহলে রুজআত হয়ে যাবে, অথবা কোন কাজের দ্বারা রুজআত উদ্দেশ্য করা, যেমন রুজআতের উদ্দেশ্যে সহবাস করা, তাহলেও রুজআত শুদ্ধ।

এ ক্ষেত্রে সুন্নত হচ্ছে রুজআতের জন্য সাক্ষী রাখা, যেমন দু’জন ব্যক্তিকে তার রুজআত সম্পর্কে জানানো আল্লাহ তাআলার বাণী অনুসারে, আল্লাহ তাআলা বলেন :

(فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَأَمْسِكُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ أَوْ فَارِقُوهُنَّ بِمَعْرُوفٍ وَأَشْهِدُوا ذَوَيْ عَدْلٍ مِنْكُمْ ) الطلاق: من الآية2 ،

“অতঃপর যখন তারা তাদের ইদ্দতের শেষ সীমায় পৌঁছবে, তখন তোমরা তাদের ন্যায়ানুগ পন্থায় রেখে দেবে অথবা ন্যায়ানুগ পন্থায় তাদের পরিত্যাগ করবে এবং তোমাদের মধ্য থেকে ন্যায়পরায়ন দুইজনকে সাক্ষী বানাবে”। তালাক : (২)

আর যদি স্ত্রী এক তালাকের পর অথবা দুই তালাকের পর ইদ্দত শেষ করে ফেলে, তাহলে নতুন করে আকদ করা জরুরী, এ ক্ষেত্রে সে অন্যান্য পুরুষের ন্যায়, মেয়ের অভিভাবক বা স্বয়ং মেয়েকে প্রস্তাব দেবে, যখন মেয়ে ও তার অভিভাবক সম্মত হয় এবং মোহরের প্রতি সন্তুষ্টি পোষণ করে, তখন দুই জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে আকদ সম্পন্ন করতে হবে।

আর যদি তিন তালাক দেয়, তাহলে এ স্ত্রী তার উপর হারাম, যতক্ষণ না শরিয়ত সম্মতভাবে স্ত্রী অন্য স্বামীকে বিয়ে করে এবং তার সাথে সহবাসে লিপ্ত হয়, অতঃপর তালাক বা মৃত্যুর কারণে তার থেকে আলাদা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন :

( فَإِنْ طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِنْ بَعْدُ حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ) البقرة/230 ،

“অতএব যদি সে তাকে তালাক দেয় তাহলে  সে পুরুষের জন্য হালাল হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত ভিন্ন একজন স্বামী সে গ্রহণ না করে”। সূরা বাকারা : (২৩০)

তবে কোন ব্যক্তির সাথে এমনভাবে চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া বৈধ নয় যে, তাকে বিয়ে করে তালাক দিয়ে দেবে, এটা গর্হিত ও কবিরা গুনা, এ বিয়ের কারণে স্ত্রী পূর্বের স্বামীর জন্য হালাল হবে না, বরং হিল্লাকারী ও যার জন্য হিল্লা করা হয় উভয়কে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) লানত করেছেন।

দেখুন : কিতাব ফতোয়াত তালাক : (১/১৯৫-২১০), শায়ক আব্দুল আজিজ বিন বাজ রহ. রচিত।

মুসলিম মাত্রই যে কোন বিষয়ে জানতে চাই আল্লাহর ফয়সালা, আল্লাহ কুরআনে কি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ব্যাখ্যা কিরূপ দিয়েছেন এবং সাহাবায়ে কেরাম ও তাদের পরবর্তী মনীষীদের বক্তব্য ও মতামত কি ? তাই এখানে তালাক সংক্রান্ত দুইটি আয়াত অনুবাদ ও তাফসিরসহ উল্লেখ করছি, যেন পাঠকবৃন্দ কুরআনের মূল বক্তব্য আত্মস্থ করতে ও যথাযথ বুঝতে সক্ষম হোন।

আল্লাহ্‌ সবচেয়ে ভালো জানেন।

সংকলন : সানাউল্লাহ নজির আহমদ।
সূত্র : ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদি আরব।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

মোঃ মামুনূর রশিদ (বকুল)

❝ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই,এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।❞ যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?" আমি একজন তালিবুল ইলম। আমি নিজেকে ভুলের উর্ধ্বে মনে করি না এবং আমিই হক্ব বাকি সবাই বাতিল এমনও ভাবিনা। অতএব, আমার দ্বারা ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল।
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button