প্রশ্ন: রামাজান মাসে পূর্বাকাশে পিলারের মত এক আলোর রেখা দেখা গেলে এক বছরের খাবার জমুদ রাখার হাদিস কি সহিহ?
প্রশ্ন: পূর্বাকাশে পিলারের মত একটি আলোর কথা বলা হয়েছে যা সবাই দেখতে পাবে। এরূপ দেখলে এক বছরের খাদ্য মজুদ করার কথা বলা হয়েছে। এই হাদিসটির ব্যাপারে কি একটু বলবেন যে এর সত্যতা কতটুকু?
উত্তর:
এ মর্মে বর্ণিত হাদিসটি যঈফ (দুর্বল)। হাদসিটি নিম্নরূপ:
«إذا رأيتم عموداً أحمر من قبل المشرق في شهر رمضان فادخروا طعام سنتكم فإنها سنة جوع). [رواه الطبراني]
“যখন তোমরা রমজান মাসে পূর্ব দিগন্তে রক্তিম (আলোর) একটি খুঁটি দেখবে তখন তোমরা এক বছরের খাদ্য মজুদ করে নিও। কারণ সে বছরটি হবে ক্ষুধা ও অভাব-অনটনের বছর।”
◯ এ হাদিসটিকে যইফ (দুর্বল) বলেছেন, অনেক মুহাদ্দিস। যেমন:
● ক. সুয়ূতী, (জামে সাগির/৬৪০)
● খ. হায়সামী (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৫/৩৮)।
তিনি বলেন:
فيه أم عبد الله ابنة خالد بن معدان ولم أعرفها ، وبقية رجاله ثقات
“এর বর্ণনাসূত্রে উম্মে আব্দুল্লাহ বিনতে খালিদ বিন মিদান’ নামক একজন বর্ণনাকারী আছে। তাকে আমি চিনি না। তিনি ছাড়া অন্যান্য বর্ণনাকারীগণ সবাই সিকাহ ব নির্ভরযোগ্য।
● গ. আলাবানী (যঈফুল জামে/৫১৪) প্রমূখ মুহাদ্দিসগণ।
◯ হাদিসটি সহিহ না হওয়ার কারণ সমূহ নিম্নরূপ:
1- أحمد بن رشدين متهم بالوضع
2- خالد بن معدان : لا يذكر له سماعا من عبادة بن الصامت .
3- ابنته أم عبد الله : لم يوثقها سوى ابن حبان
◇ ১. এ হাদিসের সনদে আহমদ বিন রাশীদ নামক একজন বর্ণনাকারী আছে। সে মিথ্যা হাদিস বর্ণনার অভিযোগে অভিযুক্ত।
◇ ২. আরেকজন বর্ণনাকারী আছে। যার নাম খালিদ বিন মিদান। মুহাদ্দিসের দৃষ্টিতে তিনি সাহাবী উবাদা বিন সামিত এর নিকট হাদিস শুনেছেন বলে কোথাও উল্লেখ করা হয় নি।
◇ ৩. খালিদ বিন মিদান এর মেয়ে উম্মে আব্দুল্লাহ কে একমাত্র ইবনে হিব্বান ছাড়া আর কোন মুহদ্দিস বিশ্বস্ত বলেন নি। (উৎস: ahlalhdeeth ডট com)
আল্লাহু আলাম।
■ আরও পড়ুন:
➤ সাবধান! ইমাম মাহদির আগমনের পূর্বে কোন এক রমজান মাসের মাঝামাঝিতে আকাশ থেকে বিকট আওয়াজ আসা তারপর সত্তর হাজার মানুষ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, সত্তর হাজার মানুষ বধির হয়ে যাওয়ার হাদিস অত্যন্ত দুর্বল মতান্তরে বানোয়াট ও বাতিল।
https://bit.ly/2Jp269R
➤ প্রশ্ন: ইমাম মাহদির আগমনের আলামত হিসেবে “আরব দেশে তুষারপাত হবে” এ কথাটা কি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত?
https://bit.ly/2WViuXA
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব