Deprecated: Function jetpack_form_register_pattern is deprecated since version jetpack-13.4! Use Automattic\Jetpack\Forms\ContactForm\Util::register_pattern instead. in /home/islamicask.com/public_html/wp-includes/functions.php on line 6078
তার স্বামী নিজের সম্পদ হারাম পথে ব্যয় করে এমতাবস্থায় স্বামীকে না জানিয়ে সন্তানদের জন্য সঞ্চয় করার জন্য স্বামীর সম্পদ থেকে কিছু কিছু গ্রহণ করা যাবে কি? – আপনার জিজ্ঞাসা
লেনদেন ও ব্যবসা

তার স্বামী নিজের সম্পদ হারাম পথে ব্যয় করে এমতাবস্থায় স্বামীকে না জানিয়ে সন্তানদের জন্য সঞ্চয় করার জন্য স্বামীর সম্পদ থেকে কিছু কিছু গ্রহণ করা যাবে কি?

প্রশ্ন: আমার বিয়ে হয়েছে ১০ বছর। আমার দুটো বাচ্চা আছে। বিয়ের ৫ বছর পর থেকে আমার স্বামী আমাকে প্রত্যাখ্যান করা শুরু করেছে। বাচ্চাদের কারণে আমি সহ্য করে যাচ্ছি। হয়তো বা সে আমার দিকে ফিরে আসবে। কিন্তু, আমি অনুসন্ধান করে বের করেছি যে, সে অন্য নারীদের প্রতি আগ্রহী। আমি আমার চাকুরী ছেড়ে তার সাথে অন্যত্র চলে এসেছি। আমার পরিবারের কাউকে জানাইনি। আমি তাকে রাজি করাতে চেষ্টা করেছি যে, আরেকটি বিয়ে করে আমার সাথে আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টিমূলক আচরণ কর। কিন্তু সে রাজি হয়নি। আমি আমার বাচ্চাদের কারণে তার সাথে আছি। উল্লেখ্য, সে একজন চমৎকার বাবা এবং আমাকে অপমান করে না। কিন্তু, আমি লক্ষ্য করেছি সে মেয়েদের পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। এমতাবস্থায় তার সন্তানদের জন্য সঞ্চয় করার নিমিত্তে তার অজান্তে কিছু অর্থ গ্রহণ করা আমার জন্যে জায়েয হবে কি?

উত্তর:

আলহামদুলিল্লাহ।

যদি আপনার স্বামী আপনার ও আপনার সন্তানদের ভরণ-পোষণ চালায় তাহলে তার সম্পদ থেকে কোন কিছু গ্রহণ করা আপনার জন্য জায়েয হবে না। যেহেতু কারো আন্তরিক সম্মতি ছাড়া সম্পদ গ্রহণ করা হারাম। যেহেতু আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: “হে মুমিনগণ, তোমরা পরস্পরের মধ্যে তোমাদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না, তবে পারস্পরিক সম্মতিতে ব্যবসার মাধ্যমে হলে ভিন্ন কথা।”[সূরা নিসা, আয়াত: ২৯]

এবং যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “নিশ্চয় তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ, তোমাদের ইজ্জত-আব্রু তোমাদের পরস্পরের জন্য হারাম (পবিত্র) যেমনিভাবে তোমাদের এই দিনটি তোমাদের এই মাসে ও এই দেশে হারাম (পবিত্র)। এখানে উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির নিকট এসব কথা পৌঁছে দেয়।”[সহিহ বুখারী (৬৭) ও সহিহ মুসলিম (১৬৭৯)]

এবং যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন: “কোন ব্যক্তির সম্পদ গ্রহণ করা বৈধ হবে না যদি না সে ব্যক্তি মন থেকে না দেয়।”[মুসনাদে আহমাদ (২০১৭২), আলবানী ‘ইরওয়াউল গালিল’ গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘সহিহ’ আখ্যায়িত করেছেন]

যদি তিনি আবশ্যকীয় ভরণ-পোষণ দিতে কসুর করেন তাহলে তার সম্পদ থেকে সংযত পরিমাণ গ্রহণ করা আপনার জন্য জায়েয হবে। দলিল হচ্ছে আয়েশা (রাঃ) এর হাদিস তিনি বর্ণনা করেন যে, “হিন্দ বিনতে উতবা বলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌! নিশ্চয় আবু সুফিয়ান কৃপণ লোক। তিনি আমি ও আমার ছেলের জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু আমাকে দেয় না; তবে আমি তার অজান্তে যা কিছু গ্রহণ করি সেটা ছাড়া। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: “সামাজিক-প্রথা অনুযায়ী যতটুকু আপনার জন্য ও আপনার সন্তানের জন্য যথেষ্ট আপনি ততটুকু গ্রহণ করুন।”[সহিহ বুখারী (৫৩৬৪)]

আর যদি তিনি আবশ্যকীয় ভরণ-পোষণ দিতে কসুর না করেন তাহলে তার অসম্মতিতে তার সম্পদ থেকে কোন কিছু গ্রহণ করা আপনার জন্য জায়েয হবে না।

সুতরাং আপনার জন্য যা বৈধ নয় তার সম্পদ থেকে তা গ্রহণ করা কিংবা গোপন করা থেকে সাবধান হোন; এমনকি সেটা সন্তানদের জন্য সঞ্চয় করার যুক্তিতে হলেও। কারণ তার সম্পদের উপর আপনার কর্তৃত্ব নেই এবং বাবা জীবিত থাকতে বাবার সম্পত্তিতে সন্তানদের ভরণ-পোষণ ছাড়া আর কোন অধিকার নেই। আর যদি আপনার স্বামী সঞ্চয় করার অনুমতি দেন তাহলে সেটা হতে পারে।

যেমন আপনি যদি তাকে বলেন, ঘরের খরচের পর যা কিছু অতিরিক্ত থেকে যায় সেটা আপনি সন্তানদের জন্য সঞ্চয় করবেন; তিনি যদি অনুমতি দেন তাহলে কোন দোষ নেই। তখন সেটা হবে “সম্পদ পেলে উপহার দিব” এ শ্রেণীয়।

আপনার উচিত আপনার স্বামীকে আল্লাহ্‌র ভয় ও তাঁর নজরদারির উপদেশ দেয়া এবং সম্পদ রক্ষা করার নসীহত করা।

তাছাড়া আপনার উচিত তাঁকে ভাল কাজের দাওয়াত দেয়া ও খারাপ পথ থেকে বিরত রাখার ক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপূর্ণ পথ অনুসরণ করা, ধৈর্য ধারণ করা, সওয়াব প্রত্যাশা করা এবং আপনার সন্তানদের প্রতিপালনের উপর গুরুত্ব দেয়া। তার সাথে জীবন-যাপন করতে গিয়ে আপনি যে কষ্ট পাচ্ছেন তাতে ধৈর্য ধারণ করা। কারণ পরিবার ভেঙ্গে যাওয়া ও সন্তানেরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার চেয়ে ধৈর্য ধারণ করা উত্তম।

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “জেনে রাখুন, কষ্ট সত্ত্বেও ধৈর্য ধারণ করার মধ্যে প্রভূত কল্যাণ রয়েছে। ধৈর্যের সাথে আসে বিজয়। বিপদের সাথেই আসে মুক্তি। দুঃখের সাথেই আছে সুখ।”[মুসনাদে আহমাদ (২৮০৩), এবং অন্য গ্রন্থকারও হাদিসটি সংকলন করেছেন। আহমাদ শাকের ও অপরাপর মুসনাদের মুহাক্কিকগণ হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]

একজন স্ত্রী তার স্বামীকে দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রে যে প্রজ্ঞাপূর্ণ পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করা উচিত ইতিপূর্বে 154172 নং প্রশ্নোত্তরে এমন কিছু পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে। আপনি সেগুলো একটু দেখে নিন।

আমরা আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা করছি তিনি যেন আপনার স্বামীকে হেদায়ত করেন এবং আপনার অন্তরে স্বস্তি এনে দেন।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন

Dihan Mirza

❝আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনাে সত্য ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।❞ আমি নিজেকে ভুলের উর্ধে মনে করি না এবং আমিই হ্বক বাকি সবাই বাতিল তেমনটাও মনে করিনা। অতএব ভুলত্রুটি হলে নাসীহা প্রদানের জন্যে অনুরোধ রইল। ☞আমাদের পূর্বের সালাফেরা যেসকল বিষয়ে বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি করেছেন সেসকল বিষয়ে আমি তাদের অনুসরণকারী।
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button