পবিত্রতাফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম

জনৈক শিক্ষক ছাত্রদের কুরআনের দরস প্রদান করেন। মাদ্রাসায় বা তার আশেপাশে পানি নেই। এখন তিনি কি করবেন? কেননা পবিত্র ব্যক্তি ছাড়া তো কেউ কুরআন স্পর্শ করবে না?

মাদ্রাসায় বা তার আশেপাশে যদি পানি না পাওয়া যায়, তবে শিক্ষক ছাত্রদের সতর্ক করবেন, তারা যেন পবিত্র না হয়ে কুরআন বহন বা স্পর্শ না করে। কেননা আমর বিন হাযম (রাঃ) বর্ণিত হাদীছে রয়েছে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে লিখেছেন, أَنْ لا يَمَسَّ الْقُرْآنَ إِلا طَاهِرٌ “পবিত্র ব্যক্তি ছাড়া কেউ কুরআন স্পর্শ করবে না।” এখানে পবিত্রতা বলতে উদ্দেশ্য হচ্ছে ওযু বা গোসল বা তায়াম্মুমের মাধ্যমে অর্জিত পবিত্রতা। যেমনটি আল্লাহ ওযুর আয়াতে উল্লেখ করেছেনঃ

]مَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُمْ مِنْ حَرَجٍ وَلَكِنْ يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ[

“আল্লাহ তোমাদেরকে কোন অসুবিধায় ফেলতে চান না, কিন্তু তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান এবং তাঁর নে’য়ামত সমূহ পূর্ণরূপে দান করতে চান, যাতে তোমরা তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার।” (সূরা মায়েদা- ৬) এখানে ‘তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান’ কথা দ্বারা বুঝা যায়, পবিত্রতা অর্জন না করলে পবিত্র হওয়া যাবে না। তাই ওযুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন না করে কারো জন্য কুরআন স্পর্শ করা সমিচীন নয়। তবে কোন কোন বিদ্বান ছোটদের জন্য বিনা ওযুতে কুরআন স্পর্শ করার অনুমতি দিয়েছেন। কেননা কুরআন হাতে নেয়া তাদের জন্য খুবই দরকার। অথচ তারা ওযুর গুরুত্ব বোঝে না। কিন্তু উত্তম হচ্ছে, ছাত্রদেরকে ওযুর প্রতি উদ্বুদ্ধ করা, যাতে তারা পবিত্র অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করে।

প্রশ্নকারী উল্লেখ করেছেন, ‘পবিত্র ছাড়া তো কেউ কুরআন স্পর্শ করবে না’ সম্ভতঃ একথা দ্বারা তিনি ইঙ্গিত করেছেন যে, কুরআন স্পর্শ করার জন্য পবিত্রতা অর্জন করা ওয়াজিব। কিন্তু এক্ষেত্রে বর্ণিত আয়াতে এ দলীল পাওয়া যায় না। আল্লাহ্‌ বলেন, لا يَمَسُّهُ إِلا الْمُطَهَّرُونَ “পবিত্রগণ ছাড়া কেউ তা স্পর্শ করে না।” (সূরা ওয়াক্বেয়া- ৭৯) এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে, কিতাবুল মাকনূন বা লুকায়িত গ্রন’ অর্থাৎ লওহে মাহফূয। আর ‘পবিত্রগণ’ বলতে উদ্দেশ্য হচ্ছে ফেরেশতাগণ। এখানে ওযুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা উদ্দেশ্য হলে এরূপ বলা হত, ‘পবিত্রতা অর্জনকারীগণ ছাড়া কেউ তা স্পর্শ করেনা’।  এখানে একথাও বলা হয়নি যে, পবিত্রতা অর্জন না করলে উহা স্পর্শ করা জায়েয নয়। কিন্তু পূর্বে যে হাদীছ উল্লেখ করা হয়েছে, তাই ওযুর নির্দেশ প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট।

 

 

সূত্র: ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম।
লেখক: শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)।

➥ লিংকটি কপি অথবা প্রিন্ট করে শেয়ার করুন:
পুরোটা দেখুন
এছাড়াও পড়ে দেখুন
Close
Back to top button