পট্টির উপর মাসেহ করার বিধান কি?
প্রথমত আমাদের জানা উচিৎ যে, পট্টি কি?
পট্টি বা ব্যান্ডেজ হচ্ছে এমন বস্ত যা ভাঙ্গা-মচকা জোড়া লাগানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। ফিক্বাহবিদদের ভাষায়ঃ “বিশেষ প্রয়োজনে পবিত্রতা অর্জনের অঙ্গে কোন কিছু লাগিয়ে রাখা।” ভেঙ্গে যাওয়া স্থানে বা ফোঁড়ার স্থানে বা পিঠের ব্যাথায় বা অন্য কোন কারণে যে পট্টি বা ব্যান্ডেজ লাগানো হয় এখানে সেটাই উদ্দেশ্য। ধৌত করার পরিবর্তে সেখানে মাসেহ করলেই যথেষ্ট হবে।
যেমন কোন লোকের হাতে ফোঁড়ার কারণে যদি পট্টি বাধা থাকে, তখন ওযু করার সময় অন্যান্য স্থান ধৌত করে পট্টির উপর শুধু মাসেহ করবে। তাহলেই তার পবিত্রতা পূর্ণ হয়ে যাবে। যদি তার ওযু ভঙ্গ না হয়ে থাকে, তবে পট্টি বা ব্যান্ডেজ খুলে ফেলার কারণে তার পবিত্রতা নষ্ট হবে না। কেননা শরঈ দীললের ভিত্তিতে সে পবিত্রতা অর্জন করেছে, সুতরাং পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে একথা বলার জন্য শরঈ দলীল দরকার। আর পট্টি বা ব্যান্ডেজ খুলে ফেললে ওযু বা পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে একথার পক্ষে কোন দীলল নেই।
পট্টির উপর মাসেহ করার অনুমতি সংক্রান্ত হাদীছ সমূহ সবগুলোই ভেজালপূর্ণ। সবগুলোই যঈফ বা দুর্বল। একদল বিদ্বান বলেন, তবে সবগুলো হাদীছের সমম্বয়ে তা দলীল হিসেবে যোগ্য হতে পারে।
আরেক দল বিদ্বান বলেন, হাদীছগুলো যঈফ হওয়ার কারণে তার উপর ভিত্তি করা চলবে না। এদের মধ্যে মতভেদ আছে। কেউ বলেন, যেহেতু মাসেহ করার দলীল নেই তাই পট্টি বা ব্যান্ডেজ বাধা স্থানের পবিত্রতা রহিত হয়ে যাবে। সেখানে কিছুই করতে হবে না। কেননা সে অপারগ। আবার কেউ বলেন, উক্ত স্থানে মাসেহ করবে না বরং তায়াম্মুম করবে।
কিন্তু হাদীছের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে শরঈ মূলনীতির ভিত্তিতে দেখা যায় নিকটতম মত হচ্ছে মাসেহ করা। মাসেহ করলে তায়াম্মুমের কোন দরকার নেই। এই অবস্থায় আমরা বলবঃ ওযু গোসলের কোন অঙ্গে যদি যখম বা ফোঁড়া বা এরকম কিছু থাকে, তবে তা কয়েকটি স্তরে বিভক্তঃ
প্রথম স্তরঃ যখম বা ফোঁড়ার স্থানটি উম্মুক্ত। ধৌত করলে কোন অসুবিধা হবে না। সুতরাং উহা ধৌত করা ওয়াজিব।
দ্বিতীয় স্তরঃ স্থানটি উম্মুক্ত কিন্তু ধৌত করলে ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। তখন সেখানে মাসেহ করা ওয়াজিব।
তৃতীয় স্তরঃ স্থানটি উম্মুক্ত কিন্তু ধৌত বা মাসেহ করলে ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। তখন সেখানে তায়াম্মুম করা ওয়াজিব।
চতুর্থ স্তরঃ স্থানটি পট্টি বা ব্যান্ডেজ জাতীয় বস্ত দ্বারা ঢাকা আছে। তখন সেই বস্তর উপর মাসেহ করবে। ধৌত বা তায়ম্মুম করার দরকার হবে না।
সূত্র: ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম।
লেখক: শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)।